‘রাশিয়াকে কঠোর জবাব দেওয়া হবে’

আজ থেকে ৩১ বছর আগে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে মুক্ত হয় ইউক্রেন। এ ছাড়াও, ভিন্ন এক কারণে আজকের দিনটি ইউক্রেনীয়দের কাছে স্মরণীয়। আজ পূর্ণ হচ্ছে রুশ আগ্রাসনের ৬ মাস।
গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি দৃঢ় প্রত্যয় প্রকাশ করে বলেন, ‘তাদেরকে (রাশিয়া) কঠোর জবাব দেওয়া হবে। যত দিন যাবে আমাদের জবাব তত কঠোর ও শক্তিশালী হবে।’ ছবি: রয়টার্স
গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি দৃঢ় প্রত্যয় প্রকাশ করে বলেন, ‘তাদেরকে (রাশিয়া) কঠোর জবাব দেওয়া হবে। যত দিন যাবে আমাদের জবাব তত কঠোর ও শক্তিশালী হবে।’ ছবি: রয়টার্স

আজ থেকে ৩১ বছর আগে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে মুক্ত হয় ইউক্রেন। এ ছাড়াও, ভিন্ন এক কারণে আজকের দিনটি ইউক্রেনীয়দের কাছে স্মরণীয়। আজ পূর্ণ হচ্ছে রুশ আগ্রাসনের ৬ মাস।

আকাশ, ভূমি ও সমুদ্রপথে নতুন হামলার আশংকায় ইউক্রেনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের পরিকল্পনায় কাটছাঁট করা হয়েছে বলে আজ বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা গেছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, রাজধানী কিয়েভে জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়াও, গত কয়েক মাস ধরে ক্রমাগত বোমা হামলার শিকার পূর্বাঞ্চলের খারকিভ শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

ইউক্রেন সরকার আগুনে পুড়ে যাওয়া রুশ ট্যাংক ও সাঁজোয়াযানের ধ্বংসাবশেষ কিয়েভের কেন্দ্রে সাজিয়ে রেখেছে। রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ইউক্রেন সরকার আগুনে পুড়ে যাওয়া রুশ ট্যাংক ও সাঁজোয়াযানের ধ্বংসাবশেষ কিয়েভের কেন্দ্রে সাজিয়ে রেখেছে। ছবি: রয়টার্স
ইউক্রেন সরকার আগুনে পুড়ে যাওয়া রুশ ট্যাংক ও সাঁজোয়াযানের ধ্বংসাবশেষ কিয়েভের কেন্দ্রে সাজিয়ে রেখেছে। ছবি: রয়টার্স

গতকাল মঙ্গলবার রাতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই দিবসকে ঘিরে রাশিয়ার উসকানিমূলক আচরণের বিষয়ে সতর্ক করেন। জনগণকে বিমান হামলার সতর্কতাসূচক সাইরেনকে গুরুত্ব দিতে ও সে অনুযায়ী নিজেদের সুরক্ষিত রাখার বিষয়ে জোর দেন।

জেলেনস্কি নিয়মিত সান্ধ্যকালীন বক্তব্যে আরও বলেন, 'আমাদের রাষ্ট্রের প্রতি সবচেয়ে ভয়াবহ হুমকির বিরুদ্ধে লড়ছি। একইসঙ্গে এ সময়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ের জাতীয় ঐক্য অর্জন করেছি।'

ক্রিমিয়াবিষয়ক এক ভার্চুয়াল সভায় ৬০ দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের তিনি বলেন, 'কিয়েভ যে কোনো উপায়ে রুশ বাহিনীকে ক্রিমিয়া থেকে বিদায় করবে। এ জন্য অন্য কোনো দেশের সঙ্গে পূর্ব-আলোচনার প্রয়োজনীয়তা নেই।'

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে আজ বলা হয়, গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি দৃঢ় প্রত্যয় প্রকাশ করে বলেন, 'তাদেরকে (রাশিয়া) কঠোর জবাব দেওয়া হবে। যত দিন যাবে আমাদের জবাব তত কঠোর ও শক্তিশালী হবে।'

রক্ষী দলের সদস্যরা স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ইউক্রেনের সর্ববৃহৎ পতাকা উত্তোলন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। ছবি: রয়টার্স
রক্ষী দলের সদস্যরা স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ইউক্রেনের সর্ববৃহৎ পতাকা উত্তোলন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। ছবি: রয়টার্স

৬ মাসের যুদ্ধে ইউক্রেনের হাজারো মানুষ নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৪ কোটি ১০ লাখ বা দেশটির এক তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষ। অনেক শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

সার্বিকভাবে বৈশ্বিক বাজারে এই যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খুব শিগগির এই যুদ্ধে কোনো পক্ষের জেতার সম্ভাবনা নেই। শান্তি আলোচনাও স্থবির রয়েছে।

২০১৪ সালে ক্রিমিয়ার দখলের পর চলমান যুদ্ধে রাশিয়া কৃষ্ণ সাগর ও আজভ সমুদ্রের তীরবর্তী ইউক্রেনের কয়েকটি এলাকা ও পূর্বে দনবাস অঞ্চলের লুহানস্ক ও দনেৎস্ক দখলে নিয়েছে।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর দাবি, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্দেশে আগ্রাসনের কারণে দেশটির প্রায় ৯ হাজার সেনা প্রাণ হারিয়েছেন।

রাশিয়া তাদের হতাহতের সংখ্যা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য অনুসারে, অন্তত ১৫ হাজার রুশ সেনা এই 'বিশেষ সামরিক অভিযানে' নিহত হয়েছেন।

মস্কোর দাবি, ইউক্রেনকে 'নাৎসিদের' হাত থেকে মুক্ত করতে এই অভিযান চলছে।

কিয়েভের অভিযোগ, বিনা উসকানিতে রাশিয়া এই হামলা চালিয়েছে।

১৯৯১ সালের আগস্টে গণভোটে ইউক্রেনীয়রা সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীন হওয়ার পক্ষে মত দেয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত ইউক্রেনকে ১০ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার নিরাপত্তা সহযোগিতা দিয়েছে।

আজ আরও ৩ বিলিয়ন ডলার সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা।

সম্প্রতি, অত্যাধুনিক মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ইউক্রেনকে বেশ সহায়তা করেছে। এর মাধ্যমে কিয়েভ গোলাবারুদের বেশ কয়েকটি সংরক্ষণাগার ও কমান্ড পোস্ট ধ্বংস করেছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Political parties want road map to polls

Leaders of major political parties yesterday asked Chief Adviser Prof Muhammad Yunus for a road map to reforms and the next general election.

5h ago