জলবায়ু পরিবর্তন ও ক্ষুধার প্রভাব কমিয়ে আনার স্বপ্ন দেখি: আইএফআরসি প্রেসিডেন্ট কেট ফোর্বস

‘আমার খুবই ভালো লাগবে যদি প্রতিটি তরুণ রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক হয়। আমি আমাদের মৌলিক নীতিতে বিশ্বাস করি এবং দিনের শেষে আমরা যা করি তা হলো প্রতিবেশীদের সহায়তা করা। যখন তারা কোনও দুর্যোগ বা স্বাস্থ্য সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যায় এবং কারও সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন হয় তখন তাদের সহায়তা করার চেয়ে ভালো উপহার আপনি আর কী দিতে পারেন।’
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজের (আইএফআরসি) প্রেসিডেন্ট কেট ফোর্বস। ছবি: সংগৃহীত

কেট ফোর্বস। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজের (আইএফআরসি) প্রেসিডেন্ট। গত ২ জুন থেকে ৭ জুন বাংলাদেশ সফর করেন তিনি। সফরকালে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন, যান ঘূর্ণিঝড় রিমাল উপদ্রুত কয়রা উপজেলায়।

তিনি দেখা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্তলাল সেন ও প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মুহিববুর রহমানের সঙ্গে। আলোচনা করেন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং দুর্যোগ ও মহামারি পরিস্থিতিতে করনীয় প্রসঙ্গে।

কেট ফোর্বসের এই সফরকালে গত ৫ জুন রাজধানীর একটি হোটেলে দ্য ডেইলি স্টারকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে বাংলাদেশ সম্পর্কে তার মনোভাব, এখানকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কৌশলের ভালো-মন্দ, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও বাংলাদেশে রেড ক্রিসেন্টের কার্যক্রমসহ বিভিন্ন প্রসঙ্গ।

কেট ফোর্বস। ছবি: সংগৃহীত

দ্য ডেইলি স্টার: এটাই আপনার প্রথম বাংলাদেশ সফর। এই ভূখণ্ড, এখানকার মানুষকে কেমন দেখলেন?

কেট ফোর্বস:  হ্যাঁ, বাংলাদেশে এটা আমার প্রথম সফর। উড়োজাহাজ থেকে নামার পর থেকেই উষ্ণ আতিথেয়তায় আমাকে স্বাগত জানানো হয়। এখানকার মানুষের মানবিক চেতনায় আমি মুগ্ধ হয়েছি। তাদের কাছ থেকে আমি প্রতিনিয়ত শিখেছি।

ডেইলি স্টার: জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় ওপরের দিকে আছে বাংলাদেশ। এর প্রভাবে দেশে প্রতি বছর নতুন নতুন দুর্যোগ আসছে এবং এর তীব্রতাও বাড়ছে। সেইসঙ্গে বাড়ছে জলবায়ু উদ্বাস্তুদের সংখ্য। এই সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের করণীয় কী হতে পারে?

কেট ফোর্বস: বাংলাদেশ কেবল জলবায়ু পরিবর্তনগত কারণে নেতিবাচক প্রভাবের শীর্ষে থাকা একটি দেশই নয়, এখানকার ঘূর্ণিঝড়ের দিকেও আপনাকে নজর দিতে হবে। এখানকার প্রধান সমস্যা হলো উদ্ভাবনের অভাব। আগে এ সংক্রান্ত পূর্বাভাসগুলো কাজ না করায় হাজারো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কারণ, তারা জানতেন না যে ঘূর্ণিঝড় আসছে। এ সম্পর্কে তাদের কোনো জ্ঞানই ছিল না। প্রায় কিছুই না। যদিও সামাজিক পর্যায়ে বাংলাদেশের সম্পৃক্ত হওয়ার সক্ষমতা আমরা দেখেছি। এ ক্ষেত্রে তারা খুবই উদ্ভাবনী গুণের পরিচয় দিয়েছে। যেমন: সাইক্লোন সেন্টার।

আমি আপনাদের এমন কোনো একটি সেন্টারে যাওয়ার অনুরোধ করব—দেখবেন মানুষ কীভাবে সেখানে বন্যার পানি বয়ে নিয়ে সেটাকে পানযোগ্য করছে। ঘূর্ণিঝড়ের মতো জলবায়ু পরিবর্তনগত দুর্যোগে মানুষের বেঁচে থাকার জন্য চাবিকাঠি হচ্ছে বিশুদ্ধ পানি।

