আ. লীগ সরকার রাষ্ট্রকে যন্ত্রণা-নির্যাতনের কারখানায় পরিণত করেছে: মির্জা ফখরুল

জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ডিইউজের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রকে যন্ত্রণা-নির্যাতনের কারখানায় পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমরা এক ঘোর অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। রাষ্ট্র এখন আর রাষ্ট্র নেই। রাষ্ট্র এখন পুরোপুরিভাবে একটা যন্ত্রণা-অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়নের কারখানা হয়ে গেছে।'

তিনি বলেন, 'একটা রাষ্ট্র তখনই সফল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হতে পারে যখন তার তিনটা স্তম্ভই কাজ করে। যেখানে একটা স্তম্ভ পুরোটাই তারা দখল করে নিয়েছে। আমি সোজা কথায় বলি, বাংলাদেশের আত্মাটাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। আমরা যে আত্মাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছি, কাজ করেছি, লড়াই করেছি, সংগ্রাম করেছি, সেই আত্মা বিনষ্ট করে দিয়েছে।'

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'অনেকে বলছে যে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নাই। আমি তো বলি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আছে কি না, আমি তা জানি না। তবে যারা বিচারক এই সমাজের স্বাধীনতাটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে।'

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, 'এখানে আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা আছেন, তারা জানেন যে বড় বড় পত্রিকার এডিটর, বড় বড় চ্যানেলের এডিটর আজ উর্দির ভূমিকা পালন করছেন। আমাদের চেয়ে তারাও কম যান না।'

'আমি লজ্জা পাই যখন টেলিভিশনে দেখি কয়েকজন প্রথিতযশা সম্পাদক এবং বিভিন্ন সাংবাদিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা এই ভয়াবহ অত্যাচার-নির্যাতন, গণতন্ত্র হত্যার কর্মযজ্ঞকে সমর্থন করছে,' যোগ করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'আমরা রাস্তার কর্মী, মাঠের কর্মী, মাঠে লড়াই করি, জেলে যাই, অনেকের ফাঁসিও হয়েছে। গত কয়েকদিন আগে আমাদের ঈশ্বরদীর প্রায় ৫০ জন নেতাকর্মীকে...৩০ বছর আগে শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে ঢিল মেরেছিল...৩০ বছর পরে বিচারকরা শাস্তি দিয়েছেন। ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। আমাদের হাবিবুল ইসলাম হাবিব তাকে ৭০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে…এটা ইতিহাস।'

'আমাদের নেতা ইলিয়াস আলীকে গুম করে দিয়েছে। এ রকম ৬৪৮ জনকে গুম করেছে। সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করেছে, এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং করেছে, সম্পাদক শফিক রেহমান, মাহমুদুর রহমানকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। দেশে আছেন এমন অনেক সম্পাদক-সাংবাদিকদের নিপীড়িত হতে হয়েছে, কারাগারে যেতে হয়েছে,' যোগ করেন তিনি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'কত বলব, কার কথা বলব? অত্যাচার-নির্যাতন এমন একটা পর্যায় চলে গেছে এখান থেকে মুক্তি পেতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামতে হবে।'

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে রুহুল আমিন গাজী, এম আবদুল্লাহ, নুরুল আমিন রোকন, এম এ আজিজ, আবদুল হাই শিকদার, এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, কামাল উদ্দিন সবুজ, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কাদের গনি চৌধুরী, বাকের হোসাইন, ইলিয়াস খান, মোরসালিন নোমানী, রাশেদুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

Comments

The Daily Star  | English
narcotics cases pending despite deadline

4.8 lakh narcotics cases pending despite deadline

Judge shortage, lack of witnesses, inadequate court infrastructure blamed for delays

7h ago