বিশ্ববিখ্যাত ১০ পেইন্টিং
প্রতি বছর কয়েক মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের পেইন্টিং আন্তর্জাতিক নিলাম প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন হাতে পৌঁছায়। বিখ্যাত জাদুঘরগুলো হাজার হাজার শিল্পকর্ম তাদের সংগ্রহে রাখে। তবে সবার কাছে সমাদৃত বা ‘বিখ্যাত’ হয়ে ওঠা ১০টি পেইন্টিং নিয়ে সিএনএন সম্প্রতি একটি ফিচার প্রকাশ করেছে। গত পাঁচ বছরে বিশ্বব্যাপী কোন পেইন্টিংগুলো মানুষ সবচেয়ে বেশি আগ্রহ নিয়ে দেখেছেন বা জানার চেষ্টা করেছেন, তার উপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
১. মোনালিসা
আনুমানিক ১৫০৩ থেকে ১৫১৯ সালের মধ্যে লিওনার্দো দা ভিঞ্চি ‘মোনালিসা’ ছবিটি এঁকেছিলেন। বর্তমানে এটি ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ল্যুভর জাদুঘরে রয়েছে। ল্যুভর জাদুঘরে হাজারো পেইন্টিং থাকলেও এই পেইন্টিংটিকে ঘিরে দর্শকদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি। সেখানে এতোই ভিড় থাকে যে, ‘মোনালিসা’কে পেছনে রেখে একটি ছবি তুলতে পারা ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
২. দ্য লাস্ট সাপার
তালিকার দুই নম্বর পেইন্টিংটিও লিওনার্দো দা ভিঞ্চির। ইতালির মিলানে সান্তা মারিয়া ডেল্লে গ্রেজি জাদুঘরে থাকা ‘দ্য লাস্ট সাপার’ পেইন্টিংটি ১৪৯৫ থেকে ১৪৯৮ সালের মধ্যে আঁকা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। যিশুখ্রিস্ট ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার আগে তার শিষ্যদের সঙ্গে শেষবারের মতো যে খাবার গ্রহণ করেছিলেন সেই টেবিলের চিত্রায়ন করা হয়েছে ২৮ দশমিক ৯ ফিট প্রশস্ত এবং ১৫ ফিট উচ্চতার এই চিত্রকর্মটিতে।
৩. দ্য স্ট্যারি নাইট
১৮৮৯ সালে ভিনসেন্ট ভ্যান গগ আঁকেন ‘দ্য স্ট্যারি নাইট’। বর্তমানে এটি দেখতে হলে যেতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্টে।
৪. দ্য স্ক্রিম
ব্রিটিশ মিউজিয়ামের একটি ব্লগ অনুযায়ী, ‘দ্য স্ক্রিম’ একটি নয়, দুটি পেইন্টিংয়ের সমন্বয়। ১৮৯৩ সালে এডভার্ট মাঞ্চের আঁকা এই শিল্পকর্মটি ২০২০ সালের মে মাস পর্যন্ত নরওয়ের ওসলোতে মাঞ্চ জাদুঘরে দেখা যাবে। এরপর এটি স্থান পাবে ওসলোর জাতীয় জাদুঘরে।
৫. গোয়ের্নিকা
এই তালিকায় থাকা সবচেয়ে সাম্প্রতিক পেইন্টিং হচ্ছে পাবলো পিকাসোর ‘গোয়ের্নিকা’। ১৯৩৭ সালে আঁকা এই শিল্পকর্মটি স্থান পেয়েছে স্পেনের মাদ্রিদে অবস্থিত মুসেও রিনা সোফিয়া জাদুঘরে। স্পেনে গৃহযুদ্ধ চলাকালে গোয়ের্নিকা শহরে জার্মান বোমা হামলার প্রতিচ্ছবি এটি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এটি নিউইয়র্কের মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্টে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিলো। স্পেনে গণতন্ত্র ফিরে না আসা পর্যন্ত এই চিত্রকর্মটি যেনো ফিরিয়ে না আনা হয় সেই অনুরোধ করেছিলেন পাবলো পিকাসো।
৬. দ্য কিস
গুস্তাভ ক্লিম্ত ১৯০৭ থেকে ১৯০৮ সালের মধ্যে এঁকেছিলেন ‘দ্য কিস’। অস্ট্রিয়ার ভিয়েনাতে আপার বেলভেদ্রে জাদুঘরে রয়েছে এটি। ক্লিম্তের আঁকা সবগুলো চিত্রকর্মই অনেক দামে কেনাবেচা হলেও ‘দ্য কিস’ বিক্রির জন্য নয়।
৭. গার্ল উইথ এ পার্ল ইয়াররিং
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের মরিৎশুই জাদুঘরে জোহানেস ভার্মির ‘গার্ল উইথ এ পার্ল ইয়াররিং’ শিল্পকর্মটি রয়েছে। ১৬৬৫ সালে আঁকা এই চিত্রকর্মটিকে প্রায়শই ‘মোনালিসা’র সঙ্গে তুলনা করা হয়। ২০১২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত মরিৎশুই জাদুঘরের সংস্কারকালে, ‘গার্ল উইথ এ পার্ল ইয়াররিং’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি এবং জাপানে ঘুরে এসেছে।
৮. দ্য বার্থ অব ভেনাস
সান্দ্রো বোত্তিসেল্লি আনুমানিক ১৪৮৫ সালে এঁকেছিলেন ‘দ্য বার্থ অব ভেনাস’। ইতালির ফ্লোরেন্সে উফিজি জাদুঘরে রয়েছে এটি। এই শিল্পকর্মটি সান্দ্রোর সাহসিকতার একটি পরিচয় বহন করে। কেননা, নগ্নতা প্রকাশ করা সে সময়ে বিরল ছিলো।
৯. লাস মেনিনাস
১৬৫৬ সালে দিয়েগো ভেলাজকুয়েজের আঁকা ‘লাস মেনিনাস’ রয়েছে স্পেনের মাদ্রিদে। প্রাদো জাদুঘরের এই পেইন্টিংয়ে স্প্যানিশ রাজপরিবারের সঙ্গে খোদ দিয়েগো ভেলাজকুয়েজও রয়েছেন!
১০. ক্রিয়েশন অব অ্যাডাম
ভ্যাটিকানের সিস্টাইন চ্যাপেলে মিকেলেঞ্জেলোর সৃষ্টি ‘ক্রিয়েশন অব অ্যাডাম’ ১৫০৮ থেকে ১৫১২ সালের মধ্যে আঁকা হয়েছে বলে মনে করা হয়। এই শিল্পকর্মটি দেখার জন্যে সারাবছর পর্যটকের ভিড় জমে থাকে ভ্যাটিকানে।
Comments