ধামরাইয়ে পিকনিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, পার্কের ৪ কর্মচারী আটক

ঢাকার ধামরাইয়ে আলাদিন পার্কে পিকনিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় পার্কের চার কর্মচারীকে আটক করেছে পুলিশ।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'মোবাইল হারানোকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডার জেরে মিরপুরের বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আলাদিন পার্কের চার কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে পার্কের ক্যাশিয়ার, এক নিরাপত্তাকর্মী ও দুইজন রাইড চালক আছেন।'
'আমরা পার্কের মালিক আলাউদ্দীনসহ হামলার সঙ্গে জড়িতদের আটকের চেষ্টা করছি,' বলেন ওসি।
এর আগে গতকাল বিকেল ৫টার দিকে লকার থেকে মোবাইল হারানোকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পার্কের কর্মচারীদের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে সাড়ে ৫টার দিকে পার্কের কর্মচারীরা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। এতে নারী শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল কলেজ থেকে ১২টি বাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৬০০ জন ধামরাইয়ের আলাদিন পার্কে ঘুরতে যান। সেখানে তারা পার্কের লকারে মোবাইলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র রাখে। কিন্তু ফেরার পথে শিক্ষার্থীরা জানতে পারে সেগুলো লকারে নেই। পরে তারা সেগুলো ফেরত চাইলে কর্তব্যরতদের কর্মচারীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায় পার্কের কর্মচারীরা স্থানীয়দের ডেকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এসময় ১২টি বাস ভাঙচুর করা হয়। তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। হামলায় অন্তত ৩০ জন আহত হন।
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের গণিতের শিক্ষক শরিফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পার্কের কর্মচারীদের হামলায় শিক্ষকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আল মুত্তাহিদ রিফাতকে এনাম মেডিকেলের নিউরো আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া দ্বাদশ শ্রেণির জাকারিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।'
এনাম মেডিকেলের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. হাসান বলেন, 'গতকাল পার্কে হামলায় আহ দুই গ্রুপের অনেকে হাসপাতালে এসেছিলেন। এদের মধ্য আল মুত্তাহিদ নামে এক শিক্ষার্থীকে নিউরো আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।'
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল সুদীপ কুমার মণ্ডল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভাড়া করা লকার থেকে মোবাইল হারানোকে কেন্দ্র করে পার্কে কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পার্ক কর্মচারী ও এলাকাবাসী শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের ওপর হামলা করে। তারা ১২টি বাস ভাঙচুর করে। আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।'
'প্রাথমিকভাবে ধামরাই থানায় রাতেই পার্কের মালিক আলাউদ্দীনকে প্রধান আসামি করে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমরা আজ আবার থানায় যাচ্ছি মামলা করার জন্য,' বলেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে পার্কের মালিক আলাউদ্দীনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তা বন্ধন পাওয়া গেছে।
Comments