করোনাভাইরাস

শিক্ষার্থীদের স্বার্থেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া উচিত: ভিপি নুর

noor-1_0_0.jpg
নুরুল হক নুর। ছবি: সংগৃহীত

দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। এখানকার ৩৭ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী করোনাভাইরাস আতঙ্কে রয়েছেন। ১৮টি আবাসিক হলে সাড়ে ১২ হাজারেও বেশি শিক্ষার্থী আছেন সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে। এর মধ্যেই উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান শিক্ষার্থীদের আতঙ্কিত না হয়ে জরুরি প্রয়োজনে হল প্রভোস্টের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছেন। প্রক্টর বলেছেন, একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত করার বিষয়ে তারা আপাতত কিছু ভাবছেন না।

এসব বিষয় নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুরের কথা হয়।

নুর বলেন, ‘করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের এই সময়ে সবচেয়ে অরক্ষিত অবস্থায় আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশেষ করে এখানকার হলগুলো। প্রতিটি হলেই গণরুম আছে এবং সেখানে শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে থাকে। হলের ক্যান্টিন থেকে শুরু করে টয়লেটের অবস্থা খুবই অস্বাস্থ্যকর। তাছাড়া হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা অবাধে যাতায়াত করে। এতে করে করোনাভাইরাস সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে।’

তিনি বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে এ মাসেই আমরা উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে জানিয়েছি, এমনিতেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেঙ্গুর উপদ্রব আছে। গত বছর বেশ কিছু শিক্ষার্থী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল। সেই সমস্যাটিকে মাথায় রেখে এবার বিশ্ববিদ্যালয় সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা যায় কি না? বিষয়টি ভেবে দেখার জন্য তাকে অনুরোধ করেছিলাম।’

‘উপাচার্য বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্বের সঙ্গে নেননি। তিনি বলেছেন, এটি যতটা না সমস্যা, তারচেয়ে বেশি রাজনীতি করা হয়’, বলেন নুর।

করোনাভাইরাস আতঙ্কে অন্য কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়াই কি সমাধান?

ডাকসু ভিপি বলেন, ‘করোনাভাইরাস সতর্কতার অংশ হিসেবে যেখানে সারা বিশ্বেই স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এক মাসের মতো বন্ধ রাখা কোনো সমস্যা নয়। কারণ এখানে যদি একজন শিক্ষার্থীও কোনোভাবে আক্রান্ত হয়, তাহলে তা দ্রুত মহামারি আকার ধারণ করবে।’

‘তা ছাড়া শিক্ষার্থীরাও চাইছে কিছুদিনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা হোক। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি ফেসবুক গ্রুপে ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা উচিত কি না’ এর ওপর ভোটাভুটি হয়। সেখানে প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পক্ষে ভোট দিয়েছে। তাই একজন ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে আমি মনে করি, শিক্ষার্থীদের স্বার্থেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া উচিত’, বলেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ কি নজরে পড়েছে?

‘এখন পর্যন্ত তেমন কিছু দেখিনি। হল প্রভোস্ট ও আবাসিক শিক্ষকদের দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সচেতনতামূলক টুকটাক কিছু কাজ করেছে। গতকাল ফার্মেসি অনুষদ জানিয়েছে যে, তারা শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করবে। তবে আমি আবারও বলছি যে, একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সচেতনতার বাণী ছড়িয়ে, টিস্যু-মাস্ক দিয়ে করোনাভাইরাস মোকাবিলা সম্ভব নয়’, বলেন নুর।

করোনাভাইরাস সতর্কতায় ডাকসুর ভূমিকা কী?

নুর বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেখানে ধীর পায়ে এগুচ্ছে, সেখানে ডাকসুর উদ্যোগও পর্যাপ্ত নয়। কয়েকদিন আগে আমরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করেছি। তা ছাড়া আমরা বিভিন্ন হলে গিয়েছি। শিক্ষার্থীদের সচেতন থাকতে, ঘনঘন হাত ধুতে ও মাস্ক পরতে ও জনসমাগম এড়িয়ে চলতে বলেছি। ডাকসুর কিছু কর্মসূচিও স্থগিত করেছি। আসলে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ব্যক্তিক সচেতনতা ছাড়া তো আসলে তেমন কিছু করার নেই।’

‘তারপরও করোনাভাইরাস ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব গতিতে চললেও, আমার কাছে তা যথোপযুক্ত মনে হয়নি। কারণ আমি ডেঙ্গুর ভয়াবহতা দেখেছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তখনও নীরব ভূমিকা পালন করেছিল। তাই বলতে চাই, শিক্ষার্থীদের বিপদে ফেলতে না চাইলে কর্তৃপক্ষের উচিত অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা’, বলেন তিনি।

আরও পড়ুন:

করোনাভাইরাস: সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে ঢাবির হল-গণরুম

Comments

The Daily Star  | English

‘Shockingly insufficient’

"The proposed decision to allocate USD 250 billion per year for all developing countries is shockingly insufficient," said the adviser

6h ago