সুতরাং আমরা বুঝতে পারছি যে, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এখানকার বিপর্যয়ও তীব্র হচ্ছে। তাই আমাদের তৈরি থাকতে হবে, মানুষকে সতর্ক করতে হবে, এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। আরও বেশিসংখ্যক মানুষকে এ সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। যারা হুমকির মুখে আছে তাদের সহযোগিতা করতে হবে। যাতে দুর্যোগ মোকাবিলায় তারা নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে পারে।

ডেইলি স্টার: বাংলাদেশে যে ধরনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু আছে সে সম্পর্কে আপনার পর্যবেক্ষণ কী? এটি ঠিক কেমন হওয়া উচিত? দীর্ঘমেয়াদে দুর্যোগ হ্রাস কিংবা প্রশমনে কী কী উদ্যোগ নিতে পারে বাংলাদেশ?

কেট ফোর্বস: আমার মনে হয়, আমি ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কিছু কথা বলে ফেলেছি। বাংলাদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার যে পদ্ধতি চালু আছে সে সম্পর্কে আমার ধারণা খুব স্পষ্ট। এ ক্ষেত্রে আরও সক্রিয় হতে হবে। ঘূর্ণিঝড়ের পাশাপাশি বাড়তে থাকা তাপমাত্রার প্রভাবে আরও কী কী ঘটছে, সেটা বুঝতে হবে। কারণ এটি কেবল মানুষকেই প্রভাবিত করে না, প্রাণীর ওপরেও এর প্রভাব আছে। সংযোগ আছে ফসল উৎপাদন ব্যবস্থার সঙ্গেও। বিশ্বের অনেক জায়গায় এগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।

তাই দেখতে হবে কীভাবে বৃষ্টির পানি কাজে লাগানো যায়, জমির উপরিভাগের মাটি অর্থাৎ টপ সয়েল কীভাবে রক্ষা করা যায়, কীভাবে আরও গাছ রোপন করা যায়। আর জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত, এটা কীভাবে আমাদের প্রভাবিত করছে তা নিয়ে স্কুলগুলোতে আলাপ শুরু করা দরকার।

এই কাজে ব্যক্তিগত পর্যায়ে আমাদের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব আছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির যে ১৫ হাজার যুব স্বেচ্ছাসেবক ও ৭৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে, তারা মানুষকে সচেতন করতে পারে। যাতে তারা জানতে পারে দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে কী করতে হবে, কোন কোন ধরনের প্রস্তুতি নিতে হবে। এই প্রস্তুতির দিকটাতে আমাদের আরও অনেক ভালো করতে হবে। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি।

ডেইলি স্টার: ঝুঁকি মোকাবিলাসহ দুর্যোগ হ্রাসে নাগরিক সম্পৃক্ততার গুরুত্ব কতটুকু? এই সম্পৃক্ততা কীভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব?

কেট ফোর্বস: আমি মনে করি এই কাজে তরুণদের যুক্ত করে, স্কুলে এ বিষয়ে কথা বলে এবং মানুষকে সচেতন করার মাধ্যমে এটি করা যেতে পারে। এতে তারা এ সম্পর্কে ব্যক্তিগত দায়ও অনুভব করবে। আবার কখনো কখনো দুর্গতরা গবাদিপশু নিয়ে কী করবে, কীভাবে পরিষ্কার পানি পাবে সেগুলো আমরা তাদের শেখাতে পারি না। তাই দুর্যোগের আগেই এই আলাপ দরকার, পরে নয়।

ডেইলি স্টার: ভূমিকম্প ও সুনামির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু উপকূলবাসীর মধ্যে এসব দুর্যোগ সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই। তাদের বেশির ভাগ এমন দুর্যোগের ধ্বংসাত্মক পরিণতি সম্পর্কেও সচেতন নন। এ ক্ষেত্রে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কী ভূমিকা নিতে পারে?

