বায়ুদূষণের প্রভাবে বাংলাদেশে বছরে মৃত্যু লাখের বেশি
বাংলাদেশে বছরে প্রায় এক লাখ দুই হাজার ৪৫৬ জনের বেশি মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব।
সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ারের (সিআরইএ) এক গবেষণায় এই চিত্র উঠে এসেছে।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে 'বাংলাদেশে সূক্ষ্মকণা বায়ু দূষণে জনস্বাস্থ্য প্রভাব' শীর্ষক আলোচনা সভায় এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
পিএম ২.৫ ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ, স্ট্রোক, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, লোয়ার রেসপিরেটরি ইনফেকশন এবং লাং ক্যানসারের মতো রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
বিশেষত, ছোট শিশুরা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। প্রতি বছর পিএম ২.৫ সংশ্লিষ্ট লোয়ার রেসপিরেটরি ইনফেকশনে পাঁচ হাজার ২৫৮ শিশুর মৃত্যু হয়।
২০২৩ সালে বিশ্বের দূষিত দেশের তালিকায় শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ। প্রতি ঘনমিটার বাতাসে অতি ক্ষুদ্র বালু কণার বার্ষিক গড় মান ছিল ৭৯ দশমিক নয় মাইক্রোগ্রাম; যা বার্ষিক জাতীয় মানদণ্ড ৩৫ মাইক্রোগ্রামের দ্বিগুণের বেশি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানের চেয়ে ১৫ গুণ বেশি।
সিআরইএর মতে, বাংলাদেশের জাতীয় বায়ুমানের মানদণ্ড (৩৫ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটার) পূরণ করা সম্ভব হলেও মৃত্যুহার ১৯ শতাংশ, আয়ুষ্কালজনিত সমস্যা ২১ শতাংশ এবং অক্ষমতা নিয়ে বসবাসের বছর ১২ শতাংশ কমতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন কঠোরভাবে মেনে চলা সম্ভব হলে প্রতি বছর ৮১ হাজার ২৮২ মানুষের জীবন রক্ষা করা যাবে।
সিআরইএর বায়ুমান বিশ্লেষক ড. জেমি কেলি বলেন, 'বাংলাদেশে বায়ুদূষণের কারণে প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অপরিণত শিশু, কম ওজনের শিশুর জন্ম এবং শিশু মৃত্যু ঘটছে।'
তিনি আরও বলেন, 'বায়ুদূষণ অর্থনীতিকেও দুর্বল করে, প্রতি বছর প্রায় ২৬৬ মিলিয়ন কর্মদিবসের ক্ষতি হয়।'
বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, 'ঢাকার ক্রমবর্ধমান দূষণ কেবল শারীরিক স্বাস্থ্যই নয়, মানসিক স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করছে।'
এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স (একিউএলআই) ২০২৪ সালের প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, বায়ুদূষণের কারণে বিশ্বব্যাপী গড় আয়ু দুই বছর সাত মাস হ্রাস পেয়েছে। তবে, বাংলাদেশে কমেছে আরও বেশি, চার বছর আট মাস।
Comments