ত্বকী হত্যার ১ যুগ: বিচার শুরুর দাবিতে ১৫ নাগরিকের বিবৃতি

ত্বকী হত্যা
তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের মেধাবী শিক্ষার্থী তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার যুগপূর্তিতে মামলার অভিযোগপত্র দ্রুত আদালতে জমা দিয়ে বিচার শুরু করার দাবিতে দেশের ১৫ জন নাগরিক বিবৃতি দিয়েছেন।

আজ রোববার সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদ স্বাক্ষরিত এই বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।

বিবৃতিতে তারা বলেন, '২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জে মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে। হত্যার ১২ বছর পূর্ণ হচ্ছে, অথচ আজও এর অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়ে বিচারকার্য শুরু হয় নাই। আমরা এ দীর্ঘ সময় বহুবার বিবৃতি দিয়ে, সংবাদ সম্মেলন করে, সমাবেশে, সংবাদপত্রে লেখনীর মাধ্যমে এ হত্যার বিচার চেয়েছি। কিন্তু বিগত সরকারের সময়কালে তাদের ইচ্ছাতে সাড়ে এগারো বছর এ বিচারটি বন্ধ করে রাখা হয়েছিল।'

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, '৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর অপরাধী কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিলে মামলাটিতে নতুন করে গতি সঞ্চার হয় এবং আমরা আশাবাদী হয়ে উঠি। কিন্তু আমরা লক্ষ করলাম এখন আবারও বিচার প্রক্রিয়ায় স্থবিরতা দেখা দিচ্ছে। আমরা সকল অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়ে দ্রুত বিচারকর্য শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।'

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন বিশিষ্ট লেখক, ভাষা-সংগ্রামী আহমদ রফিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক যতীন সরকার, মানবাধিকারকর্মী বদিউল আলম মজুমদার, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, শিক্ষাবিদ সলিমুল্লাহ খান, আলোকচিত্রী-মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম, লেখক-নারীনেত্রী মালেকা বেগম, মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, কবি-সাংবাদিক সোহরাব হাসান, গণশিল্পী কফিল আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান এবং বিশিষ্ট আইনজীবী-মানবাধিকারকর্মী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।

২০১৩ সালের ৬ মার্চ অপহরণের দুদিন পর ত্বকীর মরদেহ উদ্ধার হয়েছিল শীতলক্ষ্যা নদীর শাখাখাল থেকে। এর এক বছর পর সংবাদ সম্মেলন করে কোথায়, কার নির্দেশে, কীভাবে ত্বকীকে হত্যা করা হয়েছিল তার বিস্তারিত জানিয়েছিল মামলার তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব।

২০১৪ সালের ৫ মার্চ র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। ২০১১ সালে সিটি নির্বাচনে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে অবস্থান নেওয়া, সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের চাঁদাবাজি ও ভূমি দখলের প্রতিবাদে জনগণকে সংগঠিত করায় রফিউর রাব্বির ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন সংসদ সদস্য ও তার অনুগতরা। তাকে শায়েস্তা করতেই ছেলেকে হত্যা করেন তারা।

২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল শামীম ওসমানের ভাই সংসদ সদস্য নাসিম ওসমান মারা যাওয়ার পর জাতীয় সংসদে গণঅভ্যুত্থানের মুখে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওসমান পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, এরপর থেকেই মূলত ত্বকী হত্যা মামলার বিচারের কাজ থেমে যায়।

Comments

The Daily Star  | English
chief adviser muhammad yunus speech

Signs of conspiracies by defeated forces becoming evident: CA

Political parties must make their unity against fascism more visible, says Yunus

2h ago