কেট ফোর্বস: বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সম্পর্কে যতটুকু জানি সেটা হলো, তারা কমিউনিটিতে হাজির থাকার চেষ্টা করে। মানুষ তাদেরকেই বিশ্বাস করে যাদের তারা চেনে। এ ক্ষেত্রে আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা যদি ওই কমিউনিটি থেকেই আসেন তাহলে যা বলা হচ্ছে তা শোনার ও বিশ্বাস করার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সুতরাং আমরা যে জিনিসটা করতে পারি তা হলো আরও বেশি স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়ে, কমিউনিটির আরও বেশি মানুষকে সম্পৃক্ত করে এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছানো, যা একটি পার্থক্য তৈরি করবে।

ডেইলি স্টার: বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা দিন দিন কমছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালে মোট চাহিদার ৪৭ ভাগ অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের কোনো সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। এর সমাধান আসলে কোথায়?

কেট ফোর্বস: আমি গতকালই (৪ জুন) কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে সারাদিন কাটিয়েছি। এটা সত্যিই ‍হৃদয়বিদারক। আমি মনে করি এসব বাস্তুচ্যুত মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের মানুষ ও সরকারের প্রশংসা করা উচিত। একটু আগে আমি বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে একটি বৈঠক থেকে এসেছি। এর ভেতর কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত কীভাবে এই সংকট চলমান আছে সেটা নিয়ে কথা বলেছেন।

হ্যাঁ, আমরা চাই ভবিষ্যতে এই বাস্তুচ্যুতরা একটা নিরাপদ জায়গায় বসবাস চালিয়ে যাক। কিন্তু সেটা আজ হবে না, আগামী সপ্তাহেও হবে না, এমনকি আগামী মাসেও হবে না। এই সময়ের মধ্যে আইএফআরসিসহ সংশ্লিষ্ট অন্যদের গল্পটি যে এখানে আছে, চাহিদা আছে, সেটা বলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেইসঙ্গে এই মানুষদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে।

ডেইলি স্টার: রোহিঙ্গাদের সহায়তায় আইএফআরসি কী ভূমিকা পালন করতে পারে? আশ্রয়শিবিরগুলোতে সহিংসতার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে কিছু বলবেন?

কেট ফোর্বস: আইএফআরসির ভূমিকা সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। আমাদের ১৯১টি সোসাইটি আছে এবং সারাবিশ্ব থেকে আসা সহায়তার সমন্বয় করি আমরা। পরে স্বাগতিক সোসাইটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করি।

এখানকার ক্ষেত্রে এটি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, যাদের কাছ থেকে আমরা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পাই। আমি এখানকার তরুণদের সঙ্গে কথা বলেছি, একজন নারীর সঙ্গে দেখা করেছি যিনি একজন স্থপতি এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোকে কীভাবে আরও টেকসই করা যায়, সে ব্যাপারে কাজ করছেন।

আমি হাসপাতালে দায়িত্ব পালনরত আইএফআরসি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেছি। কথা বলেছি সেইসব প্রতিনিধিদের সঙ্গে যারা এসব কার্যক্রম পরিচালনায় নতুন একটি কম্পিউটার সিস্টেম ব্যবহার করছেন। আইএফআরসি ও আমাদের ন্যাশনাল সোসাইটির সদস্যরা মনে করেন, বাংলাদেশ খুবই হৃদয়স্পর্শী।

খুবই দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতর সহিংসতা দেখছি। বিষয়টি নিয়ে আজ সকালেও সরকারি কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা সবাই এর সমাধান খুঁজে বের করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যেহেতু আমাদের নিরাপত্তা দরকার এবং বাস্তুচ্যুত এই মানুষদের বাড়ির পথ খুঁজে পেতে সহযোগিতা করা দরকার।

ডেইলি স্টার: আমরা জানতে পেরেছি যে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদর দপ্তরে একটি ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার চালু করা হয়েছে। এটি আসলে কীভাবে কাজ করবে?

