লোভে পড়ে যারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, তারা রাজনীতির আবর্জনা: রিজভী

রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যারা লোভে পড়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, তারা রাজনীতির আবর্জনায় পরিণত হবে।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে রিজভী বলেন, 'বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক শক্তি এবং দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের প্রত্যাশিত অবাধ-নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবর্তে শেখ হাসিনা সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো ভোট ডাকাতির পথ বেছে নিয়েছে।' 

তিনি বলেন, 'ওবায়দুল কাদের আজ বলেছেন যে তাদের নির্বাচনের ট্রেন চলতে শুরু করেছে। কিন্তু তাদের ট্রেনে তো শুধু আওয়ামী লীগ ও গণবিচ্ছিন্ন লোকজন। নগদ টাকায় কিছু উচ্ছিষ্টকে কিনে ছলে-বলে এবং হুমকি দিয়ে ট্রেনে তুলেছে, যারা এলাকায় গেলে ভোটবঞ্চিতদের গণধোলাইয়ের শিকার হতে পারে।'

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা আরও বলেন, 'ইতোমধ্যে জাতিসংঘ, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত করেছে যে আরেকটি পাতানো নির্বাচন করতে যাচ্ছে শেখ হাসিনা সরকার। এ কারণে জাতিসংঘ জানিয়েছে যে তারা কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। অন্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। ফ্যাসিবাদের সহযোগী নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল শেখ হাসিনার পিক অ্যান্ড চুজ ফলাফল ঘোষণা করবে ভোটের রাতে।'

তিনি বলেন, 'ওবায়দুল কাদের সাহেবরা যেসব কিংস পার্টি, ডামি পার্টি খুলেছেন এবং বিভিন্ন দল থেকে অচ্ছুৎ লোকজনকে ভাড়া করে নির্বাচনের ট্রেনে চড়েছেন, সেই ট্রেনকে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেবে না মুক্তিকামী জনগণ।' 

রিজভী বলেন, 'গোটা বিশ্ব যখন বাংলাদেশের ভোটাধিকার বঞ্চিত গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষে সরব, তখন গত ১৫ বছর ধরে বিনা ভোটের শেখ হাসিনা সরকারের পক্ষে বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছে রাশিয়া, চীন ও ভারত। রাশিয়া-চীনে গণতন্ত্র নেই। প্রতিবেশী ভারতের গণতন্ত্রের ঐতিহ্য আছে। সেই ভারত সরকার কীভাবে একটি অগণতান্ত্রিক-স্বৈরাচারের পক্ষে অবস্থান নেয়? তারা মুখে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে আছে বললেও, অবস্থান নিয়েছে ১৮ কোটি জনগণের বিপক্ষে। এই ভারতের সমর্থন-শক্তিতে আওয়ামী লীগ দেশটাকে গিলে ফেলছে। লক্ষ মানুষ কারাবন্দী, লক্ষ মানুষ ঘরে থাকতে পারে না। এটা একটা অদ্ভুত ব্যাপার।'

'গণতান্ত্রিক দেশ ভারত সমর্থন করছে বাংলাদেশের বিনা ভোটের সরকারকে। তার মানে তাদের কাছে বাংলাদেশের ভৌগোলিক স্বাধীনতা ও জনগণ কোনো ম্যাটার করে না। এর মানে বুঝতে হবে তারা আওয়ামী লীগের মাধ্যমে বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণ করছে। এটা রাশিয়ার জন্য কোনো বিষয় না। তারা একদলের শাসনে চলে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু ভারত কী করে গনবিচ্ছিন্ন সরকারকে সমর্থন করে। এক দশক ধরে বাংলাদেশে ভারতের ফেভারিট হলো আওয়ামী লীগ। ভারতের দৃঢ় সমর্থনে আওয়ামী লীগ মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিচ্ছে,' যোগ করেন তিনি।

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, 'এ দেশের মানুষ ন্যায্য পানির হিস্যা নিয়ে দাবি তোলে, সীমান্ত হত্যা নিয়ে কথা বলে, একচেটিয়া বাণিজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। এই প্রতিবাদী মানুষের প্রতি বৈরী ভারত সরকার। আর ক্ষমতায় থাকার জন্য এই সবকিছুকে মেনে নেওয়ার কারণে তারা আওয়ামী লীগের প্রতি খুশি।' 

তিনি বলেন, 'ভারত সরকার বাংলাদেশের জনগণকে তার প্রতিপক্ষ করেছে। অথচ বাংলাদেশের জনগণ ভারতকে বন্ধু বলেই মনে করে। ভারতের শেখ হাসিনা সরকারকে সমর্থন করা গভীর রহস্যজনক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।' 

ভারতের উদ্দেশে রিজভী বলেন, 'বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আপনারা বাংলাদেশের বন্ধু হতে পারবেন না।' 

রিজভী আরও বলেন, 'যারা লোভে পড়ে এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, তারা রাজনীতির আবর্জনায় পরিণত হবে। সাধারণ মানুষ ইতোমধ্যে তাদের বেঈমান হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। দেশের বৃহত্তম দল বিএনপিকে ছাড়া কোনো নির্বাচন দেশে ও বিদেশে অংশগ্রহণমূলক বলে বিবেচিত হবে না।'   

Comments

The Daily Star  | English

123 ‘pushed in’ from India

Border Guard Bangladesh (BGB) yesterday detained at least 123 individuals, including Rohingyas and Bangla-speaking individuals, after India pushed them into Bangladesh through Kurigram and Khagrachhari border points.

13m ago