আইএস টুপির দায় নিচ্ছে না কেউ
হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রকিবুল হাসান রিগ্যান আদালত প্রাঙ্গণে যে আইএস স্লোগান সম্বলিত টুপি মাথায় দিয়েছিলো, তার দায় একে অপরের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে কারা অধিদপ্তর ও পুলিশ।
এ ঘটনায় কারা অধিদপ্তর থেকে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে আজ (৩০ নভেম্বর) বলা হয়েছে, আইএস টুপি কারাগার থেকে আনা হয়নি বরং আদালতের ভেতর থেকে সরবরাহ করা হয়েছে।
কারা অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে মিলছে না পুলিশের প্রাথমিক বক্তব্য। গতকাল পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো, সেই টুপি কারাগার থেকে এসেছে।
পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম-কমিশনার মাহবুব আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন, “প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি, কারাগার থেকে সে টুপি উল্টো করে পরে আদালতে এসেছিলো। তারপর, আদালতে এসে টুপিটি সোজা করে পরে।”
কারা তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (প্রিজন) কর্নেল আবরার হোসেন আজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “কারাগারের ভেতর থেকে টুপি পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমরা কারাগারের সংশ্লিষ্ট স্থানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেছি, এখানে কর্তব্যরত ব্যক্তিদের কাজে কোনো অবহেলা পাইনি।”
তিনি বলেন, “ওইদিন আসামিদের জন্য হাতকড়া নিয়ে আসেনি পুলিশ, যেটা তাদের প্রধান দায়িত্ব ছিলো। এ ধরনের কয়েদিদের জন্য অবশ্যই হাতকড়া ও হেলমেট নিয়ে আসার কথা। তারা এগুলো কিছুই সঙ্গে করে নিয়ে আসেনি।”
কর্নেল আবরার আরও বলেন, “এখানে এসে পুলিশ আমাদের কাছ থেকে এগুলো ধার চেয়েছিলো। আমরা যেগুলো কয়েদিদের জন্য ব্যবহার করি। বাধ্য হয়ে সেগুলো পুলিশকে ধার দিতে হয়েছিলো।”
কারাগারে কর্তব্যরত কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, রিগ্যান তাদের বলেছে যে- রায়ের পর আদালতের ভেতর সাদা পোশাকের এক ব্যক্তি তার হাতে সেই টুপি তুলে দেয়।
আজ এই প্রতিবেদন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে ডিবির যুগ্ম-কমিশনার মাহবুব আলমের সঙ্গে কয়েকদফা চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
পুলিশের তদন্ত কমিটির এক সদস্য আজ দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আইএস টুপি নিয়ে এখনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি তারা। তিনদিন নয়। আরও সময় চাইবেন।
২৭ নভেম্বর হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা মামলার রায়ের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আইএসের স্লোগান সম্বলিত টুপি মাথায় পরে। সেই টুপি পরে সে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশি প্রহরায় প্রিজন ভ্যানে উঠে। মামলার অপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধিও একই রকমের টুপি পরে ছিলো।
আরও পড়ুন:
Comments