'যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি আ. লীগের জন্য খুবই লজ্জাজনক'
বিএনপি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার।
তিনি বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে যারা নির্বাচনে বাধা দেবে তাদের ভিসা দেওয়া হবে না। আমরা এই জনসভা থেকে বলতে চাই, যারা বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন, গণতন্ত্র বা জনগণের ভোটাধিকারে বাধা দিচ্ছে তারাই বর্তমান সরকার।'
শনিবার রাজধানীর এক সমাবেশে বক্তব্যে বিএনপি নেতা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে বর্তমান সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি আওয়ামী লীগের জন্য 'খুবই লজ্জাজনক'।
তিনি বলেন, সরকার তাদের অধীনে আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে বিদেশিদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, কিন্তু দেশবাসীর পাশাপাশি বিদেশিরাও দেখেছে এর অধীনে অনুষ্ঠিত আগের দুটি নির্বাচনের কোনো মূল্য ছিল না।
'তাদের (সরকার) পক্ষে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। তাই যুক্তরাষ্ট্রসহ গণতান্ত্রিক দেশগুলো বলছে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে। তারা বুঝতে পেরেছেন শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অতীতে হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না।'
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন হলে বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দল অংশ নেবে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাইছে এবং আমাদের ছাড়া নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে না।
দলটির দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ তাদের ১০ দফা দাবি আদায়, 'মিথ্যা মামলায়' দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানির প্রতিবাদে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি ইউনিট নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করে।
বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে 'গায়েবি' মামলা দায়ের, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিপর্যয় এবং আওয়ামী লীগ সরকারের 'সর্বব্যাপী' দুর্নীতির বিরুদ্ধে দলের প্রতিবাদে আরও ১৫টি জেলায় সমাবেশ করেছে বিএনপি।
মোশাররফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবার ক্ষমতায় বসার জন্য বিভিন্ন দেশে গিয়েছিলেন, কিন্তু সব জায়গায় তাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, 'এটি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার নয়। শুধু আমরাই নয়, সারা বিশ্ব বলছে বর্তমান সরকারের অধীনে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনগুলো কোনো নির্বাচন ছিল না। ২০১৪ সালে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করে এবং জোর করে সরকার গঠন করেছিল, যেখানে ২০১৮ সালে দিনের ভোট হয়েছিল রাতে।'
বিএনপি নেতা বলেন, আগামী নির্বাচনে তারা যে পরাজয়ের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন তা বুঝতে পেরে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা হতাশ। 'তাই তারা বিভিন্ন কৌশল এবং নীল নকশা করার চেষ্টা করছে।'
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের একটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তাদের পকেট ভারি করতে অস্বাভাবিকভাবে সব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়িয়েছে। 'এই সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। দরিদ্ররা এখন ক্ষুধার্ত বা অর্ধাহারে আছে আর মধ্যবিত্তরা দরিদ্র হচ্ছে।'
মোশাররফ সর্বস্তরের জনগণকে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান।
বর্তমান 'অবৈধ' সরকারের বেআইনি নির্দেশ না মানতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, 'আপনারা যারা প্রশাসনে আছেন এবং সশস্ত্র বাহিনী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, আপনারা জনগণের সেবক। আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারী। আমি আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, জনগণের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেবেন না, মিথ্যা মামলা করবেন না এবং সরকারের নির্দেশে মানুষকে গ্রেপ্তার করবেন না।'
Comments