বাড়িতে এভাবে ফেরার কথা ছিল না নাঈমের

আজ রোববার সকাল ১০টায় ফেনী সদরের ফতেহপুর ঈদগাহ ময়দানে নাঈমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: সংগৃহীত

বনভোজনে যাওয়ার আগের রাতে মায়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেছিলেন মীর মোজাম্মেল হোসেন নাঈম। বনভোজন শেষ করে আজ রোববার ফেনীতে আসার কথা ছিল তার। সে কথা রেখেছেনও তিনি। ফ্রিজারভ্যানে কফিনবন্দী অবস্থায় বাড়িতে এসেছেন। তবে মা-বাবাসহ তাকে শেষবারের মতো দেখতে আসা স্বজন-এলাকাবাসীর সঙ্গে কুশল বিনিময়ের সুযোগ হয়নি প্রাণহীন নাঈমের।

গতকাল শনিবার বনভোজনের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যু হওয়া গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির  (ইইউটি) তিন শিক্ষার্থীদের একজন নাঈম। তিনি ইইউটির মেকানিক্যাল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। একমাস আগে শেষবার বাড়ি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

মায়ের সঙ্গে হওয়া ছেলের শেষ কথাগুলো বলার সময় আজ রোববার কান্নায় ভেঙে পড়েন নাঈমের বাবা মীর মোতাহের হোসেন শাহিন। তিনি ফেনী সদর উপজেলার ফাজিলপুর সাউথইস্ট কলেজের সহকারী অধ্যাপক। মা নাহিদা ইয়াসমিন একজন গৃহিনী।

হাসিখুশি নাঈম ছিলেন বাবা-মায়ের আশা-ভরসার বাতিঘর। ছবি: সংগৃহীত

এদিন ভোরে নাঈমের মরদেহ ফেনী সদর উপজেলার ফতেহপুরের বাড়িতে পৌঁছায়। সকাল ১০টায় ফতেহপুর ঈদগাহ ময়দানে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় তার সহপাঠী আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসীসহ হাজারো মানুষ অংশ নেন। জানাজা শেষে নাঈমকে বাড়ির পাশের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাজার নামাজ পড়ান নাঈমের আপন চাচা মুফতি মোফাচ্ছের হোসেন মামুন।

স্থানীয়রা বলছেন, নাঈম ছিলেন মিশুক প্রকৃতির। গ্রামে গেলে সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতেন। খোঁজখবর নিতেন।

নাঈমের বাবা জানান, তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে নাঈম ছিলেন দ্বিতীয়। বড় ছেলে মোবারক হোসেন একজন বাকপ্রতিবন্ধী। চট্টগ্রামের একটি বিশেষায়িত স্কুল থেকে এবার এসএসসি পাস করেছেন তিনি। আর নাঈমের ছোটবোন ফেনী সদরের একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।

মোতাহের হোসেন জানান, নাঈম ছিলেন তাদের আশা-ভরসার কেন্দ্র। লেখাপড়া শেষ করে একসময় সে পরিবারের হাল ধরবে—এমনটাই ছিল তাদের প্রত্যাশা।

নাঈমের স্বজনদের কাছ থেকে জানা যায়, তিনি ফেনী শহরের হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ফেনী পাইলট হাইস্কুলে ভর্তি হন। এসএসসি পাসের পর ঢাকা রেসিডেনসিয়াল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন তিনি। দুই পাবলিক পরীক্ষাতেই তিনি জিপিএ-৫ পান।

Comments

The Daily Star  | English

Govt publishes gazette of 1,558 injured July fighters

Of them, 210 have been enlisted in the critically injured "B" category, while the rest fall under the "C" category of injured fighters

5h ago