রাজনৈতিক দলে যোগ দিলে সরকার থেকে বের হয়ে যাব: বিবিসি বাংলাকে নাহিদ ইসলাম

বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক দল
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টানাপড়েনের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, রাজনৈতিক দলে যোগ দিলে সরকার থেকে বের হয়ে যাব।

গতকাল শুক্রবার বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম এ মন্তব্য করেন।

নাহিদ ইসলাম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে বিএনপির 'কথার টোন আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে'।

এর আগে মঙ্গলবার বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারে নিজেদের প্রতিনিধি রেখে ছাত্ররা রাজনৈতিক দল গঠন করলে নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ সরকার আনার প্রয়োজন হবে।

তার এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই আলোচনার সূত্রপাত হয়।

মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্যের পর উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানান

নাহিদ ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, 'এক এগারো এবং মাইনাস টু-এর আলাপটা কিন্তু সর্বপ্রথম বিএনপিই রাজনীতির মাঠে এনেছে কিছুদিন আগে।'

অভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি ও অংশীজনদের সমর্থনেই সরকার গঠন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বিএনপি মহাসচিবের 'নিরপেক্ষতা' নিয়ে বক্তব্য নিয়ে 'সন্দেহ' প্রকাশ করেন।

এই সরকারকে অস্থিতিশীল করতে বা সরাতে দেশি-বিদেশি চক্রান্তের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক অবস্থানের সঙ্গেও সাদৃশ্য দেখছেন তিনি।

তিনি বলেন, 'সম্প্রতি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত স্ট্যাটাস দিয়েছে যে এটা অবৈধ ও অনির্বাচিত সরকার, একটা নিরপেক্ষ সরকার লাগবে, এর আন্ডারে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া সম্ভব না। একই টোনে আমরা যখন কথা বলতে দেখছি, এটা কিন্তু একটা সন্দেহের তৈরি করে।'

নাহিদ ইসলাম বলেন, 'আমি মনে করি না যে এটা তারা (বিএনপি) ওই উদ্দেশ্য থেকে বলেছে। কিন্তু তাদের কথার টোনটা কিন্তু আওয়ামী লীগের সেই টোনের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে।'

বিবিসিকে নাহিদ ইসলাম বলেন, বিচার কার্যক্রম, সংস্কার ও নির্বাচন—এসবগুলোই বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার হলেও 'বিএনপি কেন জানি মনে করে, এই সরকারটা হয়েছে কেবল একটি নির্বাচন দেওয়ার জন্য।'

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'অন্তর্বর্তী সরকারকে তো আমরা নিরপেক্ষই মনে করছি। বিএনপি কেন মনে করছে না নিরপেক্ষ আচরণ, বিএনপির এটা স্পষ্ট করা উচিৎ।'

নির্বাচনের সময় এগিয়ে এলে এসব বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বলা সম্ভব বা কোনো অভিযোগ থাকলে নিরপেক্ষতার স্বার্থে কী উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে সেটা তখন সরকার বিবেচনা করতে পারে বলেও জানান তিনি।

একইসঙ্গে 'প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে বা সাংবিধানিক পদে যদি বিএনপিপন্থী লোকজন থাকে, সেখানেও নিরপেক্ষতা লাগবে কি না, তাহলে সেটাও বিবেচনা করতে হবে। কিন্তু এখন তো এটার সময় আসেনি', বলেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ।

বিএনপি 'দ্রুত নির্বাচন' দেওয়ার কথা বলছে। আগামী জুলাই-আগস্টেও নির্বাচন করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এ বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এ বছরের শেষ থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচনের যে সম্ভাব্য সময়সীমা প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন, তাতে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদকাল এবং নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। সে পর্যন্ত ধৈর্য রেখে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে সামনে এগোনো প্রয়োজন।

তিনি বলেন, 'গুম বা জুলাই গণহত্যার বিচার কার্যক্রম এগোনো হচ্ছে এবং সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে। হয়তো সামনের মাসেই আলোচনা, নেগোসিয়েশন, বারগেনিং (দরাদরি) শুরু হবে। বিএনপির বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কারের আলাপগুলোতে মনোযোগী হওয়া উচিৎ, বিচার কার্যক্রমে সহযোগিতা করা উচিৎ। অথচ, সেই সময়ে এসে তারা বলছে, এ সরকারের চেয়ে নিরপেক্ষ একটা সরকার প্রয়োজন।'

Comments

The Daily Star  | English
US wants Bangladesh trade plan,

Bangladesh to push for tariff cuts in USTR talks in Washington today

Bangladesh has been engaged in negotiations to sign a tariff agreement with the US

57m ago