‘তীব্র গরমে’ চু্য়াডাঙ্গায় ২ ও পাবনায় একজনের মৃত্যু

তাপদাহে কাহিল ঢাকার এক রিকশাচালক। স্টার ফাইল ফটো | ছবি: এমরান হোসেন/স্টার

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এতে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ, বিপর্যস্ত হচ্ছে জনজীবন। অত্যধিক গরমে অসুস্থ হয়ে ইতোমধ্যে চুয়াডাঙ্গায় দুজন ও পাবনায় একজনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। তবে তারা 'হিটস্ট্রোকে' মারা গেছেন কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

আমাদের চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা জানান, চুয়াডাঙ্গায় মারা যাওয়া দুজনের মধ্যে জাকির হোসেন দামুড়হুদা উপজেলার ঠাকুরপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। তিনি ঠাকুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি। অপরজন মর্জিনা খাতুন, তিনি দামুড়হুদা ইউনিয়ন পরিষদ পাড়ার আজিম উদ্দীনের স্ত্রী।

আজ শনিবার সকালে ধান খেতে সেচ দিতে যান জাকির। এসময় তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে, বিকেল ৩টার দিকে অত্যধিক গরমে নিজ বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন মর্জিনা খাতুন। পরে তাকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হেলেনা আক্তার নিপা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্ট্রোকজনিত কারণে জাকির ও মর্জিনাকে হাসপাতালে আনা হয়। তবে তার আগেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।'

আমাদের পাবনা সংবাদদাতা জানান, পাবনা শহরের শালগাড়িয়া এলাকায় মারা গেছেন সুকুমার দাস।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি জানান, আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি রূপকথা রোড এলাকার একটি দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। তীব্র গরমে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রফিকুল হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হাসপাতালে আনার আগেই সুকুমার দাসের মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় আমরা ধারণা করছি যে, তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছিল।'

সুকুমার দাস হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'এটা আমরা বলতে পারব না। কারণ সুকুমার দাসকে চিকিৎসা দেওয়ার কোনো সুযোগ আমরা পাইনি।'

আমাদের চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা আরও জানান, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর অঞ্চলে অব্যাহত তীব্র তাপদাহ রূপ নিয়েছে অতি তীব্র তাপদাহে। গত কয়েকদিন তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ওঠানামা করলেও পারদ চড়েছে ৪২ ডিগ্রির ঘরে। টানা চারদিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এই অঞ্চলে। 

আজ বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলে দাবি করছে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদের প্রখরতা যেমন বাড়ছে, তেমনি বেলা গড়ালেও উত্তাপ কমছে না। দিন ও রাতের তাপমাত্রায় খুব বেশি পার্থক্য না থাকায় দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে এখানকার জনজীবন।
 
দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডের ভ্যানচালক লুৎফর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জীবনে আমি এত তাপ দেখিনি। ছেমায় গিয়িও শান্তি নেই। যে তাপ পড়চি তাতে মানুষ রাস্তায় বের হচ্চি না। আমাদের ভাড়াও কমি গিচে।'

এদিকে, তীব্র তাপদাহে জনসাধারণকে সচেতন করতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে পথচারী ও এলাকাবাসীকে সতর্ক করছে জেলা প্রশাসন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করা হচ্ছে। 

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত কয়েকদিন থেকে চলমান তীব্র তাপদাহ অতি তীব্র তাপদাহে রূপ নিয়েছে। আরও দুদিন এ ধরনের তাপমাত্রা বিরাজ করতে পারে। এরমধ্যে বৃষ্টির কোনো পূর্বাভাস নেই।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Injured uprising protesters block Mirpur Road

Injured protesters from last year's mass uprising blocked Mirpur Road demanding medical treatment and rehabilitation

1h ago