নোবেল বিজয়ীদের ছবি যে কারণে সোনালি-কালো রঙে আঁকা হয়

ছবি: শিল্পী নিকলাস আলমেদের ফেসবুক পেজ থেকে

অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে গতকাল শেষ হলো ২০২২ সালের নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা। সপ্তাহজুড়ে বিজ্ঞান, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কয়েক বছর ধরে নোবেল বিজয়ীদের পরিচিতিতে সাধারণ ছবির পরিবর্তে সোনালি-কালো রঙে আঁকা পোর্ট্রেট ছবি প্রকাশ করে নোবেল কমিটি, কিন্তু কেন? 

ডিজিটাল ক্যামেরার রঙিন ছবি কিংবা রংতুলিতে নানা রঙের মিশেলের বিকল্প থাকলেও কালো রঙের বর্ডারে সোনালি রঙের ছবিই কেন নোবেল বিজয়ীদের পরিচয়ে অনন্য বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠলো, এমন প্রশ্ন জেগেছে অনেকের মনে।  

অসাধারণ এসব পোর্ট্রেটের আলোচনা করতে প্রথমেই বলতে হয় শিল্পী নিকলাস এলমেহেদের নাম। নোবেল জয়ীদের চমৎকার সব পোর্ট্রেটের স্রষ্টা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায় নোবেল পুরস্কারের অফিসিয়াল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ২০১২ সাল থেকে যিনি ভিজ্যুয়াল কনটেন্টের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।   

আজ থেকে প্রায় ১০ বছর আগেকার কথা, নিকলাস তার প্রথম পোর্ট্রেট এঁকেছিলেন কালো মার্কার দিয়ে। তার কারণ, সে সময় বিজ্ঞানীদের ভালো ছবি পাওয়াই ছিল বড্ড মুশকিলের ব্যাপার। ছবির রেজ্যুলেশন এত নিন্মমানের হতো যে, তাদের মুখ শনাক্ত করাও ছিল কষ্টসাধ্য। এ ছাড়া বিজয়ীরা ঘোষণার আগে জানতেনও না যে তারা নোবেল পুরস্কার পেতে যাচ্ছেন। তাই নতুন ছবির বন্দোবস্ত করাও সহজ ব্যাপার ছিল না। 

নিজের আঁকা ছবির সামনে শিল্পী নিকলাস। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

এ ছাড়া কোনো ছবি দেখা ছাড়াই যে কারও পোর্ট্রেট আঁকতে পারেন নিকলাস। তাই একদিকে প্রতিভার সদ্ব্যবহার এবং অন্যদিকে ছবির কপিরাইট সংক্রান্ত সমস্যার বিকল্প হিসেবে ক্যামেরার ছবির পরিবর্তে পোর্ট্রেটের মাধ্যমে বিজয়ীদের পরিচিতি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয় নোবেল কমিটি। 

এবার আসা যাক রঙের আলোচনায়। এত রঙ থাকতে পোর্ট্রেটে সোনালি রঙ কেন ব্যবহার করা হলো তা নিয়েও বেশ কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে অনেকের মনে। সত্যিকার অর্থে, সোনালি রঙে পোর্ট্রেট আঁকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বেশ পরে। ২০১৭ সালে প্রথমে নোবেল বিজয়ীদের নাম সোনালি রঙে প্রকাশ করার প্রাথমিক ঘোষণা দেয় নোবেল কমিটি। 

তারপর নিকলাসের মনে প্রশ্ন জাগে, পোর্ট্রেটের রঙও যদি সোনালি হয়, তাহলে কেমন হয়? সেখান থেকেই সোনালি রঙের পোর্ট্রেট আঁকার শুরু। যাতে ব্যবহার করা হয়েছে সোনার ফয়েল। পোর্ট্রেট আঁকার পর এক বিশেষ ধরনের আঠার সাহায্যে লাগানো হয়েছে ফয়েলগুলো। যার কারণে নোবেল বিজয়ীদের ছবি ফুটে ওঠে আভিজাত্যের সোনালি রঙে।

যদিও সোনালি রঙ ব্যবহারে পোর্ট্রেটগুলো বেশ আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করার জন্য যথেষ্ট ছিল, তাতে ভিন্ন মাত্রা যুক্ত করেছে কালো রঙের বর্ডারের ব্যবহার। আর ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে সাদা রঙ থাকায় বিজয়ীদের ছবি হয়ে উঠেছে আরও স্পষ্ট ও শোভনীয়। 

এর আগে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নোবেল বিজয়ীদের পরিচিতি প্রকাশে ব্যবহার করা হতো হলুদ ও নীল রঙের প্রতিচ্ছবি।

 

তথ্যসূত্র: পিকেবি নিউজ, নিউজ টাইম এক্সপ্রেস 

গ্রন্থনা: আসরিফা সুলতানা রিয়া 

 

Comments

The Daily Star  | English

Nahid warns against media intimidation, vows stern action

The government will take stern action against those trying to incite violence or exert undue pressure on the media or newspapers, said Information Adviser Nahid Islam today

1h ago