‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ওপর ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’র হামলার অভিযোগ, আহত অন্তত ১০
রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে হামলায় অন্তত ১০ আদিবাসী শিক্ষার্থী ও তাদের সমর্থক আহত হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
'সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা' এবং 'স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি'- এই দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির পর এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আদিবাসী শিক্ষার্থীরা আজ বুধবার পাঠ্যপুস্তকে 'আদিবাসী' শব্দসংবলিত গ্রাফিতি অপসারণের প্রতিবাদে তাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি পালন করতে এনসিটিবি ভবনের সামনে গিয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা এনসিটিবি ভবনের সামনে পৌঁছানোর আগেই 'স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি'র সদস্যরা জাতীয় পতাকা বাঁধা ক্রিকেট স্ট্যাম্প হাতে সেখানে অবস্থান নেয়। এসময় সেখানে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
একপর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পুলিশ গিয়ে দুই গ্রুপকে সরিয়ে দিয়ে মাঝে অবস্থান নেয়। কিছুক্ষণ পর 'স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি'র সদস্যরা আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। এতে এক ডজনেরও বেশি মানুষ আহত হন।
তাদের মধ্যে অন্তত ১০ জনকে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আহতরা হলেন, রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা (২৪), ইসাবা শুহরাত (২৫), রেংইয়ং ম্র (২৭), ফুটন্ত চাকমা (২২), ধনজেতরা (২৮), অন্তত ধামাই (৩৫), শৈলী (২৭), ডোনায়ই ম্রো (২৪), তানিচিরান (৩০) ও ডিবিসি টিভির সাংবাদিক জুয়েল মারাক (৩৫)।
তাদের মধ্যে রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য বলে ফেসবুকে এক পোস্টে জানান সংগঠনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা। তিনি বলেন, স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টির হামলায় রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা গুরুতর আহত হয়েছেন।
'সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা'র অন্যতম সংগঠক অলিক ম্রি জানান, পাঠ্যপুস্তকে 'আদিবাসী' শব্দসংবলিত গ্রাফিতি অপসারণের প্রতিবাদে আজ আমরা শান্তিপূর্ণ একটি মিছিল নিয়ে এনসিটিবি ভবনের দিকে যাচ্ছিলাম। আমাদের মিছিলটি মতিঝিলে পৌঁছালে একদল যুবক জাতীয় পতাকা বাঁধা ক্রিকেট স্ট্যাম্প নিয়ে পুলিশের সামনেই আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের সহকর্মী ১১ আদিবাসী শিক্ষার্থী আহত হয়।
আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারীও রয়েছে।
তবে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর কথা অস্বীকার করেছেন 'স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি'র যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াকুব মজুমদার।
তিনি বলেন, 'এনসিটিবি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করার সময় আমরা শুনতে পাই যে, এনসিটিবি ভবনের সামনে বিশৃঙ্খলা হয়েছে। আমরা সেখানে ছুটে গিয়ে দেখি আমাদের ১২ সহকর্মী রাস্তায় আহতাবস্থায় পড়ে আছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি।'
আহতদের বিষয়ে জানতে চাইলে ইয়াকুব মজুমদার বলেন, 'তাদের কয়েকজনকে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে, বাকিদের খোঁজ চলছে।'
পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণে এনেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের শান্ত থাকতে রাজি করিয়েছি।'
Comments