নির্বাচন একতরফা করতে সরকার আবার গুম শুরু করেছে: রিজভী

নির্বাচন একতরফা করতে সরকার আবার গুম শুরু করেছে: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী | ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন একতরফা করতে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের আবারও গুম করা হচ্ছে বলে ‍অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

আজ মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

অবরোধ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, 'গণদাবির ওপর ভিত্তি করে এই অবরোধ কর্মসূচি। এটা নিছক বিএনপির কোনো দলীয় কর্মসূচি নয়। এটা সামগ্রিকভাবে গোটা জনগণ আজকে যেভাবে তার মালিকানা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, জনগণ যে গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘদিন যত রক্ত ঝরিয়েছে, সেই রক্তের ঋণ পরিশোধ করার জন্য এবং মালিকানা পুনপ্রতিষ্ঠার জন্য আজকে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নিয়জিত রয়েছে। নানা ধরনের রাষ্ট্রীয় উৎপীড়নের মুখেও তারা রয়েছেন।

'আমি আহ্বান জানাব, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তির যত নেতাকর্মীরা রয়েছেন এবং সমমনা দলগুলো যারা আন্দোলনসংগ্রামে অংশগ্রহণ করছে, প্রত্যেকের কাছে আমার আকূল আহ্বান; আপনারা শত বাধা অতিক্রম করে অতীতে যেমন এতদিন কর্মসূচি পালন করে এসেছেন, আবারও আপনারা এই কর্মসূচিও পালন করবেন। পথে পথে বাধা দেবেন, সড়ক-মহাসড়কে অবরোধ তৈরি করবেন। তবে মনে রাখতে হবে, আমাদের বিরুদ্ধে নাশকতার নানা মহাপরিকল্পনা তারা করছে। আমরা রাস্তায় উপস্থিত হবো, তাদের যে অশুভ নীল নকশা—আমরা সেটাকেই বাধা দেবো,' বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, 'জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা রাস্তায় অবস্থান করব এবং শান্তিপূর্ণভাবে আমরা আমাদের অবরোধ কর্মসূচি করব। কারণ জনগণ আমাদের পক্ষে। এ দেশের কোটি কোটি মানুষ আমাদের পক্ষে। এ দেশে যারা গণতন্ত্র চায়, যারা বাকস্বাধীনতা চায়, যারা নিজের ভোটটা পছন্দের ব্যক্তিকে দিতে চায়, তারা এই আন্দোলন ও অবরোধ কর্মসূচির পক্ষে রয়েছে। এটা ছাড়া কেউ বাংলাদেশে স্বস্তিতে বাস করতে পারবে না। হয় তাদের দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। না হলে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে থাকতে হবে।'

বিএনপির এই নেতা বলেন, 'গত ৫ নভেম্বর কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ চৌধুরীকে তার বাড়িতে পুলিশ-র‌্যাব ধরতে যায় এবং সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর করে ও গোলাগুলি করে। স্থানীয় মানুষ বাধা দিলে পুলিশের গুলিতে অনেকে আহত হয়। তাদের মধ্যে ওয়ার্ড বিএনপি নেতা জাগির হোসেন গুরুতর আহত হয়ে কক্সবাজার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। দুই-তিন দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে আজকে মৃত্যু বরণ করেন।'

তিনি বলেন, 'হত্যালীলা চলছে আজকে কয়েক দিন ধরে, ক্রমাগতভাবে। সরকারের সাজানো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, তারা কোনো কিছুই মানছে না। এখানে বিরোধী দলকে রাখা যাবে না। এদের কারো অস্তিত্ব থাকবে না—সেই শপথ নিয়ে নেমেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। অথচ তাদের হাতে যে বন্দুক-টিয়ার গ্যাস-অস্ত্র সেটা কিন্তু কেনা হয়েছে জনগণের ট্যাক্সের টাকায়।'

রিজভী বলেন, 'তিতুমীর কলেজের ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রফিক ও সাইফুল ইসলামকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত তাদের হদিস দিচ্ছে না। এই যে তুলে নিয়ে যাওয়া, এই যে অদৃশ্য করা, গুম নতুন করে আবার শুরু করেছে। কারণ নির্বাচন একতরফা করতে হবে। এই নির্বাচন ভোটারবিহীন করতে হবে। এই নির্বাচনে জনগণকে ভয় পাইয়ে দিতে হবে। এই ভয় পাইয়ে দেওয়ার অংশ হিসেবে আবার নতুন করে অদৃশ্য করা আর গুম করার কর্মসূচি তারা শুরু করেছে।

'টার্গেটই করা হয়েছে তরুণদের। যে তরুণরা আন্দোলন-সংগ্রামের ভ্যানগার্ড। যারা অগ্রশ্রেণির, তাদেরকেই টার্গেট করে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে। আমি অবিলম্বে মাহমুদুল হাসান রফিক ও সাইফুল ইসলামকে তাদের পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh transition from autocracy to democracy

Transitioning from autocracy to democracy: The four challenges for Bangladesh

The challenges are not exclusively of the interim government's but of the entire political class.

11h ago