গাজীপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা

মোজাম্মেলের বাড়ির এলাকা ধীরাশ্রম কার্যত জনশূন্য

ধীরাশ্রমে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতা মোজাম্মেল হকের বাড়ি। ছবি: স্টার

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার পর আওয়ামী লীগের পলাতক নেতা ও সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িসহ এর আশাপাশের এলাকা কার্যত জনশূন্য হয়ে পড়েছে।

পুলিশি হয়রানি কিংবা গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়ি ছেড়েছেন ধীরাশ্রমের অনেক বাসিন্দা। বেশিরভাগ বাড়িতেই তালা ঝুলছে। রাস্তাঘাটেও তেমন লোক চলাচল নেই।

দাক্ষিণখানের ধীরাশ্রম এলাকাটি গাজীপুর মহানগরের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন। গত শুক্রবার রাতে এখানেই মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ব্যাপক মারধরের শিকার হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

আজ রোববার দেখা যায়, মোজাম্মেল হকের বাড়ির প্রধান ফটকও তালাবদ্ধ। ফটকের সামনে কাচের ভাঙা টুকরো ও কয়েকটি সম্মাননা স্মারক ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। রাস্তার দুই পাশে পড়ে আছে অসংখ্য লাঠিসোঁটা, জুতা ও জামাকাপড়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক দোকানির ভাষ্য, শুক্রবার রাতে ছাত্রদের নির্দয়ভাবে পিটিয়েছে আওয়ামী লীগের লোকজন। যারা ছাত্রদের রক্ষা করতে গিয়েছিলেন তাদেরও নাজেহাল হতে হয়েছে। ছাত্ররা সেখানে লুটপাট ও ভাঙচুর করতে যাননি। তারা ভাঙচুর ও লুটপাট ঠেকাতে গিয়েছিলেন।

স্থানীয়রা বলছেন, ওই রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে এলাকা থেকে কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যায়। এতে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার ভোর থেকেই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান অনেকে।

মোজাম্মেল হকের বাড়ির পশ্চিম পাশে স্থানীয় আবুল বাছেতের বাড়ি। টিনশেড বাড়িটির মূল ছিল ফটক বন্ধ। বেশ কয়েকবার ফটকে নাড়া দেওয়ার পর বেরিয়ে আসেন বাছেতের স্ত্রী ষাটোর্ধ্ব কুলসুম বেগম। তিনি বলেন, 'ওইদিন এশার নামাজের পর হঠাৎ হুনি (শুনি) ভাঙচুরের শব্দ। মসজিদের মাইকে হুজুর মন্ত্রীর বাড়িতে ডাকাত পড়ছে বলে ঘোষণা দেয়।'

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঘটনার রাতেই মসজিদটিতে তালা দেওয়া হয়। এরপর থেকেই সেটি তালাবদ্ধ আছে। ভয়ে কেউ নামাজ পড়তেও যাচ্ছেন না।

স্থানীয় আফিয়া বেগমের ভাষ্য, স্বাভাবিক সময়ে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষের হাঁটাচলায় এলাকাটি সরগরম থাকত। এমন জনশূন্য অবস্থা আগে কখনো দেখেননি তিনি।

দোকানদার কামাল হোসেন বললেন, 'হামলার পর থেকেই এলাকার পরিস্থিতি থমথমে। আজ সকালেও এলাকায় পুলিশ এসেছিল। কিছুক্ষণ থেকে চলে গেছে।'

এদিকে আজ রোববার সকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপ্স) তাহেরুল হক চৌহান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত গাজীপুর মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪৩ জনকে আটক করা হয়েছে। এর ভেতর হামলার ঘটনার সঙ্গে ১৮ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Govt publishes gazette of 1,558 injured July fighters

Of them, 210 have been enlisted in the critically injured "B" category, while the rest fall under the "C" category of injured fighters

4h ago