রাজনীতি

প্রতিদিন আমাদের কেউ না কেউ হত্যা-গুমের শিকার হচ্ছে: রিজভী

ট্রেনের টিকিট কাটার প্রক্রিয়াকে দিন দিন জটিলতর করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে এলিট শ্রেণির বাহনে পরিণত হচ্ছে রেলওয়ে।
প্রতিদিন আমাদের কেউ না কেউ হত্যা-গুমের শিকার হচ্ছে: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

প্রতিদিন বিএনপির কেউ না কেউ হত্যা, না হয় গুমের শিকার হচ্ছে, না হয় জেলে বন্দি করা হচ্ছে বা কারও বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি আরও বলেন, 'ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতাদের প্রায় প্রতিদিন আদালতে সারা দিন পার করতে হচ্ছে। ফলে অধিকাংশ মানুষের চাকরি নেই, বন্ধ হয়ে গেছে ব্যবসা।

'দেড় লাখের উপরে মিথ্যা মামলায় প্রায় ৫০ লাখ নেতাকর্মী আসামি। কেউ কারাগারে, কেউ মানবেতর অবস্থায় ঘরছাড়া, বাড়িছাড়া হয়ে জীবনযাপন করছে,' বলেন রিজভী।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ঈদ আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'সমাজে তৈরি হয়েছে ধনী ও গরিবের বিশাল ব্যবধান। অধিকাংশ মানুষের সামান্য প্রয়োজন মেটানোই যেন দুঃস্বপ্ন।'

তিনি বলেন, 'দুঃশাসনের ছোবলে সমাজে নেমে এসেছে নৈরাজ্যের এক ঘন অন্ধকার। দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতির কষাঘাতে নিম্ন আয়ের মানুষের আর্তি শোনা যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের লাগাম না টেনে বাজার সিন্ডিকেটের হোতাসহ সরকারের আস্থাভাজন ক্ষমতাধর ব্যক্তিবর্গ ব্যস্ত রয়েছে লুটপাট, দুর্নীতি ও বিরোধী মত দমনে। ছয় বছরের বেশি সময় ধরে অসুস্থ অবস্থায় বিনা অপরাধে মৌলিক মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করে বন্দি রাখা হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে।'

বান্দরবানের প্রসঙ্গ টেনে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, 'হত্যা, রক্তপাত, ছিনতাই আর ডাকাতি এ দেশে এখন জনজীবনের অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিহত ও আহত হচ্ছে নিরীহ মানুষ। এই মাসেই নরসিংদীতে 'নগদ' এর দুই কর্মীকে গুলি করে ৬০ লাখ টাকা ছিনতাই করা হয়েছে।'

এবারের ঈদযাত্রায় কেবল ঢাকা ছাড়তেই যাত্রীদের ৯৮৪ কোটি টাকা অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হবে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, 'সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলছেন, সড়ক-মহাসড়কে কোনো যানজট বা হয়রানি নেই। মানুষ নির্বিঘ্নে বাড়ি যেতে পারছে। এ যেন  দায়িত্বজ্ঞানহীন তামাশার মন্তব্য! বাস্তবতা হলো—ঈদের প্রাক্কালে বিভিন্ন রুটে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে ঘরমুখো যাত্রীরা এক দুর্বিষহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। বিমানের ভাড়া কল্পনাতীত। ট্রেনে টিকিট পাচ্ছে না মানুষ। ট্রেনের টিকিট কাটার প্রক্রিয়াকে দিন দিন জটিলতর করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে এলিট শ্রেণির বাহনে পরিণত হচ্ছে রেলওয়ে।

'যারা তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক মানুষ, তারা আসলে অনলাইনের এই জটিল ব্যবস্থা বুঝতে সক্ষম নয়। ফলে নিম্ন-মধ্যম আয়ের বিপুল সংখ্যক মানুষ ট্রেনে চড়ারই অধিকার হারিয়ে ফেলছে,' বলেন তিনি।

Comments