বিএনপির রূপরেখা আন্দোলনের নয়, ষড়যন্ত্রের: কাদের
বাংলাদেশের বিকাশমান উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতিকে আক্রমণ করার জন্য বিএনপি নতুন ফন্দি আঁটছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি এখন চক্রান্তের রূপরেখা তৈরি করছে।
আজ শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে আগামী ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠেয় কর্মসূচি বিষয়ক যৌথসভায় তিনি এই কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী সফর প্রসঙ্গে বিএনপির বক্তব্যের জের ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'শেখ হাসিনার এত উন্নয়ন-অর্জন যাদের সহ্য হয় না, বিপুল উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে যারা হিংসা করে সেই একই শক্তি; বিএনপিসহ এই শক্তিটি আজকে শেখ হাসিনার বিদেশ সফর—যে সফর বাংলাদেশের জন্য অনন্য প্রাপ্তির যোগ ঘটিয়েছে সেই সফর নিয়েও এরা কটাক্ষ করছে।
'বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এ দেশটাকে সমৃদ্ধির দিকে যে সৃষ্টিশীল নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন তার প্রশংসা করেছেন বিশ্বব্যাংকের প্রধান, প্রশংসা করেছেন আইএমএফ-এর প্রধান। আইএমএফ প্রধান একই ভাষায় বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন, এটা আমাদের অনেক বড় পাওয়া। আজকে এর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। কোনো গণতান্ত্রিক দেশ হলে এই রীতিটা অন্তত চালু থাকত। বাংলাদেশে এত কিছু...একটা বিদেশ সফর...এত প্রাপ্তির পরও শূন্য হাতে ফেরা কাকে বলে? কত বড় অন্তরজ্বালা এদের! এটা বিএনপির অন্তরজ্বালা,' বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'দৃশ্যমান কিছুই নেই বাংলাদেশে বিএনপি জনগণকে বলবে যে, আমাদেরকে ভোট দিন আমরা এই এই করেছি। তাদের আছে যা, সেটা হচ্ছে ধ্বংস। চুরি, দুর্নীতি, লুটপাট, আগুন সন্ত্রাস—এটা হলো বিএনপির উপহার। আর কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন-অর্জন বিএনপি বাংলাদেশকে দিতে পারেনি।'
'তারা যে রাজনীতি করেছে সেটা হচ্ছে হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। তারা জনকল্যাণমূলক রাজনীতি করতে পারেনি। আজকে তাদের রাজনৈতিক আন্দোলন জনসম্পৃক্ততার অভাবে ব্যর্থতায় পর্যবেশিত হয়েছে। তারা আজকে বৈঠক সিটিং-মিটিং করছে, গোপন বৈঠক করছে। এখন নাকি রূপরেখা তৈরি করবে। রূপরেখা আন্দোলনের নয়, রূপরেখা ষড়যন্ত্রের। চক্রান্তের রূপরেখা তারা এখন তৈরি করছে। সেটা রাজনীতি নয়, বাংলাদেশের বিকাশমান উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতিকে আক্রমণ করার জন্য তারা নতুন করে ফন্দি আঁটছে। এখন তাদের টার্গেট আমাদের অর্থনীতি। যে অর্থনীতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্যান্ডেমিকের পরেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। যে অর্থনীতি এখনো বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের মতে সমৃদ্ধির স্বপ্ন দেখতে পারে। বিশ্বের অন্য দেশের জন্য বাংলাদেশ একটি উদাহরণ,' বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি আরও বলেন, 'আজকে সেই অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে তারা সন্ত্রাসের পথ বেছে নেবে এটাই আমরা জানি। তারা নির্বাচনে বিশ্বাস এখন করে না। তাদের নির্বাচন মানে বিএনপিকে নির্বাচিত করার গ্যারান্টি দেওয়া।
'তারা বুঝে গেছে আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোটে তাদের জেতার কোনো সম্ভাবনা নেই। যেভাবে আজকে বিদেশিরাও বলে শেখ হাসিনা ইজ ম্যাডলি পপুলার। শেখ হাসিনার এই জনপ্রিয়তার খবর, মুখে যা-ই বলুক তারা কিন্তু জানে। নির্বাচনে হেরে যাবে সেই জন্য তারা নির্বাচনকে ভয় পায়। নির্বাচনে যেতে তারা আজকে ভয় পাচ্ছে। তারা এখন চাচ্ছে ষড়যন্ত্র করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এই সরকারকে আজকে চোরাগোপ্তা চক্রান্তের পথে ক্ষমতা থেকে হটাতে। এটাই হচ্ছে আজকে তাদের টার্গেট। সেই রূপরেখাই তারা তৈরি করছে,' যোগ করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধ; বিএনপির এই মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বাংলাদেশে অবৈধ দল বিএনপি। অবৈধ ব্যক্তি যে দল গঠন করে ক্ষমতায় থেকে সেই দল কি বৈধ?'
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি মহাসচিব থাকার বৈধ অধিকার হারিয়ে ফেলেছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, 'আপনি বিএনপির গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করেছেন। গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে দলের জাতীয় কাউন্সিল না করে ১ যুগ ধরে ক্ষমতায় আছেন। আপনি নিজেই তো অবৈধ! আপনার দলও অবৈধ।'
'বিএনপি আজকে ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা করছে কিন্তু আপনাদের এই দলের কোনো বৈধতা নেই। যাদের নিজেদের ঘরে গণতন্ত্র নেই তারা দেশে গণতন্ত্র কীভাবে প্রতিষ্ঠা করবে! তাদের কোনো সম্মেলন হয় না। সব পকেট কমিটি, লন্ডন থেকে ফরমায়েশি কমিটি। পকেট কমিটি দিয়ে বিএনপি চলে ফ্রম টপ টু বটম,' যোগ করেন তিনি।
বিএনপি সব পথ খোলা রাখবে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'নির্বাচন করবে না কিন্তু ঘোমটা পরে করবে। স্বতন্ত্র মার্কা ইলেকশন। ২৪ জন দাঁড়িয়ে গেছে কাউন্সিলর, মেয়র পদেও দাঁড়িয়েছে গাজীপুরে।
'তারা ইলেকশন করবে-ধানের শীষ নিয়ে করবে না, ভয় পায়। তারা আজকে দলীয় পরিচয় গোপন রেখে ইলেকশন করবে। সবাই জানে ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খাইনি। কারা কারা বিএনপির প্রার্থী আমরা জানি। দেশের মানুষ জানে, সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটাররাও জানে। নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে যতই ঘোমটা পরেন, মানুষ কিন্তু জানে আপনারা নির্বাচন করছেন। এখন জাতীয় নির্বাচনেও এই খেলা হবে কি না সেটাও ভাবার বিষয়,' বলেন তিনি।
Comments