রিজার্ভ সেনা ঘোষণার পর দেশ ছেড়েছেন ২ লাখ রুশ
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিতে তার দেশের রিজার্ভ সেনাদের প্রস্তুত থাকার ঘোষণার পর অন্তত ২ লাখ রুশ নাগরিক দেশ ছেড়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুরের সংবাদমাধ্যম স্ট্রেইটস টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী মঙ্গোলিয়া, কাজাখস্তান, জর্জিয়া ও ফিনল্যান্ডের চেকপোস্টগুলোয় ব্যক্তিগত গাড়ির দীর্ঘ সারি।
এতে আরও বলা হয়, প্রেসিডেন্ট পুতিনের রিজার্ভ সেনাদের প্রস্তুত থাকার ঘোষণার পর দেশ ছাড়ার হিড়িকের পাশাপাশি রাশিয়ার বেশ কয়েকটি শহরে যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে।
মস্কো থেকে জর্জিয়ায় আসা বাসচালক আলেকজান্ডার ওলেইনকভ (২৯) গণমাধ্যমকে বলেন, 'বর্তমান রুশ সরকারের নীতি মানতে পারছি না বলেই দেশ ছেড়েছি।'
তিনি জানান, তার মতো আরও অনেকেই যুদ্ধ পছন্দ করেন না। তারা চলমান ইউক্রেন যুদ্ধকে 'ট্রাজেডি' হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন। তারা মনে করছেন, 'স্বৈরাচারের' কারণে এই যুদ্ধ শুরু হয়েছে।
রাশিয়ার সঙ্গে ১৪ দেশের সীমানা আছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সব দেশ এ বিষয়ে তথ্য না দেওয়ায় দেশত্যাগী রুশ নাগরিকদের প্রকৃত হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না।
গত মঙ্গলবার কাজাখস্তান সরকার জানিয়েছে, গত সপ্তাহে দেশটিতে ৯৮ হাজার রুশ নাগরিক প্রবেশ করেছেন।
জর্জিয়ার সরকার জানিয়েছে, গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ রাশিয়া থেকে এসেছেন।
পুতিনের সেই ঘোষণার পর থেকে প্রতিদিন ১০ হাজার মানুষ রাশিয়া ছাড়ছেন উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, এর আগে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার মানুষ রাশিয়ার বাইরে যেতেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বর্ডার এজেন্সি ফ্রন্টটেক্স এক বার্তায় জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহে প্রায় ৬৬ হাজার রুশ নাগরিক জোটভুক্ত দেশগুলোয় এসেছেন। এই সংখ্যা আগের সপ্তাহের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি।
সূত্রের বরাত দিয়ে রাশিয়ার প্রতিবেশী ইইউভুক্ত দেশ লাতভিয়া-ভিত্তিক রুশ দৈনিক নোভায়া গাজেতা ইউরোপ জানিয়েছে, গত রোববার পর্যন্ত ২ লাখ ৬১ হাজার মানুষ রাশিয়া ছেড়েছেন।
দেশ ছাড়ার এই হিড়িক থামাতে মস্কো চেষ্টা করছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে তা বলা হয়নি।
গতকাল রাশিয়ার উত্তর ওশেটিয়া প্রজাতন্ত্র দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে গাড়ি নিয়ে সেখানে আসার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। গত ২ দিনে প্রজাতন্ত্রটিতে ২০ হাজার মানুষ প্রবেশ করায় গভর্নর সেরগেই মেনিয়ায়লো এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
রাশিয়ার সীমান্তবর্তী ইইউভুক্ত এস্তোনিয়া, লাতভিয়া, লিথুনিয়া ও পোল্যান্ড সেসব দেশে রুশ নাগরিকদের প্রবেশের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার সামরিক বিশেষজ্ঞ মাইক রিয়ান নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, 'তরুণ রুশরা গণ হারে দেশ ছাড়ছেন। তবে এখনো লাখ লাখ তরুণের দেশ ছাড়ার সঙ্গতি নেই।'
Comments