৮ বছরে ৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকার সম্পত্তি কিনেছেন কাস্টমস কমিশনার এনামুল

এনামুল হক। ছবি: সংগৃহীত

মাত্র আট বছরে সিলেটের কাস্টমস ও ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হক কাগজে-কলমে যে সম্পত্তি কিনেছেন তার মূল্য ৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও রংপুরে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের যুগ্ম কমিশনার ও কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ঢাকার বসুন্ধরায় একটি নয়তলা বাড়ি করেছেন ও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তিনটি ফ্ল্যাট এবং একাধিক বাণিজ্যিক স্পেস কিনেছেন।

গত বৃহস্পতিবার তার ৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার সম্পদ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

তদন্ত কর্মকর্তাদের অনুমান, এসব সম্পদের দাম কাগজে কলমে কম দেখানো হয়েছে। 

দলিলের বরাতে আদালতের আদেশে বলা হয়, এনামুল হক ১৯৯৯ সালে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ছয় কাঠা জমি ৬১ হাজার টাকায় কিনেছেন।

শহরের অন্যতম ব্যয়বহুল এলাকা হিসেবে বিবেচিত বসুন্ধরা আবাসিকের জি ব্লকের ওই জমিতে ৩২০০ বর্গফুট আয়তনের নয় তলা ভবন নির্মাণ করেন তিনি।

দুদকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালে রিং রোডের আফতাব টাওয়ারের ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম তলা এবং তিনটি কার পার্কিংয়ের স্পেস ২ কোটি ১৪ লাখ টাকায় কেনেন এনামুল হক। ওই তিনটি ফ্লোরের প্রতিটির আয়তন চার হাজার বর্গফুট, এগুলো বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।

২০২০ সালে মোহাম্মদপুর হাউজিং সোসাইটির সারা সন্ধানী লাইফ টাওয়ারের ২য় ও ৪র্থ তলা এবং আটটি কার পার্কিং ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় কিনে নেন এনামুল হক। মোট ১০ হাজার ৯৬৫ বর্গফুটের বেশি আয়তনের ফ্লোর দুটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেওয়া হয়।

২০১৫ সালে কাকরাইলের ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারের প্রথম তলায় ১ হাজার ৯০০ বর্গফুটের একটি এবং ৫ তলায় ৩ হাজার ৮০০ বর্গফুটের আরেকটি ফ্ল্যাট কেনেন এনামুল হক। নথিতে তিনি দেখিয়েছেন, ওই দুই ফ্ল্যাটের জন্য তিনি মাত্র ২ কোটি ৮ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন।

তিনি ২০১৪ সালে কাকরাইলের আইরিশ নূরজাহান ভবনে ১ হাজার ৮৩৫ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন ৫১ লাখ ২৯ হাজার টাকায়। এর আগের বছর একই ভবনে ১ হাজার ১৭০ বর্গফুটের আরেকটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন ২৮ লাখ ৩০ হাজার টাকায়। 

২০১৯ সালে বনানীর গ্লাডিয়া শহীদ ভবনে  ২ হাজার ৪২৮ দশমিক ৮১ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট কেনেন ৭২ লাখ টাকায়।

এ ছাড়া, ২০২০ সালে বাড্ডা এলাকায় ১৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকায় চার কাঠা প্লট এবং ২০০৮ সালে খিলক্ষেতে ৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকায় আরেকটি প্লট কিনেছেন কিনেছেন তিনি।

গাজীপুরের চন্দনায় পাঁচ কাঠার একটি প্লটও রয়েছে এনামুলের। তিনি আদালতকে জানান, ৬২ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ওই জমি তিনি উপহার পেয়েছেন।

২০২২ সালের নভেম্বরে এনামুলের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। গত বছরের জুলাইয়ে তার বিরুদ্ধে ৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হয়।

দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বৃহস্পতিবার আদালতকে বলেন, অবিলম্বে এসব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে।

গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর থেকে সিলেটে কাস্টমস ও ভ্যাট কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এনামুল হক।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

10h ago