আ. লীগ ভোটাধিকার ও বেঁচে থাকার অধিকার হরণ করেছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ ভোটাধিকার ও বেঁচে থাকার অধিকার হরণ করেছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্য, একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করবার জন্য আজকে তারা সমস্ত অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে, ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।'

আজ শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে হিন্দু নেতাদের জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'এখন আমাদের প্রয়োজন অটুট ঐক্য। হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের সেই অধিকার যে অধিকারের জন্য ৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলাম সে অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা করা। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের অধিকারকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা প্রয়োজন।

বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার জন্মাষ্টমীর দিনে যে বক্তব্য রেখেছেন, সেই বক্তব্যে তিনি হিন্দু নেতাদের দোষারোপ করেছেন।

তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী তিনি জন্মাষ্টমীর দিনে বক্তব্যে রেখেছেন, সেই বক্তব্যের মধ্যে আপনাদের (হিন্দু নেতাদের) দোষারোপ করেছেন। তিনি বলেছেন, একটা কিছু ঘটলেই আপনারা ঝাঁপিয়ে পড়েন, এমন মনে হয় যে, আপনারা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাই অত্যাচারিত হচ্ছেন।'

'অর্থাৎ আপনাদের ওপর যখন আঘাত করা হয়, মন্দির বাড়িঘর ভাঙচুর করা হলে যখন প্রতিবাদ করেন, সেই প্রতিবাদটাকে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) মনে করছেন আপনারা ভুল করছেন, অন্যায় করছেন। বাড়িয়ে বলছেন, অতিরঞ্জিত করছেন। কিন্তু এটাই সত্যি আজকে বিগত বছরগুলোতে আমরা সবাই অত্যন্ত দুঃখ ও ঘৃণার সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যাদেরকে আমাদের নিজের ভাই মনে করি তাদের উপর অত্যাচার হয়েছে, তাদের মন্দির-উপসানালয়ে আক্রমণ হয়েছে। শুধু হিন্দু নয় বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবার ওপর সমানভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, সেই দেশে কখনেই শান্তি আসবে না, কোনো সম্প্রদায়ের মানুষ, ব্যক্তি নিরাপদে থাকবে না যতক্ষণ না সেই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। আজকে সেই গণতন্ত্রই এখানে অনুপস্থিত।'

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজন কান্তি সরকার, পরিচালনা করেন অমলেন্দু দাস অপু। ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মির্জা ফখরুল বলেন, 'আজকে বাংলাদেশে যে অবস্থা বিরাজ করছে এই অবস্থার সঙ্গে শ্রী কৃষ্ণের আর্বিভাবের সময়ের বহুলাংশে মিল আছে। একইভাবে আজকে মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে দেখছি বেগম খালেদা জিয়া যিনি তার সারাটা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন তাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ৬০০ এর বেশি নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে, খুন করা হয়েছে প্রায় হাজারের উপর মানুষকে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার তিনি এসে নিজেই বলে গেছেন যে, এই দেশে গুম করা হচ্ছে, বিচারবর্হিভূত হত্যা চলছে।'

মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়ার মুক্তি, বিদেশ থেকে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং অসংখ্য যুবক তরুণরা যারা মামলার শিকার হয়েছে তাদের মামলা প্রত্যাহার, দেশে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করবার জন্য এই সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার জন্য এগিয়ে আসতে বলেন। পদত্যাগের পর নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করা এবং নতুন একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্যে দিয়ে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে এনে একটা পার্লামেন্ট-সরকার গঠনের দাবিও করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে রাখেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নিতাই রায় চৌধুরীসহ অন্যান্যরা।

Comments

The Daily Star  | English

Political parties with phantom addresses queue for EC nod

In its application for registration with the Election Commission, Janatar Bangladesh Party has said its central office is located on the 12th floor of Darus Salam Arcade near the capital’s Paltan intersection.

1d ago