অবিশ্বাস্য সাকিবে রেকর্ড রান তাড়া করে টিকল আশা

বল হাতে ৫৪ রানে দুই উইকেট। কাজের সময়ে এসে ব্রেক থ্রো। রেকর্ড রান তাড়ায় নেমে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি। দলের ভীষণ দরকারে আবারও জ্বলে উঠলেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের আশা টিকে রইল বাংলাদেশের।

৩২২ রান তাড়ায় টনটনে বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে ৭ উইকেটে। এতটাই দাপট ছিল বাংলাদেশের তখনো খেলার জন্য পড়ে ছিল ৫১ বল।

হারলেই বিদায় হতো না আজই। তবে এই টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচগুলো খেলার শক্তিও আর কি থাকত? প্রতিপক্ষ অনেক চেনা, এবং গত কদিনের পরিসংখ্যান ঘাঁটলে সহজই। কিন্তু মঞ্চটা যে আলাদা, পরিস্থিতিটা যে ভিন্ন। মাথার উপর তাই   পাহাড়সম চাপ। চাপ জিততে বারুদও মিলছিল না। নিউজিল্যান্ডের ম্যাচের ভুল কৌশল আর শ্রীলঙ্কা ম্যাচে বৃষ্টির ঝাপটায় নেতিয়ে পড়েছিলেন ক্রিকেটাররা। টনটনে এসেছিলেন মনমরা হয়ে। সপ্তাহ খানের ছুটিতে সেই মনমরা ভাব কেটে যায় পরে। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ চ্যালেঞ্জ টপকে আশা বাঁচিয়ে রাখা তবু খুব সহজ ছিল না। সবই সম্ভব হয়েছে ব্যাটে-বলে অনন্য সাকিব আল হাসানের কারণে। তবে একাই তিনি নন। রেকর্ড রান তাড়ায় বড় মঞ্চে নিজের সামর্থ্য দেখিয়ে প্বার্শ নায়ক লিটন দাস।

ওয়ানডেতে নিজেদের রেকর্ড ৩২২ রান তাড়ায় বাংলাদেশ জিতেছে  ৫১ বল হাতে রেখে, ৭ উইকেটে। কেবল বড় রান তাড়ার জন্যই নয়। ম্যাচটা বাংলাদেশ স্মরণীয় করে রাখল এত বড় রান তাড়ায় এত দাপট দেখিয়ে জেতায়।

অথচ কাজটা যে কত কঠিন জানতেন অধিনায়ক মাশরাফি।  আগের ম্যাচগুলোতে জুতসই বল না করায় তার দিকেও যে উঠেছে প্রশ্ন। তামিম ইকবাল টের পাচ্ছিলেন চাপটা তার উপর কত। গত চার বছর দেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেও বিশ্বকাপের তিন ম্যাচে রান না পাওয়ায় ফুঁসছিল মানুষ। এই দুজন আজ তোলপাড় করা কিছু করেননি বটে। তবে বোলিংয়ে যেমন মাশরাফিরই শুরুতে সুরটা ধরে দিলেন। ব্যাটিংয়ে ওই কাজটা করেন তামিম। দুর্ভাগ্যজনক রান আউটে কাটা না পড়লে হয়ত দিনটা তারই করতে পারতেন।

ব্যাটে বলে মাশরাফি-তামিমের ধরা সুরেই সঙ্গত দিয়ে সাকিব আল হাসান টন্টনের মাঠে মাতোয়ারা করলেন।  ৮ ওভার বল করে ৫৪ রানে ২ উইকেট। ব্যাট হাতে ৯৯ বলে ১২৪ রান। টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান করে ফেলা। সাকিব যেন নিজেকে তুললেন আরও উচ্চতায়। এমন দিনে মুশফিকুর রহিমও কিছু একটা করলে খাপে খাপে মিলত। দলকে চাপে ফেলে তিনি ফেরেন দ্রুতই।

তবে তাতেও মন্দ হয়নি। লিটন দাস যে বড় মঞ্চে আবার নিজেকে প্রমাণ করতে পারলেন। মোহাম্মদ মিঠুনের বদলে তাকে খেলানো যে কতটা কার্যকর সিদ্ধান্ত ছিল দলের, দেখিয়েছেন ভীষণ চাপের সময় নেমে। তড়িঘড়ি তামিম ও মুশফিক ফিরে গেলে সাকিবের যখন জুটি বাধেন। দলের রান তখন ৩ উইকেটে ১৩৩।  আর সেই বাধন ছুটোলই না। ১৩৫ বলে ১৮৯ রানের জুটিতে ম্যাচই শেষ করে দিয়ে আসেন তারা।

তবে একজনকে আবারও রাখতে হবে সবার উপরে। হয়ত মাথায় তুলে। সেরকমটাই যে খেলেলেন তিনি। বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের টপকে বিশ্বকাপে এবার সর্বোচ্চ রান যে সাকিবের। অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতা। চার ম্যাচে ফিফটির নিচে কোন ইনিংস নেই। সেঞ্চুরি টানা দুটি।   ৪ ম্যাচে ৩৮৪ রান করে তিনিই এখন সেরা।

Comments

The Daily Star  | English
Yunus condemns lawyer’s murder in Chattogram

Keep calm, refrain from violence

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday condemned the murder of a lawyer in the port city of Chattogram.

6h ago