এবার দেশের বাইরে রান পাবেন তো মুমিনুল?
মুমিনুল হক টেস্টে সেঞ্চুরি পাবেন, তবে খেলা হতে হবে দেশে এবং আরও নির্দিষ্ট করে বললে ভেন্যু হতে হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম। আদতে এমন কোনো শর্তের অস্তিত্ব না থাকলেও পরিসংখ্যান কিন্তু দিচ্ছে সাক্ষ্য। আট টেস্ট সেঞ্চুরির সবগুলোই মুমিনুল করেছেন দেশে, যার ছয়টিই আবার চট্টগ্রামে। সেঞ্চুরি না হয় বাদ রাখা গেল, কিন্তু দেশের বাইরে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের উইলোতে যে নিদারুণ রানখরা! পরিসংখ্যান বলছে, বিদেশের মাটিতে অনেক দলের টেল এন্ডারদের চেয়েও বেহাল দশা মুমিনুলের।
বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক দেশের বাইরে সর্বশেষ ফিফটি করেছেন ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে পচেফস্ট্রুমে ৭৭ রানের ইনিংস খেলার পর আরও ১৪ ইনিংসে নেই কোনো ফিফটি। আড়াই বছরে ৮.৫৮ গড়ে করেছেন মোটে ১২০ রান। সবমিলিয়ে দেশের বাইরে খেলা ১৬ টেস্টে মুমিনুলের গড় মাত্র ২১.৪৫। ক্যারিয়ারের ১৩ ফিফটির ছয়টা করেছেন দেশের বাইরে। অথচ অনেক দলের লেজের দিকের ব্যাটসম্যানদের পরিসংখ্যান আরও সমৃদ্ধ।
দেশে একেবারে বিপরীত চিত্র, ২২ টেস্টে তার গড় ৫৫.৩৩, আছে আট সেঞ্চুরি আর সাত ফিফটি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মুমিনুলের টেস্ট গড় ছিল চোখ ধাঁধানো। সত্তর ছুঁইছুঁই গড় নিয়ে বিশাল সব তকমাও পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। দেশের বাইরে যত খেলা বাড়ছে, সেই গড়ও তত নিম্নগামী হচ্ছে। ৩৮ টেস্টে ২ হাজার ৬৫৭ রান করা মুমিনুলের গড় কমতে কমতে এখন ৩৯.৬৬।
পৃথিবীর বহু ব্যাটসম্যানই চেনা পরিবেশের বাইরে খেলতে গেলে ভোগেন, পরিচিত কন্ডিশনে যতটা সাবলীল, ঠিক ততটা দেখা যায় না দেশের বাইরে। কিন্তু তারপরও মুমিনুলের ভোগান্তিটা যেন একটু বেশিই।
সর্বশেষ ভারত সফরে পেয়েছিলেন টেস্ট অধিনায়কত্ব, মুমিনুলকে টেস্ট অধিনায়ক রাখা হয়েছে পাকিস্তান সফরেও। আগামীতেও টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে তিনিই সবার প্রথমে থাকছেন বিসিবির বিবেচনায়।
অথচ ব্যাটসম্যান মুমিনুল এই মুহূর্তে আছেন সবচেয়ে সংকটময় অবস্থায়। ভারতে ইন্দোর টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩ রানে জীবন পেয়ে ধুঁকতে ধুঁকতে করেছিলেন ৩৭ রান। দেশের বাইরে সবশেষ ১৪ ইনিংসের মধ্যে ওটাই সর্বোচ্চ! ইন্দোরে দ্বিতীয় ইনিংসে মুমিনুল করেন ৭ রান। আর কলকাতায় গোলাপি বলের টেস্টে পড়েন চরম বিব্রতকর অবস্থায়। দুই ইনিংসেই শূন্য রানে আউট হন তিনি। ইতিহাসের দ্বিতীয় বাংলাদেশ অধিনায়ক হিসেবে টেস্টে পান ‘পেয়ার’।
রানখরার মিছিল সঙ্গে করেই মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ দলকে নিয়ে পাকিস্তানে গেছেন দলনেতা মুমিনুল। রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টে নিশ্চিতভাবেই গতি আর বাউন্সে ভরা কোনো উইকেটই অপেক্ষায় আছে। তবে পাকিস্তানে যাওয়ার আগে এই বেহাল দশা থেকে বের হওয়ার আকাঙ্ক্ষা জানিয়ে গেছেন মুমিনুল, ‘সবমিলিয়ে চিন্তা করলে আমরা দেশের বাইরে কিন্তু তেমন ভালো খেলি না, সত্যি কথা যদি বলেন। আমি চেষ্টা করব এবার ভালো ক্রিকেট খেলার। সবাই সেই চেষ্টাই করবে। আমরা ভালো ক্রিকেট খেলব।’
Comments