ভোট বর্জনকারী দলগুলোকে এক প্ল্যাটফর্মে আনার পরিকল্পনা বিএনপির

দলীয় সূত্র বলছে, তাদের চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন আগামী ১৮ ডিসেম্বর পরের ধাপে প্রবেশ করবে। এতে হরতাল, অবরোধ ছাড়াও সমাবেশ ও বিক্ষোভের মতো কর্মসূচিও থাকবে। এর মাধ্যমে বিএনপি ও এর মিত্ররা ভোটারদের ভোটদানে নিরুৎসাহিত করতে চায়।
বিএনপি

টানা অবরোধ ও হরতালের পর বিএনপি এখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ভোট বর্জনকারী সব রাজনৈতিক দলকে এক প্ল্যাটফর্মে আনার পরিকল্পনা করছে।

দলীয় সূত্র বলছে, তাদের চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন আগামী ১৮ ডিসেম্বর পরের ধাপে প্রবেশ করবে। এতে হরতাল, অবরোধ ছাড়াও সমাবেশ ও বিক্ষোভের মতো কর্মসূচিও থাকবে। এর মাধ্যমে বিএনপি ও এর মিত্ররা ভোটারদের ভোটদানে নিরুৎসাহিত করতে চায়।

এই ১৮ ডিসেম্বরেই ৭ জানুয়ারির নির্বাচন সামনে রেখে ভোটে থাকা প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের কথা নির্বাচন কমিশনের।

আন্দোলনের পরবর্তী ধাপ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা বিভিন্ন দলের সঙ্গে একযোগে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। যেসব দল এখনো এই আন্দোলনে আসেনি তাদের সঙ্গে আমরা আলোচনার জন্য তৈরি।'

বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলো এরই মধ্যে চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করার জন্য নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে শুরু করেছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাচন থেকে দূরে থাকা দলগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সাতটি রাজনৈতিক দলের প্লাটফর্ম গণতন্ত্র মঞ্চের দুই নেতা এর বিরোধিতা করছেন। কারণ মতাদর্শগত পার্থক্যের কারণে এই প্লাটফর্মে জামায়াতে ইসলামীর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে তাদের আপত্তি আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, নির্বাচন বর্জনকারী সব রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে 'সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ' গঠনের পরিকল্পনা করছেন তারা।

এ ব্যাপারে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী জানান, আন্দোলনকে আরও বেগবান করার উপায় নিয়ে তারা আলোচনা করছেন। গতকাল শুক্রবার ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'আমরা দেশের বৃহত্তর স্বার্থে একযোগে সব রাজনৈতিক দলকে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।'

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর ভাষ্য, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে সব বিরোধী রাজনৈতিক দল রাজপথে নেমেছে। গতকাল তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, 'আমাদের দাবির ব্যাপারে আমরা সবাই একমত। বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।'

দলীয় সূত্র বলছে, ১৮ ডিসেম্বর ভোটে থাকা প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের দিন হরতাল ডাকতে পারে বিএনপি। পরে ১৯ ডিসেম্বর সকাল ৬টা থেকে দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ঘোষণা আসতে পারে।

বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনের সমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর বিএনপি ও এর সমমনা দলগুলো কয়েক দফা হরতাল ও অবরোধ করেছে। সূত্রমতে, বিকল্প খুঁজে না পাওয়ায় ভোটের দিন পর্যন্ত এ ধরনের কর্মসূচিতেই থাকার কথা তাদের।

এদিকে বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার দুপুর ১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।

এক এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন রিজভী। তবে এই কর্মসূচি পালনে তারা পুলিশের অনুমতি নিয়েছেন কিনা, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে মিছিলটি মগবাজারে গিয়ে শেষ হবে।

সূত্র জানায়, বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মিছিলে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর পাশাপাশি ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো থেকেও দলীয় নেতাকর্মীরা মিছিলে যোগ দেবেন।

Comments