প্রথমবার টিউলিপ ফুটল বাংলাদেশে

গাজীপুরের শ্রীপুরে এক খণ্ড ফসলি জমিকে ঘিরে এখন স্থানীয় দর্শনার্থীদের ভিড়। স্থানীয় এক দম্পতির প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের প্রথম টিউলিপ ফুলের বাগান গড়ে উঠেছে সেখানে।

বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় ফুল টিউলিপ। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় এক হাজার টিউলিপ ফুলের মালিক কেওয়া দক্ষিণখান গ্রামের শেলি এবং তার স্বামী দেলোয়ার হোসেন।  

গতবছর ডিসেম্বরের শেষদিকে তারা টিউলিপের এক হাজার বাল্ব রোপণ করেছিলেন। বাল্বগুলোর প্রত্যেকটি ২২ দিনের মধ্যে একেকটি টিউলিপের চারায় পরিণত হয়েছে।

প্রায় ১৫ বছর ধরে ফুল চাষ করেন দেলোয়ার ও শেলি। বিদেশি ফুল চাষ করা যায় কি না চেষ্টা করে দেখতে তারা শুরুতে গ্লাডিওলাস নিয়ে পরীক্ষা শুরু করেন। পরে তারা লিলিয়াম এবং জারবেরা ফুল চাষের দিকে ঝোঁকেন।

২০১৭ সালে এই দুজন নেদারল্যান্ডের রয়েল ভ্যান জ্যানটেন নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ফুল চাষের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। সেখান থেকে তারা লিলিয়ামের ৬০ হাজার বাল্ব এবং চাষের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে দেশে ফেরেন। দেশে ফিরেও প্রতিষ্ঠানটির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন তারা। প্রতিষ্ঠানটি তাদেরকে বিনামূল্যে এক হাজার টিউলিপের বাল্ব দেয়।

শেলি জানান, “জমিতে বাল্বগুলো রোপণ করার ২২ দিনের মধ্যেই ফুল ফুটতে শুরু করেছে।”

শেলির সঙ্গী দেলোয়ার দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, “প্রতিদিনই এখানে অনেক দর্শনার্থী আসেন। তারা টিউলিপ বাগানে ঘুরতে চান। ফুল প্রতি ৮০ টাকা দাম দিতে চেয়েছেন কয়েকজন সম্ভাব্য ক্রেতা। কিন্তু আমরা কোনো ফুল বিক্রি করিনি।”

দেলোয়ার আরো জানান, নেদারল্যান্ড থেকে উন্নত প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফিরে বাণিজ্যিকভাবে টিউলিপ চাষ করতে চান তারা।  

এসময় দেশের ফুল চাষের ক্ষেত্রকে সমৃদ্ধ করে তুলতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং উপকরণ সংগ্রহের জন্য সরকারের সহায়তা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তাদের উদ্যোগ সম্পর্কে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. আবদুল মুয়ীদ বলেন, “তারা প্রমাণ করে দেখিয়েছে যে বাংলাদেশে সফলভাবে টিউলিপের চাষ করা সম্ভব। এই প্রথম আমি এখানে টিউলিপ ফুটতে দেখলাম। ভবিষ্যতে টিউলিপ চাষ করে এটিকে রপ্তানিযোগ্য পণ্য হিসেবে গড়ে তোলা যায় কিনা সে বিষয়ে আমরা নীতিনির্ধারকদের সাথে কথা বলব।”

লিলি পরিবারের সদস্য টিউলিপ। আগে দক্ষিণ ইউরোপ থেকে মধ্য এশিয়া পর্যন্ত টিউলিপের বিস্তার ছিল। তবে, ১৭ শতকের পর থেকে এটি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পায় এবং ব্যাপকভাবে চাষ শুরু হয়।

Comments

The Daily Star  | English
tax collection target for IMF loan

Talks with IMF: Consensus likely on exchange rate, revenue issues

The fourth tranche of the instalment was deferred due to disagreements and now talks are going on to release two tranches at once.

10h ago