২ সপ্তাহে বেশির ভাগ পণ্যের দাম কমেছে: তথ্যমন্ত্রী

‘আমি দেখতে পাচ্ছি যে, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রার্থীদের হলফনামা নিয়ে ব্যাপক প্রচার হচ্ছে। এটি প্রতিবারই হয় এবং মানুষও সেগুলো উৎসাহ নিয়ে পড়ছে। আমিও পড়ছি। আমিও যে পড়ছি না তা নয়—আমিও পড়ছি এবং বিভিন্ন জন সম্পর্কে জানারও সুযোগ হচ্ছে এতে করে।’
২ সপ্তাহে বেশির ভাগ পণ্যের দাম কমেছে: তথ্যমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

গত দুই সপ্তাহে বেশির ভাগ পণ্যের দাম কমেছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পেঁয়াজের দাম হঠাৎ প্রতি কেজিতে ৫০-১০০ টাকা বেড়ে যাওয়া কোনোভাবেই সমীচীন নয়।

আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

সিন্ডিকেট রুখে দিতে সরকার বারবারই ব্যর্থ হচ্ছে বলা যায়। প্রতিটি পণ্যের ক্ষেত্রে বাজারে সিন্ডিকেট তৈরি হচ্ছে। সিন্ডিকেট রুখে দিতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল—ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ সরাসরি পণ্য কিনে বিক্রি করবে। সেই উদ্যোগ চলমান নেই। এ ক্ষেত্রে ব্যর্থতাটা কোথায় জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'গত দুই সপ্তাহে বেশির ভাগ দ্রব্যের মূল্য কমেছে। গরুর মাংস আমার এলাকায় ৫৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে, মাইকিং করে। যেটি কয়দিন আগেও ৭৫০-৮০০ টাকা ছিল। শাক-সবজির দাম কমেছে এবং অন্যান্য পণ্যের দামও কমেছে।

'হ্যাঁ, পেঁয়াজের দামটা হঠাৎ করে বেড়েছে। পেঁয়াজের দাম যেভাবে লাফিয়ে বেড়েছে, আমি আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত; সেটি হওয়ার কোনো কারণ ছিল না। ভারত মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে বেড়ে যাওয়া, এটা হচ্ছে আমাদের যারা ব্যবসায়ী; পাইকারি ব্যবসায়ী বা খুচরা ব্যবসায়ী—সব পর্যায়ের ব্যবসায়ীর অসৎ মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া অন্য কোনো কিছু নয়,' বলেন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'হঠাৎ প্রতি কেজিতে ৫০-১০০ টাকা বেড়ে যাওয়া, এটি কোনোভাবেই সমীচীন নয়। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর এ নিয়ে অভিযান শুরু করেছে। ১৩৩ জন ব্যবসায়ীকে জরিমানা করেছে। এতে করে বাজারে কিছুটা শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে কিন্তু পুরোপুরি আসেনি।'

পেঁয়াজের দাম শিগগির কমে যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, 'কারণ এক সপ্তাহের মধ্যে দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসা শুরু করবে।'

হাছান মাহমুদ বলেন, 'আমরা যারা ভোক্তা, আমাদের একটি ট্রেন্ড আছে, কোনো একটি পণ্যের সংকট হচ্ছে গুজব রটালেও আমরা গিয়ে ওইটা এক কেজি কেনার জায়গায় পাঁচ কেজি কেনা শুরু করি। এতে করে ব্যবসায়ীরা আরও সুযোগ পায়। এ ক্ষেত্রেও আমাদের একটু সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি।

'পেঁয়াজের দাম সহসা কমে যাবে। ভারত থেকেও পেঁয়াজ আসবে। তবে বেশির ভাগ পণ্যের দাম গত দুই সপ্তাহে কমেছে,' বলেন তিনি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'এখনো যারা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে ক্রমাগতভাবে অবরোধ ডাকছে, তারাও বুঝতে পেরেছে যে, নির্বাচন একটি সুন্দর-স্বচ্ছ এবং জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি ভালো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেই কারণেই বিদেশি পর্যবেক্ষকরা আসার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।'

গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'আমি মনে করি, সাংবাদিকদের বড় ভূমিকা রয়েছে। গণমাধ্যমের বড় ভূমিকা রয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য সংবাদপত্রে, টেলিভিশনে, অনলাইনে নির্বাচনী খবরা-খবর প্রচার; নির্বাচনী উৎসব যে গ্রামে-গঞ্জে শুরু হয়ে গেছে সেটি প্রচার করলে এ উৎসবের মাত্রা আরও বাড়বে। মানুষের অংশগ্রহণও নির্বাচনে বাড়বে।'

তিনি বলেন, 'আমি দেখতে পাচ্ছি যে, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রার্থীদের হলফনামা নিয়ে ব্যাপক প্রচার হচ্ছে। এটি প্রতিবারই হয় এবং মানুষও সেগুলো উৎসাহ নিয়ে পড়ছে। আমিও পড়ছি। আমিও যে পড়ছি না তা নয়—আমিও পড়ছি এবং বিভিন্ন জন সম্পর্কে জানারও সুযোগ হচ্ছে এতে করে। এগুলো আমাদের দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ারই অংশ।

'আমাদের নির্বাচনী প্রক্রিয়া যে স্বচ্ছ সেটিরও বহিঃপ্রকাশ কিন্তু এটি। সব দেশে কিন্তু এভাবে প্রকাশ করা হয় না। ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পরে এবং প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেও তার ট্যাক্স ফাইল তিনি প্রকাশ্যে আনেননি। আমাদের দেশে লেটেস্ট ট্যাক্স ফাইল সাবমিট করা বাধ্যতামূলক। এ রকম অনেকগুলো বিষয় আছে, যেগুলো অনেক উন্নত দেশের চেয়ে আমাদের দেশে; নির্বাচনী আইন এবং পাশাপাশি নির্বাচনী প্রক্রিয়া অনেক বেশি স্বচ্ছ,' যোগ করেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'শরিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আমরা আশা করছি, সহসা তাদের সঙ্গে একটি সমঝোতা হবে। ১৪ দলীয় জোটের মধ্যে সমঝোতা হবে এবং জাতীয় পার্টিসহ অন্যদের সঙ্গে যে স্ট্র্যাটেজিক্যাল অ্যালায়েন্সের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো নিয়েও আমরা একটি ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারব।'

তিনি বলেন, 'স্বতন্ত্র প্রার্থী সব সময় নির্বাচনে থাকে। আমাদের দল থেকে সব সময় অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছে, দেশেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়। অনেকের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল। আপিলের পর দেখা যাচ্ছে, প্রথম দিনে ৫০ শতাংশ প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছে। আমি মনে করি, তাদের অংশগ্রহণ নির্বাচনকে উৎসবমুখর করার ক্ষেত্রে সহায়ক হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago