মালিতে আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে ১০ বছর পর দেশটি থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে।
আজ সোমবার জাতিসংঘ মিশনের মুখপাত্র জানিয়েছেন, মালির সামরিক নেতাদের আদেশে দেশটি থেকে মিশন সদস্যদের প্রত্যাহার করা হয়েছে।
মিশনের মুখপাত্র ফাতুমাতা কাবা এএফপিকে জানিয়েছেন, 'মিনুসমা' নামে পরিচিত জাতিসংঘের মিশনটি মালির রাজধানী বামাকোতে অবস্থিত তাদের সদর দপ্তর থেকে জাতিসংঘের পতাকা নামিয়েছে নিয়েছে।
তিনি আরও জানান, পতাকা নামানোর অর্থ হলো প্রতীকীভাবে মিশনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি। তবে, এখনো বেশকিছু কাজ বাকি রয়েছে।
আগামী ১ জানুয়ারির পরে সেখানে একটি 'লিকুইডেশন ফেজ' অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দেশটির কর্তৃপক্ষের কাছে মিশনের অবশিষ্ট যন্ত্রপাতি হস্তান্তরের মতো কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।
২০২০ সালে মালির শাসনক্ষমতা হাতে নেওয়া জান্তা সরকার গত জুনেই জাতিসংঘ মিশন প্রত্যাহারের দাবি জানায়। ২০১৩ সালে দেশটিতে শান্তিরক্ষী মোতায়েন করে জাতিসংঘ মিশন। সেখানে এখনো ক্রমবর্ধমান সংকট থাকলেও জান্তা সরকার মিশনের উপস্থিতি চাইছে না।
এই মিশন প্রত্যাহার করা হয়ে আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশটির সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র দলগুলোর মধ্যে লড়াই আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গত এক দশকে মালিতে জাতিসংঘের এই মিশনে প্রায় ১৫ হাজার সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করেছে। সেখানে মোতায়েন শান্তিরক্ষীদের মধ্যে প্রায় ১৮০ জন নিহত হয়েছেন।
মিশনের পক্ষ থেকে এক টুইটে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার পর্যন্ত তাদের ১৩ হাজার ৮০০ সদস্যের মধ্যে সাড়ে ১০ হাজারের বেশি সেনা ও পুলিশ সদস্য এবং বেসামরিক কর্মী মালি ছেড়ে গেছেন।
মালির জান্তা সরকার জাতিসংঘ মিশনকে দেশ ছাড়তে বলার পর থেকে 'মিনুসমা' এখন পর্যন্ত মালির ১৩টি অবস্থান থেকে সরে এসেছে। তবে, দেশটির উত্তরের গাও ও টিমবুকটু থেকে এখনো সরতে পারেনি।
গত সপ্তাহে মালির কেন্দ্রীয় অঞ্চল মোপ্তি ক্যাম্প হস্তান্তর করেছে জাতিসংঘ মিশন।
মোপ্তিতে সম্প্রতি বাংলাদেশ ও টোগো থেকে শান্তিরক্ষীদের মোতায়েন করা হয়েছিল এবং এর আগে মিশর, পাকিস্তান ও সেনেগালের শান্তিরক্ষীরা সেখানে ছিলেন।
ফাতুমাতা কাবা এএফপিকে বলেন, শান্তিপূর্ণভাবেই শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে, মালির অস্থির উত্তরাঞ্চল থেকে সম্প্রতি শান্তিরক্ষীদের প্রত্যাহারের পর দেশটির সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
ক্ষমতা দখলের পর মালির জান্তা সরকার মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে এবং সাবেক ঔপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্সের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেছে।
Comments