‘এয়ারবাস কমিশন দেয়, এ কারণে বোয়িং বাদ দিয়ে এয়ারবাস কেনা হচ্ছে’
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের 'এয়ারবাস' কেনার সিদ্ধান্তের মূল কারণ 'কমিশন' বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ সোমবার বনানীর গোল্ডেন টিউলিপ হোটেলের সভাকক্ষে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (অ্যাব) উদ্যোগে 'দেশের জ্বালানি খাতে অমানিশা: লুটপাট আর অরাজকতার চালচিত্র' শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'বাংলাদেশ বিমান এমনিতে চলতে পারে না, পয়সা নেই, লস হতে হতে এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে, বিমান চালানোর কোনো উপায় নেই। এখন নতুন এয়ারক্রাফট কিনবে এয়ারবাস।'
'আমি বিমান মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছি। আমি জানি, এয়ারবাস কেন কিনতে চায়। কারণ বোয়িং ফিটব্যাক দেয় না, কমিশন দেয় না। এয়ারবাস কমিশন দেয়। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, এয়ারবাস কমিশন দেয় কিন্তু বোয়িং কোন কমিশন দেয় না। এ কারণে বোয়িং বাদ দিয়ে এয়ারবাস কেনা হচ্ছে', বলেন তিনি।
সম্প্রতি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদ সভায় বিমান বহরের সঙ্গে নতুন ১০টি অত্যাধুনিক এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর সভাপতিত্বে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। পরে প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
খালেদা জিয়া সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মির্জা ফখরুল ১০টি এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, 'কাল দেখলাম- বিমানের এমডি বলছেন, দেশের স্বার্থ চিন্তা করে কেনা হচ্ছে।'
'দেশের স্বার্থ চিন্তা করলে যেগুলো আছে সেগুলো এফিসিয়েন্টলি চালানোর চেষ্টা করেন। তা তো করছেন না। নতুন ড্রিমলাইনার নিয়ে এসেছেন, এমন হেন্ডলিং করেন যে, অন্য প্লেন সেটিকে ধাক্কা মেরে এক বছর পড়ে থাকে, দুই বছর পড়ে থাকে। এটাই বাস্তবতা', যোগ করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'তাদের (সরকার) একটাই লক্ষ্য কীভাবে চুরি করবে, কীভাবে দুর্নীতি করবে। তারা গোটা বাংলাদেশকে লুট করে শেষ করে দিয়েছে। আরও ৫ বছর লুট করতে চায়। সেজন্য এখন তারা ভোট চাইতে শুরু করে দিয়েছে।'
'আওয়ামী লীগের যে বডি কেমিস্ট্রি সেই কেমিস্ট্রি থেকে দুটো জিনিস বেরিয়ে আসে। আওয়ামী লীগ মানে সন্ত্রাসী আর দুর্নীতিবাজ। এতো দুর্নীতিবাজ যে, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ১৯৭৩-৭৪ সালে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগের নাম পরিবর্তন করে নাম হওয়া উচিত নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি', বলেন তিনি।
এসময় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সংগঠনটির মহাসচিব প্রকৌশলী হাছিন আহমেদ।
অ্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব কে এস আসাদুজ্জামান চুন্নুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, ইউনিভারসিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাদা দলের অধ্যাপক লুতফর রহমান, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, জাতীয় প্রেসক্লাবের সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কৃষিবিদ অ্যাসোসিয়েশনের শামীমুর রহমান শামীম, অ্যাবের আশরাফউদ্দিন বকুল, এ কে এম জহিরুল ইসলাম, মোস্তফা-ই জামান সেলিম, অধ্যাপক এস এম আবদুর রাজ্জাক, মাহবুব আলম এবং শামীম রাব্বী সঞ্জয় বক্তব্য রাখেন।
Comments