জুলাইকে দুঃখজনকভাবে মানি মেকিং মেশিনে পরিণত করা হয়েছে: উমামা ফাতেমা

জুলাই অভ্যুত্থানকে দুঃখজনকভাবে 'মানি মেকিং মেশিনে' পরিণত করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক শিক্ষার্থী উমামা ফাতেমা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গতকাল রোববার রাতে লাইভে এসে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফেসবুক লাইভে উমামা ফাতেমা তার জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ এবং এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দায়িত্বগ্রহণের পর নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন।

'জুলাই-আগস্ট' একটা এক্সপেরিয়েন্স উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমার এখনো অবাক লাগে যে এটা দিয়ে টাকা-পয়সাও ইনকাম করা যায়। আমি মুখপাত্র (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের) হওয়ার পর প্রথম আবিষ্কার করি যে লোকজন নানা কিছু করছে যেমন, টেন্ডার বাণিজ্য, তদবির বাণিজ্য, ডিসি নিয়োগ করছে।'

তিনি বলেন, 'আমার আইডিয়া ছিল না যে এগুলো করাও যেতে পারে। আমার কখনো মাথায় আসেনি যে এভাবে টাকা-পয়সা ইনকাম করা যায়। জুলাই-আগস্ট একটা এক্সপেরিয়েন্স, সুতরাং এটাকে কেন আমি মানি মেকিং মেশিনে পরিণত করতে যাব। আনফরচুনেটলি সেটা হয়েছে। খুবই রেগুলার বেসিসে হয়েছে।'

উমামা বলেন, 'অনেক সুস্থ চিন্তার মানুষ আমার আশপাশে আছেন যারা অন্যের ক্ষতি না করে মানুষের ভালোর চিন্তা করেন। এই চিন্তার মানুষ আমার আশপাশে অনেক আছেন এবং সে কারণে আমি বেঁচে গেছি। তারাই আমাকে পরামর্শ দিয়েছে যে এই প্ল্যাটফর্ম দিয়ে খুব বেশি কিছু করতে পারবে না। যেমন, কেউ একজন আমাকে এসে বলল যে আপু আপনার ওপর ভরসা রাখি। পরের দিন সেই রাতে গিয়েছে হেয়ার রোডে। গিয়ে কোন কমিটিতে তার কোন পদ হবে সেটা নিয়ে সে বার্গেনিং করে। এরকম ঘটনা অহরহ হয়েছে। এটা ছিল ট্র্যাজিক ইভেন্ট অফ মাই লাইফ।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের তিন ছাত্র উপদেষ্টা যখন ক্যাবিনেটে গেলেন, তখন তাদের প্রতিজ্ঞা ছিল যে তারা কখনো ইলেকশন করবেন না। তারা স্যাক্রিফাইস করছেন। স্যাক্রিফাইসটা হচ্ছে তারা পরবর্তী ইলেকশনে পার্টিসিপেট করবেন না এবং নেশন বিল্ডিংয়ের কাজে সরব থাকবেন। কিন্তু এটা ঘটে নাই। মানে মানুষ চাচ্ছে যে তারা এই দেশটার জন্য বেটার কিছু করবে। কিন্তু আপনি পুরো জিনিসটাকে একটা দলের দিকে ডাইভার্ট করে দিচ্ছেন।'

'দল করলেই দেশে ভালো কিছু সম্ভব যদি হতো, গতানুগতিক রাজনীতির মধ্য দিয়ে যদি পরিবর্তন সম্ভব যদি হতো, তাহলে তো এত বছরেই সেটা হতো। নরমাল পলিটিক্যাল সিস্টেমের মধ্য দিয়ে সিস্টেম চেঞ্জ করা যায় না। সিস্টেমটা শুধু ম্যানিপুলেট করা যায়,' বলেন গণঅভ্যুত্থানের এই নেতা। 

তিনি বলেন, 'আমি যখন ছাত্র ফেডারেশন করেছি, আমাকে কোনোদিন কেউ বলেনি যে আমাকে গণসংহতি আন্দোলন করতে হবে। কিন্তু, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র হওয়ার ক্রাইটেরিয়া হচ্ছে ভবিষ্যতে একটা দল আসতে যাচ্ছে এবং আমাকে ওই দলে যেতে হবে। আমি কাউকে হ্যাঁ বলিনি। কারণ আমি এই বিষয়টা নিয়ে খুবই ক্রিটিক্যাল ছিলাম। এই কমিটমেন্ট দিয়ে যদি আমাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র হতে হয়, তাহলে এটা তো কোনো ভালো কমিটমেন্ট না। আমি এই কথাটা বলেছি।'

সবশেষে উমামা ফাতেমা বলেন, 'অনেক বেশি শিক্ষা হয়েছে। মানুষকে অনেক বেশি আগের তুলনায় জাজ করতে পারি। বাট লং ওয়ে টু গো। বাংলাদেশ অনেক কঠিন রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে এসে পৌঁছেছে। এই সবকিছুর মধ্যে ফাইট করে যেতে হবে, তো সাথে থাকবেন। আর বিশ্বাস রাখেন যে, মানুষ হিসেবে আমার অতটুকু ব্যক্তিত্ব আছে।'

Comments

The Daily Star  | English

US cuts tariffs on Bangladesh to 20% after talks

The deal for Dhaka was secured just hours before a midnight deadline set by President Donald Trump

1h ago