আন্দোলনের নামে অগ্নি সন্ত্রাস-ধ্বংসাত্মক কাজ করলে ছেড়ে দেবো না: প্রধানমন্ত্রী
সরকার পতনের একদফা দাবিতে চলমান বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্দোলন করুক, আমাদের এ ব্যাপারে কোনো কথা নাই কিন্তু তারা যদি আবার ও রকম অগ্নি সন্ত্রাস, কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করে আমরা কিন্তু ছেড়ে দেবো না।
আজ শনিবার দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত আইনজীবী মহাসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ আয়োজিত মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী সুপ্রিমকোর্ট এলাকায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'দেশের প্রতিটি মানুষ; একেবারে নিম্ন স্তর থেকে উচ্চ স্তর সকলেই যেন ন্যায় বিচার পায়, উন্নত জীবন পায়, দারিদ্র্যমুক্ত হয়—সেটাই আমাদের প্রচেষ্টা। আমাদের দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফলে বিএনপি সরকারের আমলে যেখানে ৪১ শতাংশ ছিল দারিদ্র্যের হার, আমরা তা কমিয়ে ১৮ দশমিক সাত ভাগে নামিয়ে এনেছি। হতদরিদ্র যেখানে ২৫ দশমিক পাঁচ ভাগ ছিল, সেটা কমিয়ে আমরা মাত্র পাঁচ ভাগে নামিয়ে এনেছি। ইনশাল্লাহ, কেউ এ দেশে হতদরিদ্র, ভূমিহীন, গৃহহীন, ঠিকানাবিহীন থাকবে না। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।'
তিনি বলেন, 'আমরা মুজিব শতবর্ষ উদযাপন করেছি সেই লক্ষ্য নিয়েই যে, এ দেশের প্রতিটি মানুষ অন্ততপক্ষে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য খাদ্য উৎপাদন আমরা বাড়িয়েছি। গবেষণা করেছি। আজকে চাল উৎপাদন বা দানাদার শস্য প্রায় ১৮ লাখ মেট্রিক টনের মতো এখানো আমাদের মজুত।
'আপনারা বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন। এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদী না থাকে। কারণ আপনারা জানেন, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এবং স্যাংশন-কাউন্টার স্যাংশন, সেই সঙ্গে এখন আবার নতুন প্যালেস্টাইনের ওপর যে হামলা হচ্ছে—একটা হাসপাতালে হামলা করে শিশু, নারীদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। এর ফলে আবারও বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে। জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে। আজকে উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে। করোনাভাইরাসের সময় আমরা বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিয়েছি। অনেক উন্নত দেশ, ধনী দেশও দেয়নি কিন্তু বাংলাদেশে আমরা দিয়েছি। আমাদের মানুষকে সুরক্ষিত করার জন্য আমরা আমাদের রিজার্ভের টাকা ব্যয় করে এই ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কাজেই আমরা মানুষের কল্যাণেই কাজ করি,' বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, 'এই যে বিশ্বব্যাপী খাদ্যমন্দা, তখন আমাদের করণীয় কী? কেউ যেন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে খেলতে না পারে, যেটা আগে করেছিল—আর যেন করতে না পারে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমার একটা অনুরোধ আপনাদের কাছে; কোথাও যেন এক ইঞ্চি জমি অনাবাদী না থাকে। যে যা পারেন তাই উৎপাদন করেন। মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা যদি নিশ্চিত থাকে; আমাদের দেশে যেমন আমরা নিশ্চিত রেখেছি, উদ্বৃত্তটা আমরা কিন্তু বাইরে পাঠাচ্ছি।'
শেখ হাসিনা বলেন, 'কিছু কিছু সময় আন্দোলনের নামে বিএনপি মাঠে নামতে চায়, জামায়াত—আরও অনেকেই। তারা আন্দোলন করুক, আমাদের এ ব্যাপারে কোনো কথা নাই কিন্তু তারা যদি আবার ও রকম অগ্নি সন্ত্রাস, কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করে, যদি তারা এ ধরনের দুর্বৃত্তপনা করে আমরা কিন্তু ছেড়ে দেবো না। এটাও বাস্তবতা। কারণ এই বাংলাদেশ, পঁচাত্তর সাল থেকে ১৯৯৬ এরপর ২০০১ থেকে ২০০৮; এই ২৯টি বছর এ দেশের মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবতর্ন হয়নি। যারা ক্ষমতায় ছিল নিজের ভাগ্য গড়তে ব্যস্ত ছিল, দেশের মানুষের জন্য না। একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন সরকারে এসেছে তখনই মানুষের ভাগ্য ফিরতে শুরু করেছে।'
Comments