শাহবাগে অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের জলকামান

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপের প্রার্থীদের নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন চলছে রাজধানীর শাহবাগে। তিন বছরের শিশুকে নিয়ে আন্দোলনে যোগ দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা এক মা। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ। ছবি: প্রবীর দাশ

হাইকোর্টের রায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল হওয়া তৃতীয় ধাপের  প্রার্থীরা রাজধানীর শাহবাগ অবরোধ করে আন্দোলনন করেছেন। আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ, জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে পুলিশ।

ঘটনাস্থল থেকে ডেইলি স্টারের আলোকচিত্রী জানান, সকাল ১১টার দিকে শাহবাগ মোড়ে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে আন্দোলনরতদের ওপর লাঠিচার্জ, জলকামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে পুলিশ।

শাহবাগ, সহকারী শিক্ষক,
আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন পুলিশ। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

আন্দোলনকারীরা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, 'প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তিনটি ধাপে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত নিয়োগ কার্যক্রম ও অপেক্ষমান তালিকা থেকেও নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় ধাপ নিয়ে প্রহসন যেন থামছেই না। ২০২৩ সালের ১৪ জুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় এবং লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালের ২৯ মার্চ। এ ধাপের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয় ২০২৪ সালের ২১ এপ্রিল এবং ভাইভা সম্পন্ন হয় ১২ জুন। আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ওই বছরের ৩১ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে ৬ হাজার ৫৩১ জন চূড়ান্তভাবে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়। ৩১ জন হাইকোর্টে রিট করে, যারা সুপারিশপ্রাপ্ত হয়নি। এর প্রেক্ষিতে ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত হয়ে যায়। ইতোমধ্যে চেম্বার জজ আদালত, আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্টে চারটি শুনানির পর চূড়ান্ত জাজমেন্টে ৬ তারিখ বাতিল ঘোষণা করে দেন।'

শাহবাগ, সহকারী শিক্ষক,
শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, '২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ৫ ডিসেম্বর জেলা শিক্ষা অফিস এবং ৮ ডিসেম্বর স্কুল পদায়ন সম্পর্কিত নিয়োগ আদেশ জারি করা হয়। নিজ নিজ জেলা সিভিল সার্জনে মেডিকেল টেস্ট এবং জেলা শিক্ষা অফিসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমাদানও সম্পন্ন করা হয়েছে। অনেক জেলার কিছু কিছু উপজেলায় চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্তরা যোগদানপত্রও হাতে পেয়েছেন। সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরও যোগদান করতে না পেরে ৬ হাজার ৫৩১টি পরিবারকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হতে হচ্ছে। সবাই এক প্রকার মানসিক বিপর্যয় ও মানবেতর জীবনযাপন করছি।'

তারা বলেছে, '২০২৪ সালের ৫ ডিসেম্বর আমাদের যোগদান করার কথা, কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে আমরা যোগদান করতে পারিনি। যারা সুপারিশপ্রাপ্ত হয়নি এমন ৩১ জনের রিটে এ ফলাফল বাতিল করলো। এ কেমন প্রহসন। এ দায়ভার আসলে কে নিবে? আমরা একপ্রকার মানবেতর জীবনযাপন করছি।'

শাহবাগ, সহকারী শিক্ষক,
সকাল ১১টার দিকে শাহবাগ মোড়ে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। ছবি: প্রবীর দাশ/স্টার

'প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, আইন মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশ করেছে। আর এতে আমরা ৬ হাজার ৫৩১ জন চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি। এটাই কি আমাদের অপরাধ?'

'নিয়োগপত্র পাওয়ার পরও কর্মস্থলে যোগদান করতে না পেরে আজ রাস্তায় এসে দাঁড়াতে হচ্ছে। এটা যে কতটা বেদনাদায়ক তা কেবলমাত্র একজন ভুক্তভোগী বুঝতে পারবে। আমাদের মধ্যে অনেকেরই বয়স শেষ, তাদের আর কোনো চাকরিতে আবেদন করার সুযোগও নাই।'

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, 'আমাদের একটাই দাবি দ্রুত এর সমাধান করে আমাদের যোগাদানের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

BNP now a protector of Mujibism, says Nahid

'BNP is now protecting the ideology of Mujibism like the previous government. They are involved in corruption, extortion, and criminal activities just like the previous government,' says NCP chief

34m ago