গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি

বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ পানি পর্যবেক্ষণ শুরু

পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ। ছবি: স্টার

গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তির আলোকে প্রতি বছরের মতো এ বছরও ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ পানি পর্যবেক্ষণ শুরু হয়েছে।

বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে আজ বুধবার সকালে পদ্মা নদীর উজানে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার পানি পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে দুই সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের ভারতীয় প্রতিনিধি দল।

একই সময়ে ভারতের ফারাক্কা পয়েন্টে গঙ্গার পানির যৌথ পানি পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে বাংলাদেশ ও ভারতীয় প্রতিনিধি দল।

পাবনা আঞ্চলিক হাইড্রলজি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বুধবার সকাল ৯ টায় ভারতীয় কেন্দ্রীয় পানি কমিশন (সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মুত্তাত লিও ফ্র্যাঙ্কলিন এবং কমিশনের সহকারী পরিচালক রিতেশ কুমার পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টের ৩৫০০ ফিট উজানে পদ্মার পানি পরিমাপ শুরু করেছে।

একই সময়ে হাইড্রলজি বিভাগ পাবনার আঞ্চলিক কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বাংলাদেশের দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে ভারতের উজানে ফারাক্কা পয়েন্টে গঙ্গার পানির যৌথ পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে।

চলমান পরিস্থিতিতে এ বছর ভারতীয় দলের পদ্মায় পানি পর্যবেক্ষণের কাজ কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে।

পাবনা হাইড্রলজি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ভারতীয় দলের পানি পর্যবেক্ষণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য কুষ্টিয়া ও পাবনার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।

১৯৯৬ সালের ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তির আলোকে প্রতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে মে মাসের ৩১ তারিখ পর্যন্ত ফারাক্কা পয়েন্টে গঙ্গার পানি ও বাংলাদেশের হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পদ্মার পানি প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করে ভারত ও বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল।

চুক্তি অনুযায়ী প্রতি ১০ দিন অন্তর পানির প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী ফারাক্কা পয়েন্টে প্রথম ১০ দিন ৭০ হাজার কিউসেক বা কম পানি থাকলে দুই দেশ ৫০ শতাংশ করে পানির হিস্যা পাবে। দ্বিতীয় ১০ দিন ৭০ থেক ৭৫ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহ থাকলে বাংলাদেশ ৩৫ হাজার কিউসেক পানি পাবে এবং অবশিষ্ট পানি ভারত পাবে। শেষ ১০ দিন ৭৫ হাজারের বেশি পানি থাকলে ভারত ৪০ হাজার কিউসেক পানি পাবে এবং অবশিষ্ট পানি পাবে বাংলাদেশ।

তবে চুক্তি অনুযায়ী, ১১ মার্চ থেকে ১০ মে সময়কাল পর্যন্ত একটি বাদ দিয়ে একটি ১০ দিন অনুক্রমে গ্যারান্টিযুক্ত ভাবে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশ ৩৫ হাজার কিউসেক করে পানি পাবে।

পাবনা হাইড্রলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ বছর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ গত বছরের চেয়ে কিছুটা ভালো রয়েছে। গত বছর জানুয়ারির প্রথম দিকে পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ৭৮ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহ ছিল।

এ বছর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ৮৫ হাজার কিউসেক পানির প্রবাহ রয়েছে। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে এ সময় পানির উচ্চতা ৬ দশমিক ৩ মিটার রয়েছে।

শুষ্ক মৌসুমে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে বংলাদেশ ও ভারত ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তিতে সই করে। এর পর থেকে প্রতি বছর জানুয়ারির প্রথম দিন থেকেই দুই দেশের যৌথ পানি পর্যবেক্ষণ শুরু হয়।

Comments

The Daily Star  | English

India, Pakistan agree ceasefire: Trump

US President Donald Trump on Saturday said that India and Pakistan have agreed to a "full and immediate ceasefire," amid both countries launching strikes and counter-strikes against each other's military installations

34m ago