ভূমি সংস্কার সম্পন্ন হলে পার্বত্য চুক্তি বহুলাংশে সার্থক হবে: উপদেষ্টা সুপ্রদীপ

ছবি: সংগৃহীত

ভূমি সংস্কার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা গেলে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বহুলাংশে সার্থক হবে বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা।

সোমবার রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স অডিটোরিয়ামে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৭ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে 'দ্য চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস অ্যাকর্ড: ট্রান্সফর্মিং হারমনি ইনটু প্রসপারিটি' শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, লোক দেখানো কোনো কাজ করা যাবে না। সবার সুপরামর্শে আমরা মিলেমিশে একসঙ্গে পাশাপাশি থাকতে চাই।

তিনি বলেন, ভূমি ইস্যু সমাধানে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়ে প্রয়োজনে উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ ও আইন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা নেওয়া হবে বলে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ কমিশনে একজন সম্মানিত অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে প্রধান করে ভূমি সংস্কারের কাজ করা যেতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা।

সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক কাউন্সিলের কাজকে আরও আধুনিকভাবে সাজাতে হবে। আমাদের আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করতে হবে। সবার সুচিন্তিত মতামত ও অনুভূতি প্রকাশ হওয়া উচিত। আমাদের জীবনমানের উন্নয়ন করতে হবে। আত্মনির্ভরশীল হতে হবে।

তিনি বলেন, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে মেডিকেল কলেজ স্থাপন করার বিষয়টিও এখন গুরুত্ব বহন করে।

বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে পার্বত্য অঞ্চলের সর্বত্র শান্তি বিরাজ নিশ্চিত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

পার্বত্য চুক্তির সফল বাস্তবায়নে পার্বত্য অঞ্চলের অহেতুক সংঘাত হ্রাস এবং সম্প্রীতি বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করে সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি পার্বত্য জনগণের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে, স্থানীয় শাসনের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করে এবং তাদের সাংস্কৃতিক, ভাষাগত ও ভূমি অধিকার রক্ষা করে দীর্ঘস্থায়ী উত্তেজন মোকাবিলা করছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিটি ভারত ও মিয়ানমারের সম্পর্ককে শক্তিশালী করেছে এবং আন্তঃসীমান্ত বিদ্রোহ অনেকটা সীমিত করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলোকে এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে সরকার আন্তরিক রয়েছে। ১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে কয়েক দশকের সংঘাতের অবসান ঘটে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী আদিবাসীদের দেশের উন্নয়নের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়। আলোচনায় বক্তারা একবাক্যে স্বীকার করেন যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির একমাত্র বাধা রয়ে গেছে জমি সমস্যা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব একেএম শামিমুল হক ছিদ্দিকীর সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যদের মধ্যে ভারত-প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন এবং অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু নির্দিষ্টকরণ ও পুনর্বাসন সম্পর্কিত টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা) সুদত্ত চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, ঢাকার আহ্বায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) তুষার কান্তি চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য ডক্টর নীলু কুমার তঞ্চঙ্গা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান (যুগ্ম সচিব) রিপন চাকমা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সেমিনারে উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন ছাত্র-জনতা-সুধী ও সাংবাদিকরা।

Comments

The Daily Star  | English

JnU second campus: Project stalled amid bureaucratic hurdles

The construction of Jagannath University’s long-awaited second campus in Keraniganj has stalled due to bureaucratic delays.

4h ago