ঐকমত্য কমিশন

এনসিসি গঠনে এনসিপিসহ কয়েকটি দলের সঙ্গে বিএনপির মতবিরোধ

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টিসহ বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিরোধ রয়েছে বিএনপির।

আজ বুধবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে চলমান ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংস্কার আলোচনায় এনসিসি গঠনের প্রস্তাবটি প্রাধান্য পেয়েছে।

জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন জানায়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্যদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক পদগুলোতে নিয়োগ তদারকি করতে স্বাধীন সংস্থা হিসেবে কাজ করবে এনসিসি। এর লক্ষ্য, নির্বাহী বিভাগের একতরফা কর্তৃত্ব সীমিত করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ উল্লেখ করেন, তার দল চায় না যে এনসিসি গঠন করা হোক। কারণ, এর মাধ্যমে নির্বাহী শাখার কর্তৃত্ব ক্ষুণ্ন হবে।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, সংস্কারে বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার দিকে জোর দেওয়া উচিত।

তিনি পরামর্শ দেন, নতুন সংস্থা তৈরির পরিবর্তে বিদ্যমান আইন সংশোধন করে বর্তমান সার্চ কমিটি ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী ও স্বচ্ছ করা যেতে পারে।

এর জবাবে এনসিপি নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ অভিযোগ করেন, বিএনপি তাদের অবস্থান বদলে ফেলছে।

খালেদ বলেন, ২০২২ সালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজে আওয়ামী লীগের আইনের সমালোচনা করেছিলেন নির্বাচন কমিশন সদস্যদের নিয়োগে সার্চ কমিটি গঠনের জন্য। এখন বিএনপি ক্ষমতায় আসার পথ দেখছে বলে নিজেদের সুবিধার জন্য সেই কথা ভুলে গেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা অতীতে দেখেছি, কীভাবে দুর্নীতি দমন কমিশনকে নখদন্তহীন বাঘে পরিণত করা হয়েছিল। বিএনপি এনসিসির বিরোধিতা করছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর বিকল্প প্রস্তাব দেয়নি।

মঙ্গলবারের বৈঠকে উপস্থিত না হলেও আজ যোগ দিয়ে এনসিসি গঠনে নিজেদের সমর্থন দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। তবে, এই কাউন্সিল থেকে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে বাদ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে তারা।

এবি পার্টির সভাপতি মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, এনসিসি গঠনে সমর্থন দেওয়া একটি নৈতিক বাধ্যবাধকতা। আমরা যদি এনসিসির মতো জবাবদিহি ব্যবস্থা তৈরি না করি, তাহলে গণঅভ্যুত্থানের মূল চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে।

বর্তমানে পুরো সাংবিধানিক নিয়োগের ওপর নির্বাহী বিভাগের কর্তৃত্ব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য হাজারো তরুণ জীবন দিয়েছে। আমরা এটা নষ্ট হতে দিতে পারি না।

উপস্থিত ৩০টি দলের অধিকাংশই এনসিসি গঠনের সমর্থন দিয়েছে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য এনসিসির মতো তদারকি সংস্থার বিষয়ে একমত হওয়া অপরিহার্য। এটি নতুন কিছু নয়—অনেক গণতান্ত্রিক দেশে এমন কাউন্সিল আছে। অন্তত নির্বাচন কমিশন, দুদক ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনে নিয়োগ এনসিসির মতো কাঠামোর মধ্য দিয়ে হওয়া উচিত।

জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, নির্বাহী কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহি করার জন্য একটি ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক। এটাই এনসিসি গঠনের উদ্দেশ্য। আমাদের এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করার সুযোগ রয়েছে, যেখানে ক্ষমতাসীনরা নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্যের মধ্যে থাকবে।

Comments

The Daily Star  | English

20 non-banks on BB red list

As of December last year, they disbursed Tk 25,808 crore in loans against collateral worth Tk 6,899 crore, according to the BB report

10h ago