কেট ফোর্বস: এটা চমৎকার একটি বিষয়। আশা করি আপনারা গিয়ে দেখার সুযোগ পাবেন। সেখানে কর্মরতরা আবহাওয়া সিস্টেম পর্যবেক্ষণ করছে সম্ভাব্য কোনো দুর্যোগ আসছে সেটা দেখার জন্য। স্বেচ্ছাসেবকরা কোথায় আছে, কারা সাড়া দিতে পারবে, সেগুলোও এখান থেকে দেখা সম্ভব।

আমি সেখান থেকে একসঙ্গে অন্তত ১৫ জনের সঙ্গে কথা বলেছি। যারা তাদের সোসাইটিতে কী ঘটছে, তাদের কাছে কী কী আছে এবং কীভাবে তারা সাড়া দিতে পারে সেসব বিষয়ে আমাদের বলছিলেন। সুতরাং এটাকে একটা সমন্বিত 'রিয়েল টাইম ফ্যাক্ট বেজড সিস্টেম' বলা যেতে পারে। এখানকার কর্মীদের বেশিরভাগ তরুণ ও প্রযুক্তিতে দক্ষ। এই দক্ষতা অবশ্যই আমার চেয়ে বেশি।

ডেইলি স্টার: কেমন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখেন আপনি?

কেট ফোর্বস: একটি শান্তিময় পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি। স্বপ্ন দেখি আমরা জলবায়ু পরিবর্তন ও ক্ষুধার প্রভাব কমিয়ে আনতে পেরেছি।

ডেইলি স্টার: ভবিষ্যতে বাংলাদেশে রেড ক্রিসেন্টের কার্যক্রমকে কোন পর্যায়ে দেখতে চান?

কেট ফোর্বস: এখানে আমার উপস্থিতির অন্যতম আনন্দ হলো তরুণদের সামিল করা। আমার খুবই ভালো লাগবে যদি প্রতিটি তরুণ রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক হয়। আমি আমাদের মৌলিক নীতিতে বিশ্বাস করি এবং দিনের শেষে আমরা যা করি তা হলো প্রতিবেশীদের সহায়তা করা। যখন তারা কোনও দুর্যোগ বা স্বাস্থ্য সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যায় এবং কারও সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন হয় তখন তাদের সহায়তা করার চেয়ে ভালো উপহার আপনি আর কী দিতে পারেন। তাই আমি সবাইকে আমাদের আন্দোলনের অংশী করে তোলার চেষ্টা করব। আমি জানি এটা কঠিন, কিন্তু স্বল্পমেয়াদে যেটা আমি সত্যিই আশা করি তা হলো জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত সম্পর্কে আমরা মানুষকে শিক্ষিত করতে সফল হবো।  

ডেইলি স্টার: আমরা জানতে পেরেছি যে আপনি আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করবেন। তাকে কোন বার্তাটি দিতে চান আপনি?

কেট ফোর্বস: আমার মনে হয়, প্রথম বার্তাটি হলো বাংলাদেশে রেড ক্রিসেন্টের জন্য তার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) কতটা গর্বিত হওয়া উচিত। তারা এখানকার সর্বোচ্চ কমিউনিটিতে সেবা দিচ্ছে এবং আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠেয় আমাদের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সেশনের নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছে। আমি তাকে এটাও বলতে চাই যে, আমি দুর্গত এলাকায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্টের কার্যক্রম দেখেছি এবং সেটা নিয়ে আমি কতটা গর্বিত ছিলাম। সেখানে স্বেচ্ছাসেবকরা চিকিৎসা থেকে শুরু করে পানি সরিয়ে দেওয়া, খাবার বিতরণ, আশ্রয়ে সহায়তা করা—এমন সবকিছুই করছিলেন। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর বোঝা উচিত যে বাংলাদেশের রেড ক্রিসেন্ট কতটা গতিশীল।

সবশেষে অবশ্যই কক্সবাজারের বাস্তুচ্যুত মানুষদের জন্য বাংলাদেশ যা করেছে তার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাবো। এ ছাড়া, কীভাবে ভবিষ্যতে আমরা সম্মিলিতভাবে ওই মানুষগুলোকে নিরাপদ কোথাও নিয়ে যাওয়ার একটা সমাধান খুঁজে বের করতে পারি সে ব্যাপারে কথা বলব।

Comments

The Daily Star  | English

Public Servants: Anti-graft laws, rules relaxed over the years

For over two decades, laws and regulations that curb corruption by government employees have been relaxed, which according to the experts, have created room for officials to engage in irregularities with relative impunity.

57m ago