প্রথম শ্রেণির ম্যাচ কমিয়ে টেস্টে ভালো করার প্রত্যাশা!
ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট চালু হওয়ার আগেই টেস্ট মর্যাদা পেয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর দেশে চালু হয় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট। সে কারণেই বুঝি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে এত অবহেলা! সম্প্রতি টেস্টে বাংলাদেশ দলের যাচ্ছেতাই পারফরম্যান্সে চিন্তিত টিম ম্যানেজমেন্ট। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানও। অথচ এমন সময়েই কি-না দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্টের ম্যাচ কমিয়ে ফেলেছে বিসিবি।
এবার চার দিনের আসর বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিসিএল) হবে সিঙ্গেল লেগ ভিত্তিক। অর্থাৎ চার দল একে অন্যকে কেবল একবারই মোকাবিলা করবে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর জাতীয় লিগে (এনসিএল) প্রতিদ্বন্দিতা বাড়াতে করা হয়েছিল দুই স্তর। আট দলকে দুই ভাগে ভাগ করেও পাওয়া যায়নি সুফল। প্রতিদ্বন্দিতা বাড়েনি। এক সময় হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে হওয়া জাতীয় লিগে ছিল যথেষ্ট দর্শক আকর্ষণ। হোম এন্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে আয়োজন আর না করায় সেটাও কমছে প্রতি বছর।
জাতীয় লিগের সেরা পারফর্মারদের নিয়ে চার দলের বিসিএলকে মনে করা হয় আরেকটু বেশি মানসম্পন্ন টুর্নামেন্ট। কিন্তু সেই বিসিএলের গুরুত্বই বা বিসিবির কাছে কতটুকু! টুর্নামেন্ট শুরু হবে আগামী ৩১ জানুয়ারি, অথচ প্লেয়ার্স ড্রাফট হয়েছে ২৭ জানুয়ারি! অর্থাৎ মাত্র চার দিন আগে খেলোয়াড়রা জানতে পেরেছেন কে খেলবেন কোন দলে।
এরপর প্রস্তুতিই তারা নেবেন কখন আর দল হিসেবে এক হওয়ার সময়ই বা কোথায়? বিসিএলে এতদিন চালু ছিল ডাবল লিগ পদ্ধতি। কিন্তু ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের জন্য স্লট বের করতেই না-কি এই টুর্নামেন্ট এবার করে ফেলা হয়েছে সিঙ্গেল লিগ ভিত্তিক। অথচ সামনে বাংলাদেশের আছে অনেকগুলো টেস্ট। যার বেশিরভাগই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ।
ভারত সফরে গিয়ে দুই টেস্টে নিজেদের হতশ্রী চেহারা দেখানোর পর টেস্ট দল নতুন করে ঢেলে সাজানোর কথা বলেছেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। কিন্তু টেস্টে নতুন খেলোয়াড়ের যোগান আসবে যে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে, গুরুত্বের বিচারে তা যেন বিসিবির কাছেই তলানির দিকে!
এবার ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক প্রথম শ্রেণির লিগ হচ্ছে অনেকটা নামমাত্র। সাত আসরেও এই টুর্নামেন্টের জৌলুস বাড়াতে পারেনি বিসিবি। এতদিন চার দলের মধ্যে তিনটির ফ্র্যাঞ্চাইজি বিক্রি করতে পেরেছিল বোর্ড। একটা চালাত নিজেরাই। কারণ স্পন্সরদের আগ্রহের পণ্য হিসেবে ওই জায়গায় নেওয়া যায়নি দলটিকে। উল্টো অষ্টম বছরে এসে দক্ষিণাঞ্চলের দায়িত্ব ছেড়ে চলে গেছে প্রাইম ব্যাংক। চার দলের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের দুটি দল এখন নিজেরাই চালাচ্ছে বিসিবি।
জাতীয় লিগের পর ম্যাচ ফি বেড়েছে বিসিএলেও। ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে এবার তা করা হয়েছে ৬৫ হাজার। বেড়েছে দৈনিক ভাতাও। কিন্তু ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক এই টুর্নামেন্টের ম্যাচ ফি অন্তত এক লাখ টাকা করার দাবি ছিল প্রবল। জাতীয় লিগের প্রথম স্তরে ম্যাচ ফি যেখানে ৩৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৬০ হাজার করা হয়েছে, বিসিএলের ম্যাচ ফি বাড়ানোর হার সেখানে বেশ কমই বলা চলে।
ম্যাচ ফি বাড়লেও সিঙ্গেল লেগভিত্তিক টুর্নামেন্টে ম্যাচের সংখ্যা কমে যাওয়ায়, এই টুর্নামেন্ট থেকে ক্রিকেটারদের মোট আয়ের খুব বেশি হেরফেরও হচ্ছে না।
Comments