ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন

মানবপাচার তদন্তে দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার-প্রত্যর্পণে মালয়েশিয়াকে বাংলাদেশের চিঠি

স্টার ফাইল ফটো

অর্থপাচার, অভিবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে জোর করে অর্থ আদায় ও মানবপাচারের অভিযোগের তদন্তের অংশ হিসেবে দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার ব্লুমবার্গ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।   

প্রতিবদেনে বলা হয়, গত ২৪ অক্টোবর মালয়েশিয়ায় ইন্টারপোলের বাংলাদেশ শাখার পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, আমিনুল ইসলাম ও রুহুল আমিন নামে ওই দুই ব্যক্তি এমন এক ব্যবস্থায় প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন যেখানে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আদায় করে তাদের 'শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের' সুযোগ করে দিয়েছেন তারা।

ব্লুমবার্গ নিউজ ওই চিঠির একটি অনুলিপি যাচাই করেছে, তবে সেখানে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে কিনা তা বলা হয়নি।

ইন্টারপোলের বাংলাদেশ শাখার পুলিশ পরিদর্শক আশিকুর রহমান গত রোববার এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বাংলাদেশ সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বাংলাদেশ পুলিশ মালয়েশিয়া সরকারকে আমিনুলের প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি বেস্টিনেট এসডিএনের সফটওয়্যার ব্যবহার সাময়িক বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছে। মালয়েশিয়ার কর্মকর্তারা অন্তত ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ এবং অন্যান্য দেশ থেকে আসা লাখ লাখ অভিবাসী শ্রমিকের তথ্য যাচাই ও পর্যবেক্ষণে এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করেছেন।

আমিনুল, যিনি সাধারণত আমিন নামে পরিচিত এক দশকেরও বেশি আগে মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব পান। তার আইনজীবী বলেছেন যে তারা ওই চিঠি সম্পর্কে কোনো তথ্য পাননি এবং এতে আনা অভিযোগও অস্বীকার করেছেন।

ঢাকাভিত্তিক রিক্রুটিং ফার্ম ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী রুহুল আমিনের মন্তব্য জানতে ব্লুমবার্গ নিউজ ফোনে ও ইমেইলে যোগাযোগ করে। ক্যাথারসিসের একজন প্রতিনিধি ইমেইলে জানায় যে রুহুল আমিন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নাকচ করেছেন এবং তিনি 'সবসময় আইন মেনে, বৈধ ও নৈতিকভাবে' কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন বলে জানিয়েছেন।

বেস্টিনেটের একজন প্রতিনিধি জানান,  মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষকে বেস্টিনেট সফটওয়্যার ব্যবহার বন্ধ করার অনুরোধসহ বাংলাদেশ পুলিশের চিঠি সম্পর্কে কোম্পানিটি জানে না এবং এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়।

মালয়েশিয়ার পুলিশ, দেশটির স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

পুলিশ পরিদর্শক আশিকুর রহমান জানান, ওই দুজনকে সবশেষ কুয়ালালামপুরে দেখা হয়েছিল। তিনি বলেন, মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ চিঠির জবাবে প্রত্যর্পণের জন্য বাংলাদেশ পুলিশকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করতে অনুরোধ জানিয়েছে। বর্তমানে এসব কাগজপত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

Comments