অরক্ষিত খালের ঝুঁকিপূর্ণ অংশের সুরক্ষায় চউকের ‘বাঁশের বেড়া’
বন্দরনগরীর জামাল খান খালের অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণ অংশে অবশেষে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)।
কিন্তু, এই নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি হচ্ছে বাঁশের খুঁটি ও বাঁশের পাতলা ফলা দিয়ে।
স্থানীয়রা বলছে, এই বেষ্টনী এতটাই নাজুক যে, একটু জোরে বাতাস হলেই যেকোনো সময় এটি পড়ে যাবে। এটি দায়সারা কাজ।
নগরীর হেম সেন লেন এলাকার জামাল খান খালের পাড় গত এপ্রিল মাস থেকে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে।
স্থানীয়রা জানায়, ওই এলাকার তিনটি ভবনের অংশবিশেষ খালের জমি দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে।
জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে চউক খালের জমি উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে এবং ভবনগুলোর অবৈধ অংশ ভেঙে দেয়।
গত সপ্তাহে সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে খালের পাড়ে দুই শিশুকে খেলতে দেখা যায়। খালটি ঝুঁকিপূর্ণ ও অরক্ষিত হওয়ায় যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ছিল। কয়েকজন পথচারীকে খালের পাড় ধরে হাঁটতেও দেখা যায়।
গত রোববার দ্য ডেইলি স্টারে 'অরক্ষিত জামাল খান খালে দুর্ঘটনার ঝুঁকি' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
এরপর বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে চউক। সংস্থাটির পক্ষ থেকে খালের পাড়ে বেষ্টনী দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
জানতে চাইলে চউকের মেগা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দ্য ডেইলি স্টার থেকে তথ্য পাওয়ার পর আমি প্রকল্পের স্থানীয় সাব-কন্ট্রাক্টরের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তাকে খালের উন্মুক্ত পাড় বেষ্টনী দিয়ে সুরক্ষিত করার নির্দেশ দিয়েছি।'
তবে এই বাঁশের বেড়া দেওয়াকে 'দায়সারা' কাজ বলছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কর্তৃপক্ষ দীর্ঘ সাত মাস পর খালের উন্মুক্ত পাড় সুরক্ষিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু বেষ্টনীটি খুবই নড়বড়ে বলে মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেনতনভাবে লোক দেখানো একটি কাজ।'
আরেক স্থানীয় রাজু বড়ুয়া বলেন, 'এই বেষ্টনী এমনভাবে করা উচিত যেন তা টেকসই হয়।'
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ফেরদৌস বলেন, 'বেড়াটি অস্থায়ীভাবে সুরক্ষার জন্য তৈরি করা হচ্ছে। এটি স্থায়ী কিছু নয়। শিগগির খালের কাজ শুরু হবে।'
উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে চট্টগ্রামে অরক্ষিত খাল-নালায় পড়ে মোট ১১ জন নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছেন।
সবশেষ গত ৯ জুন বন্দরনগরীর আগ্রাবাদ এলাকার নাসির খাল থেকে সাত বছরের শিশু জসিম উদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
গত ৯ এপ্রিল সদরঘাট নালাপাড়া এলাকায় অরক্ষিত নর্দমায় পড়ে তিন বছরের শিশু ওজাইফা মারা যায়।
Comments