লর্ডসের মাঠকর্মী থেকে বিশ্বকাপ ফাইনালে কোচের ভূমিকায়
১৯৯০ সাল। মেরিলিবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবের মাঠকর্মী হিসেবে কাজ পান তখনকার ১৮ বছরের তরুণ গ্যারি স্টিড। লর্ডস মাঠে খেলা হলে জানালার কাঁচ পরিষ্কার থেকে স্কোরকার্ড বিলি, এসবই করতে হতো তাকে। ২৯ বছর পর সেই মাঠেই স্টিড ফিরেছেন অন্য ভূমিকায়। এবার বিশ্বকাপ ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের প্রধান কোচ হিসেবেই যে তিনি বসবেন ড্রেসিং রুমে, সাজাবেন রণকৌশল।
এক সময়ের মাঠকর্মী স্টিড অবশ্য খেলেছেন সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেট। ১৯৯৯ সালে ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় তার। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার একদমই সাদামাটা, মাত্র ৫ টেস্টেই থামতে হয়েছে তাকে।
প্রথম শ্রেণীতে অবশ্য জুতসই রেকর্ড ছিল। তার জোরে ক্রিকেটেই পড়ে ছিলেন। এক পর্যায়ে হয়ে যান কোচ। নিউজিল্যান্ড নারী দলকে সফলভাবে কোচিং করিয়ে ছেলেদের জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত হন ২০১৮ সালে আগস্টে। খেলোয়াড় হিসেবে তো বটেই, কোচ হিসবেও তার নাম-ডাক খুব একটা নেই। কিন্তু ঠিকই নিরবে, নিভৃতে কিউইদের নিয়ে এগিয়ে চলেছেন সেরা হওয়ার দিকে। আর একটা ম্যাচ জিতলেই যে ইতিহাসেই ঠাঁই হয়ে যাবে তার!
মাঠকর্মী, টেস্ট ক্রিকেটার, তারপর কোচ হয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে আসা। জীবন মানুষকে কত রঙের ছবি যে দেখায়, শুক্রবার (১২ জুলাই) দলের ঐচ্ছিক অনুশীলন শেষে সেই গল্পই যেন শোনালেন স্টিড, ‘১৯৯০ সালে আমি এখানে ভাগ্যবান মাঠকর্মী ছিলাম। আমার কাজের মধ্যে ছিল জানালার গ্লাস পরিষ্কার করা, স্কোরকার্ড বিলি করা।’
ফাইনালের আগেও অবশ্য কোচ হিসেবে আরেকবার লর্ডসে আসা হয়েছিল স্টিডের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লিগ পর্বের ম্যাচে তার দল ভালো করতে পারেনি (৮৬ রানে হেরেছিল)। কিন্তু ব্যক্তিগত জায়গা থেকে ভিন্নরকম অনুভূতিতে ভেসেছিলেন স্টিড। ফাইনালে নিজের অতীতের গল্পের সঙ্গে আরও বড় উপলক্ষে লর্ডসকে একেবারেই জড়িয়ে রাখতে চান, ‘এখানে ফিরে আসা আমার জন্য বিশেষ অভিজ্ঞতা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে (লিগ পর্বের ম্যাচ) এখানে যে ম্যাচ খেলেছি আমরা জন্য সেটা দারুণ অনুভূতির ছিল। এখন এটা আরও বিশেষ উপলক্ষ বানাতে চাই।’
চার সেমিফাইনালিস্টের মধ্যে নিউজিল্যান্ডকেই মনে করা হচ্ছিল সবচেয়ে পিছিয়ে। কিন্তু সবাইকে তাক লাগিয়ে ভারতকে বিদায় করে ফাইনালে উঠে যায় তারা। স্টিড জানাচ্ছেন, তাদের তিনটি লক্ষ্যের প্রথম দুই ধাপে ছিল সেমিফাইনাল-ফাইনালে ওঠা। আর বাকিটা সারতে চান ১৪ জুলাই, ‘দল হিসেবে আমাদের তিনটি লক্ষ্য ছিল। দুটি পূরণ হয়েছে, আরেকটির জন্য ফাইনালে লড়ব।’
Comments