‘৩৪ বছরে ঈদের আগের দিন গাবতলীতে এত কম যাত্রী দেখিনি’

আজ বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় গাবতলী বাস টার্মিনালের চিত্র | ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

রাজধানী ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনালের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে আর.বি ট্রাভেলস কোম্পানির একটি বাস। আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বাসটির ঢাকা থেকে রংপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। বিকেল ৫টা পর্যন্ত যাত্রী ডেকে চলেছেন হেলপার, কলার বয়।

প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে সাড়ে ৫টার পরে ১০ জন যাত্রী নিয়ে ৪৫ সিটের বাসটি ছেড়ে যায়। এই বাসের জন্য যাত্রী ডাকছিলেন রাকিব হোসেন। গত ৩৪ বছর ধরে গাবতলী টার্মিনালে কলার বয় হিসেবে কাজ করছেন তিনি।

ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন রুটে চলা দূরপাল্লার বাস সিরিয়ালে দাঁড়ালে তিনি যাত্রী ডাকেন। দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে রাকিব বলেন, 'গাবতলীতে আমার ৩৪ বছরে ঈদের আগের দিন এত কম যাত্রী দেখিনি।'

বিকেল সাড়ে ৫টায় আর.বি ট্রাভেলস কোম্পানির ৪৫ সিটের একটি বাস ১০ জন যাত্রী নিয়ে রংপুরের উদ্দেশে গাবতলী ছেড়ে যায় | ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

ঈদের আগে ব্যবসা মন্দার কথা জানায় আরও কয়েকটি পরিবহন কোম্পানি। তারা বলেন, যাত্রী না পাওয়ায় ট্রিপ বাতিল করতে হচ্ছে। আবার আগাম টিকিট বিক্রি করায় স্বল্প যাত্রী নিয়ে লোকসানে বাস ছাড়তে হচ্ছে।

এম.এম. ট্রাভেল কোম্পানির কাউন্টার সুপারভাইজার বশির আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সকাল থেকে তিনটি ট্রিপ বাতিল করতে হয়েছে। বিকেল ৫টায় একটি বাস পাবনার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল, যাত্রী না পাওয়ায় পৌনে ৫টায় বাতিল করতে হয়েছে। যাত্রীদের হাতে-পায়ে ধরে টাকা ফেরত দিয়েছি।'

বশির আরও বলেন, 'রাত সাড়ে ৮টায় পাবনায় আরেকটি বাস ছেড়ে যাওয়ার কথা আছে। ৪০ সিটের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ১১ সিটের যাত্রী পেয়েছি, ৩০ জন না পেলে ওই ট্রিপও বাতিল করতে হবে।'

জামাল এন্টারপ্রাইজের কাউন্টার মাস্টার মাসুদ রানা বলেন, 'ঢাকা-রাজবাড়ী ও ঢাকা কুষ্টিয়া রুটে প্রতিদিন আমাদের ১০টি ট্রিপ থাকে। সকাল থেকে চারটি বাতিল করা হয়েছে। পাবনার যাত্রী নেই বললেই চলে। আগেই টিকিট বিক্রি করা হয়েছিল জন্য চারটি ট্রিপ গেছে। যাত্রী পেলে বাকি দুটি ছাড়া হবে।'

আর.বি ট্রাভেলস বাসের ভেতরের চিত্র। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

তিনি বলেন, '৪০ সিটের গাড়ি ভরলে প্রতি ট্রিপে আট থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ হয়। ২০-২২ জন যাত্রী নিয়ে গাড়ি ছাড়ায় উল্টো আট থেকে ১০ হাজার টাকা লস হচ্ছে।

'টিকিট বিক্রির ওপর আমরা টাকা পাই, বকশিশ পাই। যাত্রী না থাকায় বকশিশ-টাকা কিছুই থাকছে না,' বলেন মাসুদ।

মিরপুর পল্লবী এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান মো. সুমন। রংপুরে যাওয়ার উদ্দেশে বিকেল সাড়ে ৪টায় এক বন্ধুর সঙ্গে তিনি গাবতলী আসেন।

ঢাকা থেকে রংপুরের ভাড়া ৮৫০ টাকা হলেও গত পরশু কোনো কোনো বাস দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছে। আজ বিকেলে দেখা যায়, পরিবহন শ্রমিকরা রংপুরের ভাড়া চাচ্ছেন ৬০০ টাকা।

সুমন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একটা বাস ৬০০ টাকা চেয়েছে। আরেকটু অপেক্ষা করলে ৪০০-৫০০ টাকায় যাওয়া যাবে। যে বাস কম নেবে সেই বাসে উঠবো।'

 

Comments

The Daily Star  | English

'Shoot directly': Hasina’s order and deadly aftermath

Months-long investigation by The Daily Star indicates state forces increased deployment of lethal weapons after the ousted PM authorised their use

17h ago