সংস্কার না করে কোনো নির্বাচনে ভালো ফল পাওয়া যাবে না: তোফায়েল আহমেদ

সংস্কার না করে জাতীয় সংসদ বা স্থানীয় সরকার—কোনো নির্বাচন করেই ভালো ফল পাওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ।
আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্থানীয় সরকার কমিশনের প্রতিবেদন দাখিল পরবর্তী ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, মাত্র ৪০ দিনের একটি শিডিউলে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করা সম্ভব। বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে ২২৫ দিন লাগে। খরচ হয় ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। একটি শিডিউলে নির্বাচন করলে খরচ নেমে আসবে ৭০০ কোটি টাকায়।
তিনি বলেন, দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পরিষদ—সব জায়গায় শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এই শূন্যতার কারণে একটা অস্থিতিশীলতা তৈরি হতে পারে। তাই স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আশু দেওয়া প্রয়োজন।
তবে স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে কোনটি আগে হবে সেই সিদ্ধান্ত সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে একমত হয়ে নিতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। তবে একটা করলে আর একটা করা যাবে না, এমন শর্ত মনে হয় ঠিক না। কোনটা আগে, কোনটা পরে সেই সিদ্ধান্ত সরকার নেবে। আমরা কেবল নির্বাচনের প্রয়োজনের কথা বলছি।
তিনি জানান, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের সুযোগ সবার জন্য উন্মুক্ত রাখার সুপারিশ রাখা হয়েছে।
তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে নয়টি করে ওয়ার্ড আছে, কিন্তু কোনো কোনো ইউনিয়ন পরিষদে জনসংখ্যা অনেক বেশি। এ জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হয়েছে একটা ইউনিয়নে নয়টা থেকে শুরু জনসংখ্যা বিবেচনায় ওয়ার্ডের সংখ্যা ৫৯টি পর্যন্ত করা যাবে।
অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, জেলা পরিষদে জনগণের কোনো ভোটাধিকার নেই। এই যে বিভিন্ন ধরনের কাঠামো ও আইন এটা একটা বিরাট বাধা। আমরা চেষ্টা করেছি সংগঠন কাঠামো, আইন কাঠামো—দুটি সংস্কার করে সমপর্যায়ে নিয়ে আসা। সেজন্য আমরা তৃণমূল পর্যায় থেকে কীভাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি চালু করা যায় এবং সংসদীয় ব্যবস্থার একটা প্রতিরূপ স্থাপন করার চেষ্টা করেছি। একই সুপারিশ পৌরসভা এবং সিটি করপোরেশনের ক্ষেত্রেও। সুতরাং, এখন যদি আমাদের সুপারিশ অনুযায়ী পুনঃস্থাপন করা হয়, তাহলে কিন্তু ইউনিয়ন থেকে সিটি করপোরেশন একই রকম কাঠামো হবে।
এর আগে বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশন প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
Comments