৪ বছরে বাংলাদেশকে ২০.৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) আগামী চার বছরে বাংলাদেশকে ২০.৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ঋণ অর্থনীতির গতি বাড়িয়ে দিয়ে দশ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে ভূমিকা রাখবে।

এডিবির নথি থেকে জানা যায়, এই অর্থের পরিমাণ গত চার বছরে প্রাপ্ত ১২ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে ৪২.৩ শতাংশ বেশি।

এর মধ্যে মোট অর্থের ৭৮.৮৫ শতাংশ বা ১৬.৪ বিলিয়ন ডলার অর্ডিনারি ক্যাপিটাল রিসোর্স (ওসিআর) হিসেবে দেওয়া হবে। বাকি ঋণ কনসেশনাল হবে।

ওসিআর তহবিলের আওতায় ঋণ পরিশোধের সময়কাল ২৫ বছর এবং ঋণ পরিশোধের জন্য পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ড নির্ধারিত। এর সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট (সোফর) সুদহারের সঙ্গে ০.৭৫ শতাংশ চার্জ দিতে হবে। ফেডারেল রিজার্ভ অফ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের ডেটা অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার সোফর ছিল ৫.৩২ শতাংশ। 

কনসেশনাল ঋণ পরিশোধে একই সময়সূচি থাকলেও সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে ২ শতাংশ।

নথি থেকে জানা যায়, এডিবি ২০২৪ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সাতটি খাতের ৯২টি প্রকল্পে ঋণ দেওয়ার জন্য একটি তালিকা তৈরি করেছে। 

প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৫ (দক্ষিণ রুট); দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট ও দক্ষিণ করিডোর উন্নয়ন প্রকল্প (ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়ক); এবং ঢাকা পাওয়ার সিস্টেম সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প।

এই প্রকল্পগুলো চূড়ান্ত করতে আজ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ।

প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলোর প্রস্তুতি সাপেক্ষে, ২০২৪ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে এডিবি প্রায় ১৬.৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

এর মধ্যে এডিবি ২০২৪ সালের জন্য প্রায় ২.৩ বিলিয়ন ডলার, ২০২৫ সালের জন্য ৪.২ বিলিয়ন ডলার, ২০২৬ সালের জন্য ৪.৯ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২৭ সালের জন্য ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, এডিবি ২০২৪ থেকে ২০২৭ সালের জন্য কৃষি, খাদ্য, পরিবেশ এবং গ্রামীণ উন্নয়ন খাতে ১২টি প্রকল্পে ১.৮ বিলিয়ন ডলার দেবে। সেই সঙ্গে জ্বালানি খাতে ১৪টি প্রকল্পের জন্য ২.৯ বিলিয়ন ডলার এবং অর্থ খাতে ১০টি প্রকল্পের জন্য ২.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে।

এছাড়া মানব ও সামাজিক উন্নয়ন খাতের ১৫টি প্রকল্পে ৩.১ বিলিয়ন ডলার, পাবলিক সেক্টর ম্যানেজমেন্ট ও গভর্নেন্স সেক্টরের পাঁচটি প্রকল্পের জন্য ১.৭ বিলিয়ন ডলার, পরিবহন খাতে ১৮টি প্রকল্পের জন্য ৫.৯ বিলিয়ন ডলার এবং পানি ও  নগর উন্নয়ন খাতের ১৮টি প্রকল্পের জন্য ২.৯ বিলিয়ন ডলার দেওয়া হবে।

এডিবি জানায়, বাংলাদেশ যে প্রধান উন্নয়ন চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে অবকাঠামোগত ঘাটতি, বেসরকারি খাতে কম প্রতিযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি এবং আঞ্চলিক বৈষম্য।

বাংলাদেশ কর্মসংস্থান সৃষ্টি, মানবসম্পদ উন্নয়ন, সামাজিক সুরক্ষা এবং শাসনব্যবস্থা ক্ষেত্রেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে বলে এডিবি মনে করে।

এসব চ্যালেঞ্জে সাড়া দিয়ে ও সরকারের প্রবৃদ্ধি পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এডিবির কান্ট্রি পার্টনারশিপ স্ট্র্যাটেজি (সিপিএস) ২০২১-২০২৫ সালের লক্ষ্য হলো প্রতিযোগিতামূলক কর্মসংস্থান তৈরি এবং বেসরকারি খাতের উন্নয়ন, সবুজয়ান ও জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করা এবং মানব সম্পদ ও সামাজিক সুরক্ষা জোরদার করা।

বর্তমান সরকার ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনের জন্য নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রস্তুত করছে।

 

Comments

The Daily Star  | English
consensus commission bicameral parliament proposal

Consensus commission: Talks stall over women’s seats, upper house

The National Consensus Commission proposed establishing an upper house comprising elected representatives from each district and city corporation, and suggested abolishing the current system of reserved seats for women in parliament.

5h ago