পিরোজপুরেও বাস বন্ধ, মানুষের চরম ভোগান্তি
বরিশাল বিভাগীয় বাস-মালিক শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা ধর্মঘটে পিরোজপুরেও ২ দিনের বাস ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পিরোজপুর থেকে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস যাত্রীরা। সবেচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ঢাকাগামী যাত্রীদের।
আজ শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই ধর্মঘট চলবে আগামীকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত।
বাস চলাচল বন্ধ থাকায় পিরোজপুর থেকে খুলনা, বরিশাল, ঝালকাঠি, বরগুনা, মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া, নেছারাবাদ, কাউখালী, ইন্দুরকানীসহ সব রুটের যাত্রীদের বিকল্প উপায়ে গন্তব্যে পৌছাতে হচ্ছে। এজন্য তারা ব্যবহার করছেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও অন্যান্য যানবাহন। গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া।
এদিকে পিরোজপুর থেকে ঢাকাগামী বাস বন্ধ থাকার বিষয়টি বেশিরভাগ যাত্রীদের জানা না থাকায় কাউন্টারে এসে আবার তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে।
বিভিন্ন দাবিতে সারাদেশে বিভাগীয় গণসমাবেশের ধারাবাহিকতায় আগামীকাল শনিবার বরিশালে বিএনপির সমাবেশের আগে গতকাল বৃহস্পতিবার পূর্বঘোষণা ছাড়াই বরিশাল-ভোলা রুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এর আগে গত ৩০ অক্টোবর বাসমালিক-শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধসহ ৫ দফা দাবিতে ৪ ও ৫ নভেম্বর সব ধরনের তিন চাকার যানের ধর্মঘট ডাকে বরিশাল জেলা মিশুক, বেবিট্যাক্সি, টেক্সিকার ও সিএনজি চালক শ্রমিক ইউনিয়ন।
তারও আগে মহাসড়কে ৩ চাকার অবৈধ যান ও ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল বন্ধের দাবিতে ৪-৫ নভেম্বর অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় বরিশাল বিভাগীয় বাস-মালিক শ্রমিক ফেডারেশন।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের দাবি, বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ বানচাল করতেই চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও রংপুরের মতো সরকারি দলের ইন্ধনে এই অপকৌশল নেওয়া হয়েছে।
আজন শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে পিরোজপুরে তাবলীগ জামায়াতের সঙ্গী হয়ে আসা মো. মাইদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জরুরি প্রয়োজনে তার ঢাকা যাওয়া দরকার। কিন্তু কাউন্টারে এসে তিনি জানতে পারেন যে বাস চলাচল বন্ধ। এখন বিকল্প উপায়ে ঢাকা যাওয়ার পথ খুঁজছেন তিনি।
একইভাবে ঢাকা থেকে পিরোজপুরে আসা মোহাম্মদ ফারুক জানান, ব্যবসার কাজে পিরোজপুরে এক ব্যক্তির কাছে এসেছিলেন তিনি। তিনি বলেন, 'আজকের মধ্যে ঢাকায় পৌছাতে না পারলে আমার ব্যবসার ক্ষতি হয়ে যাবে।'
পিরোজপুর বাস টার্মিনালে ছেলেকে নিয়ে এসেছিলেন মো. আব্দুর রাজ্জাক। তার ছেলে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। আগামীকাল থেকে তার ক্লাস শুরু হওয়ার কথা। রাজ্জাক বলেন, 'আজ দুপুর নাগাদ ঢাকায় পৌঁছে রাতের মধ্যে সিলেটে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল আমার ছেলের। এখন দেখছি সেটা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।'
আবুল কালাম আজাদ নামের আরেক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'বরিশালের সমাবেশের সঙ্গে পিরোজপুর থেকে ঢাকাগামী বাসের কোন সম্পৃক্ততা নাই। তাহলে এই রুটে কেন বাস বন্ধ থাকবে?'
টার্মিনালের ইমাদ পরিবহনের কাউন্টারে কর্মরত মোঃ ইকবাল খানের ভাষ্য, মালিক সমিতি থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তাই তারা ঢাকাগামী বাসগুলো বন্ধ রেখেছেন। আগামীকাল বিকেল নাগাদ বাস চলাচল শুরু হতে পারে।
Comments