চট্টগ্রামে পুলিশের থানা ‘পাহারা’ দিচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা
চট্টগ্রামে নগরী ও জেলা পুলিশের থানা এবং বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটলেও মহানগর পুলিশের পাচলাইশ থানায় ভিন্ন ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার দিবাগত দলে দলে সেখানে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল এবং দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা থানা পাহারা দিতে আসেন।
এর আগে বিকেলে নগরীর ষোল শহর এলাকায় অস্ত্রধারী ছয় পুলিশকে উদ্ধার করে থানায় পৌঁছে দেন তারা।
এদিন ছাত্র-জনতার গণবিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও তার দেশ ছাড়ার খবরের ছড়িয়ে পড়লে চট্টগ্রামের রাস্তায় নেমে আসেন হাজারো মানুষ।
সে সময় পতেঙ্গা, চান্দগাঁও, হালিশহর কোতয়ালী, সদরঘাট, ইপিজেড থানাসহ বিভিন্ন থানা ঘেরাও ও দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে হামলা হয়৷ এছাড়া, মনসুরাবাদ পুলিশ লাইন্স ও জেলা পুলিশের ছোটপুল পুলিশ লাইন্সে হামলা হয়। কোথাও কোথাও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
থানায় বসে পাঁচলাইশ থানা বিএনপির আহ্বায়ক মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'থানা জাতীয় সম্পদ, এটির মালিক জনগণ। আমরা থানায় এসেছি নিজ দায়িত্বে। আমাদের নেতাকর্মীদের বলা হয়েছে, থানায় যেন কোনো হামলা না হয়। তৃতীয় কোনো পক্ষ যেন সুযোগ নিতে না পারে। থানার সম্পদ আমাদের জনগণের টাকায় কেনা।
'আমাদের নেতাকর্মীরা থানার পেছনে পাচলাইশ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে, যাতে এই সম্পদগুলোর কোনো ক্ষতি না হয়। এছাড়া পাড়ায় পাড়ায় বলা হয়েছে কেউ যেন মন্দির বা সনাতন পরিবারের সম্পদের ওপর হামলা চালাতে না পারে,' বলেন তিনি৷
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পাচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিএনপি নেতাকর্মীরা নিজেরাই থানার নিরাপত্তা দিচ্ছেন। থানায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি ও সরকারি সম্পদ রয়েছে। আমরাও তাদের সঙ্গে রয়েছি।'
থানায় বিএনপি নেতাকর্মীরা থাকাকালেই সেখানে আসেন সিএমপির উপকমিশনার (উত্তর) মোখলেছুর রহমান। তিনি নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
নগরজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি, নিরাপদে ফিরতে পারেননি অনেক পুলিশ সদস্য
বিকেল থেকে আনন্দমিছিলের পর যেন ভুতুরে শহরে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম নগরী।
হালিশহর এলাকার ছোটপুল জেলা পুলিশ লাইন্সের সামনে দেখা যায়, রাস্তার ওপর ইটপাটকেল ছড়িয়ে আছে। দুই গাড়ি সেনা সদস্য সেখানে গেটের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে সিএমপির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অনেক থানা থেকে অস্ত্র খোয়া যাওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে৷ তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।'
তিনি আরও বলেন, 'কারফিউতে অনেক পুলিশ সদস্য অস্ত্রসহ মোবাইল ডিউটিতে ছিলেন, তারা অনেকে আটকা পড়ে আছেন। কে কী পরিস্থিতিতে আছেন আমরা কেউ জানি না।'
জেলা পুলিশের আরেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'লোহাগাড়া থানায় গত দুই দিন ধরে হামলার চেষ্টা ছিল। বিকেলে হামলার সময় ভেতরে কেউ আটকা পড়েছেন কি না জানি না।'
Comments