জুনের মধ্যে ৬০০ কোটি ডলারের তহবিল প্রত্যাশা করছে সরকার
আগামী জুনের মধ্যে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফসহ উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে সরকার প্রায় ৬০০ কোটি ডলারের তহবিল পাওয়ার প্রত্যাশা করছে।
উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে আলোচনার পর আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এই প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।
এর আগে আইএমএফের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ জয়েন্দু দে এর নেতৃত্বে সংস্থাটির একটি মিশনের সঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা সাক্ষাৎ করেন।
তিনি বলেন, ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তির চতুর্থ কিস্তি ছাড়ার শর্ত পূরণের অগ্রগতি মূল্যায়ন করতে আইএমএফের তৃতীয় পর্যালোচনা মিশন মঙ্গলবার ঢাকায় পৌঁছেছে। ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও ওপেক তহবিলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং সরকার আগামী জুনের মধ্যে কিছু প্রতিশ্রুতি আশা করছে।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা অদূর ভবিষ্যতে এডিবি এবং ওপেক তহবিল থেকেও অর্থায়ন আশা করছি। প্রতিশ্রুতি আসবে, কিন্তু এক বছরেও সহায়তা সরবরাহ আসবে না।'
আইএমএফ মিশন তাদের পরবর্তী কর্মপন্থা নিয়ে আরও আলোচনার জন্য আগামী বছরের মার্চ মাসে আবারও আসতে পারে বলেও জানান অর্থ উপদেষ্টা।
চলমান ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবার ১১১ কোটি ডলার ছাড় করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আইএমএফ মিশনের এই সফরে প্রাথমিকভাবে রাজস্ব খাত, রাজস্ব ঘাটতি, প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির ওপর গুরুত্বারোপ করা হবে।
তিনি বলেন, 'আমরা এখন পর্যন্ত যে কৌশলগুলো নিয়েছি এবং আগামীর জন্য যে পরিকল্পনাগুলো করেছি, তাও তারা মূল্যায়ন করবেন। ব্যাংকিং সংস্কার, খেলাপি ঋণ, আমানতকারীদের চাপসহ অন্যান্য বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করবে আইএমএফ মিশন।'
পুরোপুরি না হলেও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার উন্নতি হয়েছে মন্তব্য করে সালেহউদ্দিন বলেন, 'বিনিয়োগ আকৃষ্ট এবং বিদেশি দাতাদের অবদান রাখতে উৎসাহিত করার এখনই সময়।'
তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল। কিছু ব্যাংকের তারল্য সহায়তার প্রয়োজন হলেও বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংক—ইসলামী ব্যাংক ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এবং অন্যান্য ব্যাংকগুলো ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিধিনিষেধের কারণে অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স ও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী থাকলেও আমদানি কম, বিশেষ করে উৎপাদনকারী উপকরণ।
'আমরা এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্ভাব্য পদক্ষেপের কথা বিবেচনা করছি,' যোগ করেন তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, 'আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি যে, আমরা যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করবো, তা দীর্ঘমেয়াদে দেশকে উপকৃত করবে।'
আইএমএফ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বাস্তবসম্মত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করবে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, চলতি ঋণ প্যাকেজ নিয়ে আলোচনার পর বাড়তি অর্থায়নের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
তিনি বলেন, 'আমরা এখন চলমান ঋণ প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা করছি, পরে অতিরিক্ত তহবিল চাওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করবো।'
ব্যাংকিং ও রাজস্ব খাতের সংস্কারের মতো সরকারের সংস্কার উদ্যোগের জন্য বৈদেশিক অর্থায়নের পাশাপাশি বাণিজ্য ঘাটতি এবং চলতি হিসাবের ভারসাম্য মোকাবিলার ব্যবস্থা প্রয়োজন। আমরা ইতোমধ্যে এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, যোগ করেন তিনি।
Comments