১৮ বছর প্যারিস বিমানবন্দরে, মারা গেলেন সেখানেই

'দ্য টার্মিনাল' সিনেমার পোস্টারের পাশে মেহরান করিমি নাসেরি। ছবি: সংগৃহীত

প্যারিস বিমানবন্দরে ১৮ বছর ধরে বাস করতেন তিনি। তার এ গল্পকে কেন্দ্র করে স্টিফেন স্পিলবার্গ ২০০৪ সালে 'দ্য টার্মিনাল' সিনেমা নির্মাণ করেছিলেন।

এই ইরানি নাগরিক মেহরান করিমি নাসেরি শনিবার মারা গেলেন ওই প্যারিস বিমানবন্দরেই। বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কূটনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে নাসেরি ১৯৮৮ সালে চার্লস ডি গল বিমানবন্দরের এক কোণে বসবাস করতে শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাকে ফ্রান্সে বসবাসের অধিকার দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু, কয়েক সপ্তাহ আগে তিনি আবার বিমানবন্দরে ফিরে আসেন বলে বিমানবন্দরের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে। সেখানেই শনিবার তিনি মারা যান।

মেহরান করিমি নাসেরি ১৯৪৫ সালে ইরানের খুজেস্তান প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। মায়ের সন্ধানে তিনি ইউরোপে যান।

প্যারিস বিমানবন্দরের টার্মিনালে মেহরান করিমি নাসেরি। ছবি: সংগৃহীত

কিছু বছর বেলজিয়ামে কাটান তিনি। যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস ও জার্মানিসহ কয়েকটি দেশে গেলেও, অভিবাসন সংক্রান্ত বৈধ কাগজপত্র না থাকায় সেসব দেশ থেকে তাকে বের করে দেওয়া হয়।

এরপর তিনি ফ্রান্সে যান। সেখানে প্যারিস বিমানবন্দরের টু-এফ টার্মিনালে থাকতে শুরু করেন।

সেখানে একটি বেঞ্চের চারদিকে নিজের জিনিসপত্র ও ট্রলি রেখে নিজের থাকার জায়গা করে নেন। সেখানে বই ও সংবাদপত্র পড়ে দিন কাটাতেন নাসেরি এবং একটি নোটবুকে জীবনের গল্প লিখতেন। 

এই গল্পটি লুফে নেন বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক স্টিফেন স্পিলবার্গ। তৈরি করে ফেলেন 'দ্য টার্মিনাল'। পুরো বিশ্বের সামনে তুলে ধরেন মেহরান করিমি নাসেরির জীবনের গল্পকে। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা টম হ্যাঙ্কস ও ক্যাথরিন জেটা-জোনস।

সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর সাংবাদিকরা নাসেরির সাক্ষাৎকার নিতে ভিড় জমান গল বিমানবন্দরে। নাসেরি নিজেকে 'স্যার আলফ্রেড' বলে পরিচয় দিতেন। সে সময় প্রতিদিন তিনি ৬টি করে সাক্ষাৎকার দিতেন বলে লে প্যারিসিয়েনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

১৯৯৯ সালে শরণার্থী মর্যাদার পাশাপাশি ফ্রান্সে থাকার অধিকার পান নাসেরি। কিন্তু ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি বিমানবন্দরে ছিলেন। ওই বছর অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। 

'টার্মিনাল' সিনেমা থেকে পাওয়া অর্থ ব্যয় করে পরে তিনি হোস্টেলে থাকতে শুরু করেন।

মৃত্যুর সময় তার কাছে কয়েক হাজার ইউরো পাওয়া গেছে বলে বিমানবন্দরের ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English

No sharp rise in crime, data shows stability: govt

The interim government today said that available data does not fully support claims of a sharp rise in crimes across Bangladesh this year

1h ago