এখনই নির্বাচন করে ফেলতে হবে বলছি না, ন্যূনতম সংস্কারের পর: ফখরুল
ন্যূনতম সংস্কার পরেই নির্বাচন চান বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের 'গ্রন্থ আড্ডা' অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'আমাকে অনেকে ভুল বুঝে যে, আপনি এত নির্বাচন নির্বাচন করেন কেন? হ্যাঁ আমাকে... বিশেষ করে ছাত্ররা তো বলেই। এখানে নির্বাচন বলার কারণটা হচ্ছে একটাই... আমরা বিশ্বাস করি, আমি জানি এই বিষয় ভুল কি না... যেকোনো নির্বাচিত সরকার কিন্তু অনির্বাচিত সরকারের চেয়ে ভালো। আমার এক্সেস থাকে, আমি যেতে পারি, কথা বলতে পারি... এখন আমার সেই জায়গাটা নেই।'
'এখনই নির্বাচন করে ফেলতে হবে আমরা তা তো বলছি না। ন্যূনতম যে সংস্কারটা, সেটা করে নিয়ে নির্বাচনটা করলে সমস্যাগুলো অনেকটা সমাধান হবে।'
তিনি বলেন, 'সংস্কারের প্রস্তাব আসতে শুরু করেছে। আমার বিশ্বাস যে, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা খুব শিগগিরই এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদেরকে ডাকবেন, একটা সমাধানের দিকে আসবেন, আলোচনা হবে ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা একটা জায়গায় পৌঁছাব।'
'নির্বাচনের কথা এজন্য তাড়াতাড়ি বলি যে, নির্বাচনটা হলে দেশের সমস্যাগুলো চলে যাবে। এখানে আপনার একটা নির্বাচিত সরকার সে একটা পিপলস ম্যান্ডেট নিয়ে বসবে... তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) তো এখন বসতে পারেনি, ওদের মধ্যে সেই কনফিডেন্স তো নাই। পিপলের ভাষাটা তো বুঝতে হবে... সেটা আপনার একটা নির্বাচিত সরকার সবচেয়ে ভালো বুঝে বলে আমরা বিশ্বাস করি।'
জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে শহীদ জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী এবং জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'ধৈর্য ধরে যাই... সামনের দিকে যাই। অনেক ত্রুটি আছে আমি বিশ্বাস করি... অনেক ত্রুটিকে তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) তুলে নিয়ে এসেছে, একটা জঞ্জালের মধ্যে এসেছে... একটা ধ্বংসপ্রাপ্ত জঞ্জাল... আমার ধারণা ছিল না যে, এত খারাপ হয়ে গেছে। এই পরিবর্তনের পরে আমরা যখন দুই-একটা জায়গায় খোঁজ-খবর নেই, অফিস-আদালতে খোঁজ-খবর নেই... একটা ভয়াবহ কাণ্ড... দুর্নীতি-চুরি ব্যক্তিগত স্বার্থ ছাড়া আর কোনো চিন্তা নাই সরকারি আমলাদের মতো... বলতে আমি বাধ্য হলাম দুঃখিত।'
'এই অবস্থার পরিবর্তনটার তো একদিনে হবে না, দ্রুত হবে না। ধৈর্য ধরেন, গণতান্ত্রিক একটা স্ট্রাকচার দাঁড় করানো হোক, সেটা হলেই নিশ্চয়ই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারব।'
তিনি বলেন, 'কখনো ধৈর্য হারাবেন না, কখনো আশা হারাবেন না। আমরা কেন জানি না আমাদের প্রত্যাশা অনেক, কিন্তু ধৈর্য একেবারেই কম।'
'এই তো কয়েক মাস হয়েছে এর মধ্যে সব পাগল হয়ে গেছে। দেখেন আমাদের এই সরকার অনেক ভুল-ত্রুটি করছে... ভুল তো করবেই কারণ তারা সরকারে ছিল না, রাজনীতি করেনি... তারা তো রাজনীতি জানে না, বোঝে না... তাই না। তাই তাদেরকে তো সেই সময় দিতে হবে।'
ফখরুল বলেন, 'প্রতিদিন এখন বের হচ্ছে মিছিল-দাবি দাওয়া দিয়ে, এতদিন কোথায় ছিলে বাবা? তখন তো একটা কথা বলার কেউ সাহস সুযোগ তো পাওনি, সুযোগও পাওনাই। আর এখন যেহেতু একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে সবাই নেমে গেছ।'
'এখানে এবিএম ওবায়দুল ইসলাম সাহেব বলছিলেন যে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সেখানে আজকে স্ট্রাইক হচ্ছে, রাস্তা-ঘাট বন্ধ... এটাতে লাভটা কার? এটাতে এদেশের এই সমাজের কোনো লাভ হবে না।'
জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সাবেক ছাত্র নেতা আবদুস সাত্তার পাটোয়ারির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, পলিসি গবেষক মাহাদী আমিন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, শিক্ষানুরাগী আফরোজা খানম রীতা, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, শিক্ষক নেতা জাকির হোসেন, সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট সাইয়েদ আবদুল্লাহ, জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের জহির দিপ্তী, মঞ্জুর এলাহী, কাজী জহিরুল ইসলাম বুলবুল, হাসান আল আরিফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
Comments