ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের
চিকিৎসক ও পেশাজীবী নেতা ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চুকে গ্রেপ্তারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।
আজ শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে ডা. বাচ্চুর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে পরিষদ।
পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও সদস্যসচিব সাংবাদিক কাদের গনি চৌধুরী বিবৃতিতে বলেন, 'ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর মতো একজন পেশাদার চিকিৎসককে গ্রেপ্তার দেশের জন্য সুনাম ও কল্যাণ বয়ে আনবে না।'
বিবৃতিতে ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, 'রফিকুল ইসলাম বাচ্চুকে আটকের পর কেন চোর, ডাকাত, খুনি, সন্ত্রাসীদের মতো ফটোসেশন করে তা জনসমক্ষে প্রচার করতে হবে র্যাবকে?'
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি তারা সব নাগরিকের জান, মাল ও সম্মানসহ সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
'বর্তমান সরকারের আমলে পেশাজীবীরা ন্যূনতম সম্মান ও নিরাপত্তা পাচ্ছেন না' উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, 'ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চুই নয়, ইতোমধ্যে অন্তত আরও ৩০ জন পেশাজীবীকে বিনা কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের (জেইউজি) যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, দৈনিক ইনকিলাবের সাংবাদিক শামসুল হুদা লিটন, চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মইনুল হোসেন সাদিক ও অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, গাইনোকলজিস্ট ডা. ফাতেমা সিদ্দিকী, ডা. আতিকুল ইসলাম, দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জাহিদুল কবির জাহিদ, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অধ্যক্ষ জাকির হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ হোসাইন, সুপ্রিম কোর্ট বারের অ্যাডভোকেট মনজুরুল আলম সুজন, অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হাসান মিলন, অ্যাডভোকেট জুয়েল মুন্সি সুমন, চাঁদপুর থেকে অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন খান, রাজবাড়ী থেকে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ লিয়াকত আলী বাবু, গোপালগঞ্জ থেকে তৌহিদুল ইসলাম, বরিশাল থেকে অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিন, অ্যাডভোকেট আলী হায়দার বাবুল ও অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রনি, ফরিদপুর থেকে অ্যাডভোকেট আলী আশরাফ নান্নু, অ্যাডভোকেট আইয়ুব খান ও অ্যাডভোকেট খসরুল ইসলাম, বরগুনা থেকে অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসি মতিন, অ্যাডভোকেট মো. রুহুল আমিন, অ্যাডভোকেট মো. শহিদুল ইসলাম, হবিগঞ্জ থেকে অ্যাডভোকেট ফাতিমা ইয়াসমিন, কৃষিবিদ সানোয়ার হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকসহ অনেককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বিবৃতিতে পেশাজীবীরা বলেন, এভাবে পেশাজীবীদের বিনা অভিযোগে এবং বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দেওয়ার মাধ্যমে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। পেশাজীবীরা এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। বিনা বিচারে মানুষ হত্যা, গুম, খুন, নির্যাতন, নিপীড়ন ও দুঃশাসনের কারণে দিনদিন এদেশ মানুষ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে।
'সরকার দেশ পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে' উল্লেখ করে তারা বলেন, 'এভাবে পেশাজীবীদের হেনস্থা করা অব্যাহত থাকলে দেশের কৃতি ও মেধাবী সন্তানরা দেশে থাকতে চাইবে না। তাই আমরা পেশাজীবীবীসহ ভিন্নমতের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ, দেশে গণতন্ত্র, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা, ভোটাধিকার, মানবাধিকার, বিচারালয়ের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।'
তারা আরও বলেন, 'আমরা মনে করি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসতে পারে। তাই আমরা একপক্ষীয় নির্বাচনী তফসিল বাতিল করে নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজনের আহবান জানাচ্ছি।'
Comments