প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে ২০ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে ২০ থেকে ২২টি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

রোববার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রিমিয়ার অব দ্য স্টেট কাউন্সিল লি শিয়াংয়ের আমন্ত্রণে সোমবার চারদিনের সরকারি সফরে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন।

আগামী ৮ থেকে ১১ জুলাই সফরকালে প্রধানমন্ত্রী চীনের প্রেসিডেন্ট, প্রিমিয়ার অব দ্য স্টেট কাউন্সিল, সিপিপিসিসির জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

অর্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিব, অন্যান্য সচিববৃন্দসহ উচ্চপর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হবেন।

চীন থেকে বাজেট সহায়তা নেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাজেট সহায়তা নয় বরং চীনের সঙ্গে ব্যবসা ও অর্থনৈতিক খাতে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ সহযোগিতার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে।

চীনকে বাংলাদেশ অফশোর ব্যাংকিংয়ের প্রস্তাব দেবে কি না, প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অফশোর ব্যাংকিং ইজ ওপেন ফর অল। কোনো দেশ যদি চায়, আমাদের সেন্ট্রাল ব্যাংকে চাইলে টাকা রাখতে পারে। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ব্যাংকে অনেক দেশ টাকা রাখতে পারে। তবে অফশোর ব্যাংকিং কিছুটা ভিন্ন বিষয়।

মোংলা বন্দর উন্নয়নের বিষয়ে চীনের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছিল, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব চীনকে দেওয়া হবে কি না জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মোংলা বন্দর উন্নয়নের বিষয়ে চীনের সঙ্গে আমরা আলাপ-আলোচনার মধ্যে আছি। এই সফরে আশা করছি বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হবে।

দুদেশের বাণিজ্য ভারসাম্য নিয়ে প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'চীনের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। দেশটি থেকে আমরা আমদানি করছি বেশি, রপ্তানি কম হয়। আমাদের পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।'

সফরের বিস্তারিত জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার সকাল ১১টায় বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন এবং একই দিন চীনের স্থানীয় সময় বিকেল ৬টায় বেইজিং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনারসহ যথাযথ অভ্যর্থনা জানানো হবে।

মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিন লিকুনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপর তিনি সাংগ্রিলা সার্কেলে অনুষ্ঠেয় 'সামিট অন ট্রেড, বিজনেস এন্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিটুইন বাংলাদেশ এন্ড চায়না' শীর্ষক সম্মেলনে অংশ নেবেন। বাংলাদেশের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল সম্মেলনে যোগ দেবে।

সেদিন দুপুরে প্রধানমন্ত্রী চাইনিজ পিপল'স পলিটিক্যাল কনসাল্টেটিভ কনফারেন্সের (সিপিপিসিসি) ১৪তম জাতীয় কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিং- এর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক এবং বিকেলে ঐতিহ্যবাহী তিয়েনআনমেন স্কয়ারে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন। রাতে তিনি বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন।

১০ জুলাই সফরের তৃতীয় দিনে প্রধানমন্ত্রী গ্রেট হল অব দ্য পিপল- এ উপস্থিত হলে তার সম্মানে আয়োজিত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান শেষে চীনের প্রিমিয়ার অব দ্য স্টেট কাউন্সিল লি শিয়াংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও দুদেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলসহ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন। এরপর দুই দেশের সরকার প্রধানের উপস্থিতিতে প্রায় ২০ থেকে ২২টির মতো সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধনের ঘোষণার কথা রয়েছে।

সমঝোতা স্মারক নিয়ে হাছান জানান, অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং খাত, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, ডিজিটাল ইকোনমি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি খাতে সহায়তা, ৬ষ্ঠ ও ৯ম বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ নির্মাণ, বাংলাদেশ হতে কৃষিপণ্য রপ্তানি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পিপল টু পিপল কানেকটিভিটি প্রভৃতি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে গ্রেট হলে আয়োজিত ব্যংকুয়েটে এ সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।

বুধবার ১০ জুলাই বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রেট হল অব দ্য পিপল-এ চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষিক বৈঠক করবেন। প্রধানমন্ত্রীর এই সফর উপলক্ষে বাংলাদেশ ও চীন একটি যৌথ বিবৃতি দেবে।

১১ জুলাই বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী চীন ত্যাগ করে দুপুর দুটায় ঢাকা অবতরণের কথা রয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Tax-free income limit may rise to Tk 3.75 lakh

The government is planning a series of measures in the upcoming national budget to alleviate the tax pressure on individuals and businesses, including raising the tax-free income threshold and relaxing certain compliance requirements.

12h ago